বাংলাদেশি আলমের নৌকায় আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী
সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুমকে দুবাই ক্রিক আবরা ভ্রমণ করালেন বাংলাদেশি নৌকাচালক মোহাম্মদ আলম। দুবাই ক্রিকের ৬০ নং আবরা বা নৌকাচালক মোহাম্মদ আলমের জন্য গত সোমবার ছিল সৌভাগ্যের দিন।
সেদিন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুম হঠাৎ পরিদর্শনের অংশ হিসেবে দেরার গোল্ড সুক দিয়ে হেঁটে আবরা পারাপারে যান। অনেক আবরা চালক থাকলেও সৌভাগ্যবান হিসেবে আলমের নৌকায় দুবাইয়ের শাসক আবরা পার হন। ফলে সৌভাগ্যবান চালক হিসেবে মোহাম্মদ আলমের গল্পটি সবই ছাপিয়ে যায়।
শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুমের এই সফরের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যে ভিডিওতে দুবাই’র ঐতিহ্যবাহী এক দিরহামে নৌকা পারাপারের দৃশ্য দেখা যায়। তবে এই ভিডিওতে সর্বাধিক আলোচিত আবরা চালক আলম।
মঙ্গলবার সকালে কয়েক হাজার যাত্রী ও চালকদের মধ্য থেকে তাকে সন্ধান করতে কেবল প্রশ্ন ছিল ‘সেই ভাগ্যবান চালক কে ছিলেন?’
আমিরাতের প্রভাবশালী গালফ নিউজকে আলম জানান, গত সোমবার কোনো সাধারণ দিন ছিল না! আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করেছি, আমাদের মধ্যে অনেক আবরা চালক ছিলেন, আমার বস আমাকে জানিয়েছিলেন যে সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষের (আরটিএ) কিছু অফিসারের জন্য আবরাকে আলাদা রাখতে হবে। জানতাম না শেখ মোহাম্মদও আসছেন, তাই আমি এগিয়ে গেলাম এবং এর চেয়ে বেশি কিছুই ভেবে দেখিনি।
তিনি বলেন, ‘শেখ মোহাম্মদ যখন আবরায় পা রেখেছিলেন, আমি তাকে প্রথমবারের মতো ব্যক্তিগতভাবে দেখে অবাক হয়েছি এবং খুব খুশি হয়েছি। তিনি আমার সাথে হ্যান্ডসেক করে জিজ্ঞেস করলেন আমি কেমন আছি এবং উত্তরে ভালো আছি জানিয়ে ধন্যবাদ জানালাম।’
আলম বলেন, ‘শেখ মোহাম্মদকে নিয়ে নৌকা চালানোর কারণে ঘাবড়ে যাইনি, স্বাভাবিক ছিলাম। কারণ, আমি সব সময় এই কাজটি করি, তাকে নৌকায় করে পারাপারের জন্য নিজেকে খুব আনন্দিত ও গর্বিত মনে করছি।’
৪০ বছর বয়সী আলম দুবাই ক্রিকের আল রাসে থাকেন এবং মাসে ১ হাজার দিরহাম বেতনের পাশাপাশি কমিশনে কাজ করেন তিনি। সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কাজ করেন।
২০০৬ সালে তিনি দুবাই আসেন, ১৩ বছরের চাকরি জীবনে এর আগে কখনো কোনো বিখ্যাত ব্যক্তি তার বোটে ভ্রমণ করেননি।
মোহাম্মদ আলমের দেশের বাড়ি কক্সবাজার জেলার উখিয়ায়, বাংলাদেশে তার স্ত্রী, দশ ও চার বছর বয়সী দুই সন্তান রয়েছে।
এসএইচএস/পিআর