কানেক্ট বাংলাদেশের কার্যক্রম স্থগিত বাংলাদেশে

জমির হোসেন
জমির হোসেন জমির হোসেন , ইতালি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮:৩৬ এএম, ২৮ আগস্ট ২০১৯

কানেক্ট বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সকল কার্যক্রম ২০২০ সাল পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। ২৫ আগস্ট সংগঠনটির পরিকল্পনা পরিষদের এক সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সংগঠন বিরোধী অপতৎপরতার অভিযোগে বিশ্বব্যাপী প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিকার আদায়ের বৃহৎ সংগঠন ‘কানেক্ট বাংলাদেশ’।

কানেক্ট বাংলাদেশ যৌথ নেতৃত্বে পরিচালিত, পরিকল্পনা পরিষদ আন্তর্জাতিক সংগঠনের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক পরিষদ। ২৫ আগস্ট ২০১৯ সিকদার গিয়াস উদ্দিনের (আমেরিকা) সভাপতিত্বে এবং সাদী রহমতুল্লাহ (ফ্রান্স) রমুর সঞ্চালনায় এ সভা আয়োজিত হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে- আখি সীমা কাওসার (ইতালি), মো. নুরুল আমিন (ইংল্যান্ড), মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া (কানাডা), মনসুর চৌধুরী (ফ্রান্স), জাফর আজাদী (ফ্রান্স), হারুনুর রশিদ (জার্মানি), আবু তাহের গিয়াসুদ্দিন আহমেদ খিজির (ইংল্যান্ড), শাহ আলম (ইতালি), কাজী আসাদুজ্জামান (সুইজারল্যান্ড) ও ডা. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ (ইংল্যান্ড)।

সভার এজেন্ডাসমূহ নিয়ে আলোচনার পর সর্বসম্মতিতে নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়: পরিকল্পনা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্তে লুৎফা হাসীন রোজী (আমেরিকা) ও অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল (বাংলাদেশ) ঢাকায় আগামী ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ‘কেন্দ্রীয় বিশেষ সম্মেলন’ আহ্বান করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে- আব্দুন নূর দুলাল ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় প্রতিদিন এককভাবে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এবং তা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে পরিকল্পনা পরিষদের সিদ্ধান্ত বলে প্রচার করছেন। লুৎফা হাসীন রোজী পরিকল্পনা পরিষদের বিনা অনুমতিতে কানেক্ট বাংলাদেশের লোগো, ২০১৮ সম্মেলনের স্মরণিকার প্রচ্ছদ ব্যবহার করে পোস্টার ও প্রচারপত্র তৈরি করেছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দিচ্ছেন। যা সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপ বলে বিবেচিত হয়।

অন্যদিকে, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ (কুয়েত) কানেক্ট বাংলাদেশের ফেইসবুকের অন্য পাঁচজন অ্যাডমিনিস্ট্রেটরকে অপসারিত করেন এবং নিজে এককভাবে কর্তৃত্ব গ্রহণ করেন- যা তিনি এককভাবে করতে পারেন না, তা সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী তৎপরতা। তিনি ব্যক্তিগতভাবে এবং তার পছন্দের কয়েকজনের লেখাসহ অননুমোদিত ঢাকা সম্মেলনের বিভিন্ন ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে পরিকল্পনা পরিষদের নামে অবৈধভাবে কানেক্ট বাংলাদেশের নিজস্ব পেইজে পোস্ট করছেন, যা একেবারেই সংগঠন নিয়ম নীতিমালা বহির্ভূত কাজ বলে মনে করে পরিকল্পনা পরিষদ।

এছাড়া তারা সংগঠিতভাবে কানেক্ট বাংলাদেশকে দ্বিধাবিভক্ত করার ষড়যন্ত্র শুরু করে গত জুলাই মাস থেকে। কানেক্ট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও সমন্বয়করা এবং সদস্যদের প্রমাণ স্বরূপ ইতোমধ্যেই অবগত হয়ছেন যে, গত ২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে তারা সেন্ট্রাল কো-অর্ডিনেটিং কমিটি নামে ফেইসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপ তৈরি করে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী সদস্যদের নাম সেই কমিটিতে যুক্ত করার মাধ্যমে প্রভাবিত করে বিভক্তির সূচনা করে।

এছাড়াও বর্তমানে তারা (সিবি) পরিকল্পনা পরিষদ নামে আরও দুটি গ্রুপ তৈরি করেছেন পরিকল্পনা পরিষদের অনুমোদন ছাড়া, সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ড অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক। গঠনতন্ত্রে তাদের এসব কার্যক্রম সংবিধানের ৪ ধারার ৪ উপধারা মোতাবেক সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী।

তাই, গঠনতন্ত্রের ৫.৩.২, ৬.২.৫, ৬.২.১১ এবং ৬.২.১২ (৫.২.১২ লেখাটি ছাপার ভুল) উপধারা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সভা পরিকল্পনা পরিষদ আরও জানান, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রত্যেক সদস্যকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পরিকল্পনা পরিষদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজনে তাদের প্রত্যেককে সংগঠনের স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সংঘটন করার যথাযথ কারণ আগামী সাত দিনের মধ্যে জানানোর জন্য এবং এসব কারণে তাদের তিনজনকে পরিকল্পনা পরিষদ, কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি ও সকল স্তরের সদস্য পদ থেকে কেন অব্যাহতি দেয়া হবে না, তা ব্যাখ্যা করার জন্য আহ্বান জানানোর সিদ্ধান্ত হয়।

মেইল কিংবা ফেইসবুক মাধ্যম ব্যবহার করে তাদেরকে সিদ্ধান্তটি জানানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়। যদি এ বিষয়ে তারা প্রত্যুত্তর না দেন কিংবা তাদের কর্মকাণ্ডের সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না দিতে পারেন, তাহলে পরবর্তী সভায়, প্রাপ্ত প্রমাণাদি প্রয়োগে পরিকল্পনা পরিষদে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

কানেক্ট বাংলাদেশের নেতারা পরিকল্পনা পরিষদের এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্তবিহীন কেন্দ্রীয় বিশেষ সম্মেলন আহ্বান করার মাধ্যমে সংগঠনের বাংলাদেশ শাখা তার আওতা বহির্ভূত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সংগঠনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার মাধ্যমে সংগঠনের সকল কার্যক্রমকে বাঁধাগ্রস্ত করেছেন।

এ ধরনের কার্যক্রম গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী বিধায়, গঠনতন্ত্রের ৫.৩.২, ৬.২.১১, ৬.২.১২ (৫.২.১২ ছাপার ভুল) উপধারা অনুযায়ী সর্বসম্মতিক্রম্মে বাংলাদেশ শাখার বিগত সকল কার্যক্রমকে অবৈধ ঘোষণা করা হয় এবং ‘কানেক্ট বাংলাদেশ’- এর বাংলাদেশ শাখার পরবর্তী সকল কার্যক্রমকে আগামী ‘সম্মেলন ২০২০’ পর্যন্ত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। নতুন সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এ শাখার সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

পরিশেষে কানেক্ট বাংলাদেশে আগামী অক্টোবর ২০১৯ এর শেষ দিকে দুই দিনব্যাপী একটি সাংগঠনিক সভা করার সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিতে গ্রহণ করা হয় এবং পাঁচজন পরিকল্পনা পরিষদের সদস্য ও একজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ককে নিয়ে সভার প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। তারা সভার স্থান ও তারিখ নির্ধারণ করাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিকল্পনা পরিষদের অনুমতিক্রমে গ্রহণ করবেন।

এ কমিটির সদস্যরা হলেন- পরিকল্পনা পরিষদের সদস্য/ সদস্যা আখি সীমা কাওসার, মো. নুরুল আমিন, মনসুর চৌধুরী, জাফর আজাদী, কাজী আসাদুজ্জামান এবং আফসার হোসেন নীলু (স্পেন) সমন্বয়ক কেন্দ্রীয় কমিটি।

এমআরএম/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]