দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক নিতে সেমিনার

প্রবাস ডেস্ক
প্রবাস ডেস্ক প্রবাস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৪৬ পিএম, ০৩ আগস্ট ২০১৯

দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় বিদেশি অধ্যুষিত আনসান শহরের অঙ্গোগ দোংয়ের আবাসিক সহায়তা কেন্দ্রের প্রধান হলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়াতে বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে গোপালগঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ কোরিয়া।

কোরিয়ায় বাদল দিনের মূষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে দূর-দুরান্ত থেকে বাংলাদেশি ইপিএস কর্মী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, সমাজসেবীসহ বিভিন্ন পেশার শতশত বাংলাদেশি কর্মী যাতে আরও বেশি আসতে পারে সে বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়। প্রধান অতিথি ও আলোচক ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ায় (সিউলে) বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম।

বিশেষ আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মকিমা বেগম। প্রথমেই গোপালগঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ কোরিয়া (জিএএসকে) এর সাধারণ সম্পাদক ও এই আয়োজনের সমন্বয়কারী ডেভিড ইকরাম বক্তব্য দেন।

প্রথম পর্বের আলোচনায় (সেমিনার) মূল বক্তব্য দেন গোপালগঞ্জ আ্যসোসিয়েশন অব সাউথ কোরিয়া’র সভাপতি শেখ মুরাদ হোসেন। তিনি দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা মডারেটর হিসেবেও পুরো আলোচনার পরিচালনা করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী ও রাজনিতিবীদ আব্দুল মতিন, রফিকুল ইসলাম ভুট্টো, মুন্সী রফিকুল ইসলামসহ সাবেক সিনিয়র ইপিএস সদস্য রবিউল ইসলাম, রকিব মৃধা, ডালিম, শেখ রিপন এবং বর্তমানে ইপিএস কর্মী হিসেবে কর্মরত শেখ অমর, আমিনুল মোগল এবং ইসরাত জাহান এমা।

অনুষ্ঠানে কোরিয়ায় বসবাসরত বিভিন্ন পেশার অভিজ্ঞ প্রবাসীরা উপস্থিত থেকে তাদের মূল্যবান পরামর্শ জানিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবাসী গবেষক ড. নাজমুল হুদা।

বাংলাদেশি ইপিএস নারী সদস্য ইশরাত জাহান এমা বলেন, কোরিয়ান কালচারের সঙ্গে বাঙালি নারীদের খাপ খাওয়াতে কষ্ট হয়। বাংলাদেশি নারীকর্মীরা যদি নিজের কালচার নিজেরা রেখে কোরিয়ান কালচারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে তবে কোরিয়াতে বাংলাদেশি নারীকর্মীর চাহিদা বাড়বে।

Koria

বক্তব্য দেন বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার উইংয়ের শেখ নিজামূল হক। বিশেষ অতিথি মকিমা বেগম প্রথম সচিব (শ্রম) বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের কর্ম দক্ষতাসহ বিভিন্ন গুণাগুণের বিষয়ে উপস্থাপন করেন

প্রধান অতিথি ও প্রধান রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম জিএএসকেকে সময় উপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আজকের আলোচনায় যে সমস্যাগুলো ওঠে এসেছে তা যদি আমরা পরিহার করতে না পারি তাহলে ইপিএস পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত অন্য ১৫টা দেশের সঙ্গে আমরা প্রতিযোগিতায় পিঁছিয়ে পড়বো।

তিনি বলেন, কোরিয়ান কোম্পানি খালি থাকবে না, অন্য দেশের কর্মী এসে সেখানে ভরে যাবে। অতিরিক্ত প্রত্যাশা না করে, যে কোম্পানিতে প্রথম এসেছেন সেটাতে যদি পুরো সময় থাকেন তাতেই বেশি লাভবান হবেন এবং বাংলাদেশে রেমিট্যান্স বেশি যাবে। বাংলাদেশি সকল ইপিএস কর্মীকে তাদের মালিকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখারও পরামর্শ দেন তিনি।

অর্গানাইজ সংগঠনের সভাপতি শেখ মুরাদ হোসেন সমাপনী বক্তব্যে বলেন, অন্যান্য সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ইপিএসকর্মীরা যতটুকু ছাড় দেয় তার চেয়ে বেশি ছাড় দেয় বাংলাদেশি কমীরা। সততা, দক্ষতা, দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে বাংলাদেশিরা এখানে অনেক এগিয়ে আছে।

তিনি বলেন, কোরিয়ান মালিকেরা অন্যান্য সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ইপিএসকর্মী সঙ্গে কাজ করে যতটুকু আরাম বোধ করে তার চেয়ে বাংলাদেশ থেকে আসা ইপিএস সদস্যরা যদি আরো একটু আরামদায়ক কাজের পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারেন, তাহলে অন্যান্য সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশগুলোর জায়গা বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীরা এসে ভরে যেতে পারে।

প্রতি বছর বাংলাদেশের আরও অনেকগুলো পরিবার স্বচ্ছল হবে, বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আরও বেশি যাবে, বাংলাদেশিদের ব্যবহার করা কোরিয়ান কোম্পানিগুলোসহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

অনুষ্ঠানের স্পন্সর ছিল কোরিয়ার মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি জি-মানি ট্রান্স। ইয়াসিন, সামাদ, সজল, নাসিম, শামীম রুবেল চৌধুরী, রকিব, রুবেল খন্দকার, রিপন, রাসেল, জিহাদ, শাওন ও আরেফিন উপস্থিত ছিলেন।

এমআরএম/এমএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]