কাঁদছেন প্রবাসীরা, কাঁদছে পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: ১০:০৯ পিএম, ০৮ এপ্রিল ২০১৯

মালয়েশিয়ার সেপাংয়ে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে শ্রমিক বহনকারী যাত্রীবাহী বাস রোববার রাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে খাদে পড়ে ৫ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জনের বাড়ি কুমিল্লায়।

তারা হলেন- কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের ঢাকারগাঁও গ্রামের মো. ইউনুস মুন্সির ছেলে মো. রাজিব মুন্সি (২৭) ও লালমাই উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে মহিন (২৮)।

তারা ৯ মাস আগে জীবিকার সন্ধানে মালয়েশিয়া যান। এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার খবর পেয়ে ওই দু’জনের বাবা-মা ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং স্থানীয় এলাকায় শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, জেলার নবগঠিত লালমাই উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের নিহত মহিনের বাড়িতেও চলছে আহাজারি। মহিনের বাবা তাজুল ইসলামসহ পরিবারের লোকজন মহিনের মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঋণগ্রস্ত হয়ে ৭ মাস আগে ছেলেকে মালয়েশিয়া পাঠিয়েছি। ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে মহিন সবার বড়। তার স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। সোমবার সকালে মহিনের এক সহকর্মীর মাধ্যমে তিনি মৃত্যুর খবর জেনেছেন বলে জানান। মহিনের বাবা-মা এবং স্বজনরাও অবিলম্বে মরদেহ দেশে আনার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানিয়েছেন এবং একইসঙ্গে ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন।

অপরদিকে জেলার দাউদকান্দি উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান জানান, ঢাকারগাঁও গ্রামের মো. রাজিব মুন্সি মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার খবর জেনেছি। পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘নিহত রাজিব ছোটবেলা থেকে জেলার বরুড়া উপজেলার খোশবাশ এলাকায় তার নানা বাড়িতে থাকতো।

তিনি আরও বলেন, ‘তারা (রাজিব) দুই ভাই। অভাব অনটনের কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে মাত্র ৯ মাস আগে সে মালয়েশিয়ায় গিয়ে একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ নেয়। স্বল্প বেতনের চাকরির কারণে নিজের খরচ মিটিয়ে সামান্য টাকা পাঠাতো, তাই ঋণের টাকাও পরিশোধ করতে পারেনি। এই অকাল মৃত্যুর কারণে তার বাবা-মা ও মামা বাড়ির লোকজনসহ স্বজনরা শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছেন।’

রাজিবের বাবা ইউনুস মুন্সী বলেন, গত বছরের ৩ জুলাই ৩ লাখ টাকা ধার করে এবং সম্পত্তি বন্ধকসহ নানাভাবে ঋণ করে রাজিবকে মালয়েশিয়া পাঠান। ঋণ পরিশোধ করার মতো কোনো অবলম্বন নেই। এখন তারা ক্ষতিপূরণসহ রাজিবের মরদেহ দেশে আনার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানিয়েছেন।

এমআরএম/এমএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]