নিউইয়র্ক সিনেটে ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ আইন পাস

তোফাজ্জল লিটন
তোফাজ্জল লিটন তোফাজ্জল লিটন , যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৯:০৬ পিএম, ১৩ মার্চ ২০১৯

নিউইয়র্ক সিনেটে ‘বালাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ আইন পাস হয়েছে। এ বছর থেকে নিউইয়র্ক স্টেটে ২৫ সেপ্টেম্বর ‘বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে’ হিসেবে পালিত হবে। নিউইয়র্ক স্টেট ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে দিনটিকে।

মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত সাহার পক্ষ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি আলবেনিতে অনুষ্ঠিত সেনেট অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন টবে আনস্তাভাস্কি। সর্বসম্মতিক্রমে পাস হওয়ার পরে ‘বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে’ রেজ্যুলেশন ৩২২ নম্বরের আইনটি ঘোষণা করেন নিউইয়র্ক স্টেটের গভর্নর এন্ড্রু ক্যুমো।

দিবসটির স্বপ্নদ্রষ্টা বিশ্বজিত সাহা বলেন, ‘১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন। তাই দিনটি বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষার জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আগামী ২০২১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শতজন্মবার্ষিকী। তার আগে ২৫ সেপ্টেম্বরকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে’ ঘোষণা করে জাতির জনককে শ্রদ্ধা জানাবার গৌরবতম অধ্যায়ের সূচনা হবে বলে মনে করি।’

বিশ্বজিত সাহা আরও বলেন, ‘বিশ্বে প্রবাসী আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। বাংলাদেশ পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম দেশ, যে দেশের এত বিপুলসংখ্যক প্রবাসী রয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বর্তমানে প্রায় ৮৮ লাখ বাংলাদেশি বাস করেন। বাংলাদেশ জন্মের ৪৭ বছরেও এ বিপুলসংখ্যক প্রবাসীদের জন্য আলাদা কোনো দিবস ছিল না। আজ প্রবাসীদের জন্য একটি দিবস পেয়েছি। সকল প্রবাসীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন ২৫ সেপ্টেম্বরকে যেন “বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে” হিসেবে সংসদে আইন আকারে পাস করা হয়।’

সিনেট অফিস থেকে পাস হওয়া রেজ্যুলেশনটি ১২ মার্চ মুক্তধারা ফাউন্ডেশনে পাঠানো হয়। আগামি ১৭ মার্চ নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য শিশু-কিশোর মেলায় এই রেজ্যুলেশনটি প্রদর্শিত হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন গত ৩ বছর ধরে এই শিশু-কিশোর মেলা আয়োজন করে আসছে।

বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে আইন পাস করার লক্ষ্যে বিশ্বজিত সাহা ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রথম সেনেটর টবে আনস্তাভাস্কির কাছে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের জানুযারি মাসে সিনেট অধিবেশনে প্রস্তাবটি উত্থাপিত হলে রিপাবলিকান সিনেটরদের বিরোধিতার মুখে বাতিল হয়ে যায়। পরে বিশ্বজিত সাহা ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে সিনেটর হোজে প্যারাল্টার সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি তাকে জানান। সিনেটর এ বিষয়ে তাকে আশ্বাস দেন।

২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর হোজে পেরাল্টা একটি প্রক্লেমেশনে ২৫ সেপ্টেম্বরকে ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্টস ডে’ হিসেবে ঘোষণা করেন। ইতোপূর্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রেজ্যুলেশটিও সিনেটর হোজে প্যারাল্টার প্রস্তাবনায় নিউইয়র্কে স্টেটে পাস হয়েছিল এবং তা স্টেট ক্যালেন্ডারের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।

এসআর/এমএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]