সন্ধ্যা হলেই প্রবাসীদের ভিড় জমে ওমানের বাঙালি পাড়ায়

বাইজিদ আল-হাসান
বাইজিদ আল-হাসান বাইজিদ আল-হাসান , ওমান প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৭:০৭ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ওমানে বাঙালি পাড়ার আরেক নাম ‘হামেরিয়া’। ইতোমধ্যেই এলাকাটি দ্বিতীয় বাংলাদেশ হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই ভিড় জমে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ শ্রমিকদের।

প্রায় ৯ লাখের মতো বাংলাদেশি দেশটিতে বসবাস করছে। পুরো ওমানের বাঙালি পাড়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এসব বাংলাদেশি। দেশটির ভেতর যে কয়টা বিভাগ রয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘সালালাহ, সোহার, ইবরি, ও মাস্কাট। সাধারণত মাস্কাট থেকে এই শহরগুলোর দূরুত্ব ৩০০ থেকে ১১০০ কিঃ মিঃ।

কাজের জন্য বেশিরভাগ শ্রমিক থাকেন শহরের বাইরে, আবার কেউ থাকেন মরুভূমিতে। এখানে বেশিরভাগ শ্রমিকই ফ্রি ভিসায় আসেন। তাদের কাজের কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। নিজেদেরই কাজের সন্ধান নিজেরাই করে নেন। আর এজন্য রয়েছে প্রসিদ্ধ এক জায়গা যার নাম ‘হামরিয়া’। রাজধানী মাস্কাট এর রুইতে অবস্থিত।

oman2

হামরিয়াকে ওমানিরা বলে দ্বিতীয় বাংলাদেশ। কারণ ওখানকার ৮০ শতাংশ লোকই হলো বাংলাদেশি। ওমানে অবস্থানরত বেশিরভাগ শ্রমিকেরই এখানে রুম নিয়ে রাখেন। বিশেষ করে যারা ফ্রি ভিসার। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন কোম্পানির জন্য শ্রমিক নিতে আসেন। অনেকটা আমাদের দেশের গ্রাম-গঞ্জের হাটের মতোই।

ছোট একটা ব্যাগ নিয়ে সবাই দাঁড়িয়ে থাকে। মাঝখানে উঁচু যায়গায় দাঁড়িয়ে যার শ্রমিক দরকার সে বলতে থাকে। এভাবে দরদাম করে এখান থেকে প্রতিনিয়ত শ্রমিকরা কাজে যোগদান করে বিভিন্ন পেশায়। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই এলাকাটা ঢাকার গুলিস্তান এর রূপ ধারণ করে।

দেখলে বোঝায় যাবে না এটা কি ওমান নাকি বাংলাদেশ। কারণ মাস্কাট এর বাহিরে যেসব শ্রমিক কাজ করেন তারা শুক্রবার আসেন পরিচিতদের সঙ্গে দেখা করতে এবং ভালো কাজের সন্ধানে। এজন্য আবার প্রায় শুক্রবার দিন সন্ধ্যার পর পুলিশ এর চেকিংও হয়ে থাকে। যদি কেউ বুঝতে পারে পুলিশ আসছে, সে এমন এক সিগন্যাল দেয় যাতে অন্যসব বাঙালিরা বুঝতে পেরে যে যার মতো এদিক-সেদিক পালিয়ে যায়।

oman3

এর মাঝেও অনেকে ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। যারা পুলিশের হাতে আটক হয় তাদের বেশিরভাগ জনকে দেশে চলে যেতে হয়। অন্যথায় জেল খাটতে হয়, আর যাদের আরবাব (ওমানি স্পন্সরকে আরবাব বলে) ভালো, তাদের আরবাব থানায় গিযে টাকা পয়সা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।

আপনজন ছেড়ে প্রবাসে এভাবেই প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যান বেশিরভাগ শ্রমিক। অথচ পরিবারের মানুষ মনে করে বিদেশ মানেই টাকা আর টাকা। যখন চাইবে হুট করে গাছ থেকে টাকা ছিঁড়ে দিবে হায়রে প্রবাস।

এমআরএম/পিআর

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]