নামাজ পড়া হলো না রেমিটেন্স যোদ্ধা আলমের!

আহমাদুল কবির
আহমাদুল কবির আহমাদুল কবির , মালয়েশিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮:৫৮ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

২৪ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষে মাগরিবের নামজ পড়তে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রেমিটেন্স যোদ্ধা মো. আলম মিয়া (৩৯)। রুমমেট সবাই মসজিদে চলে গেছেন। তিনিও গোসল সেরে মসজিদে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু বিধিবাম, আলমের মসজিদে যাওয়া হলো না, চলে গেলেন পরপারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জহুর বারু জালান মতিয়ারা এমাস তামান মান্ত আস্তিনে চঙ্গি হাট গ্লাস কোম্পানিতে বহুদিন ধরে কাজ করে আসছিলেন তিনি। পাশেই রয়েছে বাংলা সূরাও। প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই মসজিদটি গড়েছেন। প্রতি সপ্তাহের রোববার মসজিদে আসমাউল হুসনা প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়।

প্রবাসীরা দলে দলে এই প্রোগ্রামে হাজির হন। এই দিন মাগরিবের নামাজ শেষে প্রেগ্রামটি শুরু হয়। এশার নামাজ পড়ে সবাই রুমে আসছিলেন- এসেই দেখলেন আলমের নিথর দেহ। দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জহুর বারু সুলতান এসমাইল হাসপাতালে রাখা হয়েছে তার লাশ। দু-একদিনের মধ্যে আলমের লাশ দেশে পাঠানো হবে বলে জানালেন, কমিউনিটি নেতা গোলাম মোস্তাফা।

স্বচ্ছল জীবনের আশায় বিদেশ গমন, অতঃপর লাশ হয়ে দেশে ফেরা! কুমিল্লার তিতাস হোমনার জনাব আলী বেপারির ছেলে মো. আলম মিয়া একটু ভালো থাকার প্রফেশনাল ভিসায় ৩ বছর আগে বছর আগে পাড়ি জমিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়। এক বছর যেতে না যেতেই ভিসা পরিবর্তন করে বাংলাদেশি এক দালালের প্ররোচনায় পড়ে রি-হিয়ারিং প্রোগ্রামের আওতায় ফের বৈধ হওয়ার জন্য নিবন্ধিত হয়েছিলেন। বৈধতা পাবার আশায় প্রহর গুনছিলেন বছর খানেক ধরে। কিন্তু তার কপালে আর বৈধতা জুটলো না। প্রতিনিয়ত আলম এ নিয়ে চিন্তা করতেন কবে যে বৈধ ভিসা পাবেন।

স্ত্রী, মা-বাবাকে নিয়ে তার সুখের সংসার। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু আকস্মিক মৃত্যুতে আলমের সুখের সংসারে নেমে এসেছে দুঃসহ বেদনা।

আহমাদুল কবির/এসএইচএস/এমকেএইচ

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]