কৌশলে পুলিশ : মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৭ হাজার প্রবাসী গ্রেফতার

আহমাদুল কবির
আহমাদুল কবির আহমাদুল কবির , মালয়েশিয়া প্রতিনিধি মালয়েশিয়া
প্রকাশিত: ০৪:১২ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

মালয়েশিয়ায় দেড় মাসে বাংলাদেশিসহ ৭ হাজার অবৈধ প্রবাসীকে গ্রেফতার করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। বিগত বছরগুলোতে শহরভিত্তিক অভিযান পরিচালিত হলেও নয়া কৌশলে এগোচ্ছে অভিবাসন বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শহরে ইমিগ্রেশন, পুলিশ, রেলা, সিটি কর্পোরেশনের যৌথ অভিযানের কারণে অবৈধ অভিবাসীরা মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ছোট ছোট শহর ও গ্রাম অঞ্চলের লোকালয়ে কাজ করছে এমন সংবাদ আগেই চলে যায় সংশ্লিষ্টদের কাছে। আর এই সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গল পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করছে অভিবাসন বিভাগ।

অভিবাসন সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত, মালয়েশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ১ হাজার ৯৯৯টি অভিযানে আটক করা হয় ৩০ হাজার ৭৭৮ জনকে। আটকদের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে গ্রেফতার করা হয় বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ৬ হাজার ৯৮৫ জন অবৈধ অভিবাসীকে।

এ ছাড়া অবৈধ অভিবাসী রাখার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৪২ জন মালিককে। তবে অভিযানে কত জন বাংলাদেশিসহ অন্যান্য দেশের কতজন করে গ্রেফতার করা হয়েছে তা অভিবাসন বিভাগ প্রকাশ করেনি। মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রধান দাতো ইন্ডেরা খায়রুল দাজামী বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মালয়েশিয়ায় সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেফতার হচ্ছেন বৈধ বাংলাদেশিরাও। নামবিহীন দালালের মাধ্যমে বৈধ হয়ে অন্যত্র কাজের মধ্যেই গ্রেফতার হয়ে জেলে যেতে হচ্ছে বাংলাদেশিদের। দেশটির আইন অনুযায়ী যে মালিকের নামে ভিসা করা হয়েছে, সেই মালিকের কাজ করতে হবে, অন্যথায় তাদেরকে অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে। আর অন্য জায়গায় কাজ করা অবস্থায় ধরা পড়লে যেতে হবে জেলে।

Maleshia2

অভিবাসী বিভাগের মহাপরিচালক খায়রুল বলেন, ‘বিদেশি শ্রমিকরা আজ বৈধ, কাল অবৈধ। বিগত দিনে আউটসোর্সিং কোম্পানির মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক বিদেশি শ্রমিকরা ভিসা করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কলকারখানায় কাজ করতো। যা দেশটির শ্রমবাজারকে কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত করা হয়। বিদেশি শ্রমিকদের বাসস্থান ও কিঞ্চিৎ মজুরিতে জিম্মি করে বছরের পর বছর কাজ করানো হয়েছে এমন অভিযোগও রয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরে।’

বর্তমানে মালয়েশিয়ায় আউটসোর্সিং কোম্পানির অ্যাপ্রোভাল বন্ধ রয়েছে। কিন্তু এখনো হাজার হাজার বিদেশিরা বিভিন্ন কোম্পানির নামে ভিসা করে অন্য কোম্পানিতে কাজ করছে। আর অন্যত্র কাজ করলেই তারা অবৈধ বলে বিবেচিত হবে।

অন্যদিকে বৈধ হয়েও অবৈধ তালিকায় বাংলাদেশিদের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে। মালয়েশিয়ার বাংলাদেশি ও মালয় এজেন্টদের প্রলোভনে অন্যত্র কাজ করার নিশ্চয়তায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা তাদের কোম্পানিতে ভিসা করেছেন। প্রতি বছর এজেন্টকে ১ থেকে ২ হাজার মালাই রিংগিত দিতে হবে। কিন্তু বর্তমানে চলমান সাঁড়াশি অভিযানে বৈধ অবস্থায় গ্রেফতার হলে ওই সব এজেন্টের আর খোঁজ মেলেনি। বৈধ হয়েও জেলের গ্লানি টানছে বাংলাদেশিরা।

এমআরএম/পিআর

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]