ইউরোপে চলতে হলে মানতে হবে রীতিনীতি
ইউরোপে অভিবাসী হিসেবে থাকতে হলে অবশ্যই কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। অভিবাসীদের দুটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। একটি হলো আবেদন করা অভিবাসীর প্রকৃতপক্ষে তার দেশে সমস্যা আছে কিনা, কিংবা নিরাপত্তায় ভুগছে কিনা?
আরেকটি বিষয় হলো- অভিবাসীকে অবশ্যই ভাষা, সংস্কৃতি এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। ধর্ষণ কিংবা হামলা-মামলার বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এ সমস্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে বিশেষ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসীদের আশ্রয় দেয়া হয়।
সম্প্রতি ১২ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে অস্ট্রিয়া সরকার। তাদেরকে বিরুদ্ধে ধর্ষণ ছাড়াও হামলা-মামলার বিষয় প্রমাণ পান দেশটির আদালত।
অবৈধ অভিবাসী আটক অব্যাহত রয়েছে। হোম অফিসের চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে এ অভিযান চলছে বলেও জানা গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে।
এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে শর্তছাড়া কোনোভাবে থাকা যাবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনেসা তিরিঙ্ক। শনিবার রাজধানীর গুলশানে সিক্স সিজন হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
‘বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ’- শীর্ষক এক সংলাপের এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক। সংলাপে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনেসা তিরিঙ্ক।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘অভিবাসী হওয়ার আগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে অনেকেই ইউরোপে পাড়ি জমিয়ে থাকেন। ইউরোপের যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইতালিতে যাওয়ার ঝোঁকই বেশি। অনেকেই অবৈধ চ্যানেল, চোরাকারবারি বা মাদক পাচারকারীদের সহায়তায়ও ইউরোপে প্রবেশ করে থাকেন।’
‘তবে শুধুমাত্র অভিবাসী শর্তপূরণ হলেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে থাকা সম্ভব। অন্য কোনোভাবে নয়। এ ছাড়া অবৈধ অভিবাসীদের ফিরিয়ে আনা একটি জটিল প্রক্রিয়া’ বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।’
‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিরাপদ অভিবাসন চায় উল্লেখ করে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নিরাপদ অভিবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাজ করছে।’
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক অভিবাসনের বিষয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশেও অনেক অবৈধ অভিবাসী বসবাস করছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। তবে আমরা চাই না বিশ্বের কোনো দেশে বাংলাদেশি নাগরিকরা অবৈধভাবে অবস্থান করুক। আমরা অবৈধ অভিবাসনকে নিরুৎসাহিত করে আসছি।’
কসমস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ এশিয়া স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের প্রধান রিসার্চ ফেলো ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েত উল্লাহ খান।
হাসান তামিম, অস্ট্রিয়া
এমআরএম/এমকেএইচ