নৌকার প্রচারণায় এসে সংঘর্ষে গেল আমিরাত প্রবাসীর প্রাণ

কক্সবাজারের রামুর তাজউদ্দিন রাসেল (৩২)। ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালে জয়-বাংলার স্লোগানে মুখরিত করেছে। শিক্ষা জীবন শেষ না হতেই পরিবারের হাল ধরতে বছর চারেক আগে পাড়ি জমান আমিরাত। রক্তে মিশে থাকা জয় বাংলার স্লোগান তাকে প্রবাসে থাকতে দেয়নি। ফিরেছেন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণে।

চলমান নির্বাচনে নৌকার প্রচারণায় যোগ দিতে ছুটিতে দেশে আসেন ২৩ ডিসেম্বর। আবুধাবি এয়ারপোর্টে এসে সে কথা নিজ ফেসবুক ওয়ালেও লেখেন। যেই কথা, সেই কাজ। এসেই নেমে পড়েন নৌকার প্রচারণায়। ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে যান পথসভায়। পথসভায় দু'পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা দেখে অসুস্থ হন রাসেল। সেখান থেকে হাসপাতালে নেয়া হলে রাত সাড়ে ৮টায় মারা যান তিনি।

কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের মৌলভীকাটা বাজারে নৌকা প্রতীকের সমর্থনে ২৫ ডিসেম্বর রাতে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী পথসভার আয়োজন করা হয়। সেখানেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তাজউদ্দিন রাসেল রামুর মণ্ডলপাড়ার মনজুর আলমের ছেলে ও এক সন্তানের জনক। তারা তিনভাই দু’বোনের মাঝে রাসেল সবার বড়। বিগত ২ বছর আগে রাসেলের বাবা মনজুর আলম মারা যান।

Tazuddin2

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মৌলভীকাটা বাজারে নৌকা প্রতীকের সমর্থনে আয়োজিত নির্বাচনী পথসভায় কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা মোক্তার আহমদকে মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য দিতে আয়োজকরা অনুরোধ জানান। কিন্তু তিনি (মোক্তার আহমদ) বক্তব্য না দিয়ে মোনাজাত পরিচালনা করেন। সেখানে মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে না বলে যাকে খুশি ভোট দেয়ার কথা বলে মোনাজাত শেষ করেন।

ওই আওয়ামী লীগ নেতা চরম ক্ষুদ্ধ হয়ে মাওলানা মোক্তার আহামদকে চরম নাজেহাল করে। এ ঘটনায় দু’জন বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তার পক্ষের লোকজনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সেই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সংঘর্ষ দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাজউদ্দীন রাসেল। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাত ‘প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু’ কেন্দ্রীয় কমিটির সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তাজউদ্দিন রাসেল। তার অকাল মৃত্যুতে আমিরাতে অবস্থিত আওয়ামী লীগ পরিবার ও সহকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বুধবার বেলা আড়াইটায় জানাজা শেষে তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

 এমআরএম/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]