স্যার পাসপোর্টটা দেন, নইলে বাচ্চারা না খাইয়্যা মরবো

স্বামীহারা দুই সন্তানের মায়ের কান্না কে থামাবে? পরিবার-পরিজনের জন্য জীবিকার তাগিদে হাজার হাজার মাইল দূরে পাড়ি জমিয়ে হতভাগা মা এখন কাঁদছেন শুধু একটি পাসপোর্টের জন্য। সম্প্রতি তিনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে বৈধ হওয়ার।

আবেগাপ্লুত হয়ে কথাগুলো বলছিলেন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে না পাওয়া এক প্রবাসী নারী। অ্যামনেস্টির বিরল সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি প্রবাসীরা। এ নারী জানান, আমরা সঠিকভাবেই কাজ করেছি। কিন্তু পাসপোর্ট হাতে না পাওয়ায় ‘জব সিকার’ ভিসার আবেদন করতে পারলাম না।'

অ্যামনেস্টির সময়সীমা শেষ হওয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের জব সিকার ভিসা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার। কিন্তু গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার শেষ মুহূর্তে পাসপোর্ট হাতে পাওয়া বাংলাদেশি প্রবাসীরা ৬ মাসের জব সিকার ভিসার জন্য আবেদন করতে না পারায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।

আমিরাত সরকারের সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার। নতুন করে আর মেয়াদ বাড়ছে না। ‘আমি এখন কোথায় যাব? আবারও অবৈধ হয়ে বাসা বাড়িতে কাজের সন্ধানে ঘুরে বেড়াতে হবে। খুব ভয়ে আছি। কি হবে বুঝছি না।’

তিনি বলেন, ‘দু’মাস আগে বৈধ হওয়ার প্রত্যাশায় দুবাইস্থ বাংলাদেশ কন্সুলেটে পাসপোর্টের আবেদন করেছিলাম। আমার স্বামী নাই, স্বামী হারানোর কষ্ট আমি ছাড়া কে বুঝবে বলেন। পাসপোর্টটি এখন বাংলাদেশে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জালে। রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে ঢাকা আগারগাঁওয়ে। কিন্তু ২ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও পাসপোর্ট এখনো হাতে পাইনি।’

এর মতো আরো অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি পাসপোর্টের জন্য গুমরে গুমরে কাঁদছে বাংলাদেশ দূতাবাস ও দুবাইস্থ বাংলাদেশ কন্সুলেট প্রাঙ্গণে। তাদের কান্না কে থামাবে। তা কি কারো জানা আছে?

এই বিষয়ে আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ডা. মোহাম্মদ ইমরান জানিয়েছেন, যারা পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন কিন্তু বৈধ হতে পারেননি তাদের সবাইকে আগামী সোমবার আবুধাবি দূতাবাস ও দুবাই কনস্যুলেটে আসতে বলা হয়েছে। আমরা তাদের নামের তালিকা করে আমিরাতের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অবৈধদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দেয়ার জন্য আবেদন করবো।

গত ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ ছিল। এ সময়ের মধ্যে অবৈধ প্রবাসীদের আবেদন করতে বলা হয়। দ্বিতীয় দফায় ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্ষমার মেয়াদ বাড়ানো হয়।

এমআরএম/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]