পর্তুগালে বুদ্ধ পূজা উদযাপন

নাঈম হাসান পাভেল
নাঈম হাসান পাভেল নাঈম হাসান পাভেল , পর্তুগাল প্রতিনিধি লিসবন, পর্তুগাল থেকে
প্রকাশিত: ০৯:০১ এএম, ০১ ডিসেম্বর ২০১৮

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান উপলক্ষে পর্তুগালে বুদ্ধ পূজা উদযাপন করেছে বাংলাদেশি বৌদ্ধরা।

শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের সি-ফুড রেস্টুরেন্টে এ পূজা উদযাপিত হয়। এতে পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষদের পাশাপাশি যোগ দেন বাংলাদেশি কমিউনিটির ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষ।

পূজা উদযাপন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আয়োজক আনন্দ বডুয়া ভূবন। যৌথভাবে পরিচালনায় ছিলেন সমরজিৎ পাল ও পলাশ বড়ুয়া। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অনিক দেব রয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনের রাষ্ট্রদূত মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বলেন, বৌদ্ধধর্ম বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম ধর্ম। আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে এই উৎসবগুলো পালন করে থাকি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সে রকমই সুন্দর একটি পূজা উদযাপন আয়োজন করায় এবং আমাকে নিমন্ত্রণ করায় এখানে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। দেশ থেকে দূরে থেকেও পর্তুগালে বাংলাদেশি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষদের এমন আয়োজন বাংলাদেশের সব ধর্মের যে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে সেটি তুলে ধরেছেন।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পর্তুগালে মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত লিসবনের কাউন্সিল সান্তা মারিয়া মাইওরের কাউন্সিলর রানা তাসলিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে সেটি এখানেও আমরা ধরে রাখতে চাই।

তিনি বলেন, ‘এখানে হিন্দু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত আছেন, বাংলাদেশি খ্রিষ্টান ধর্মের একজন আছেন। এ ছাড়াও আমাদের মুসলিম ধর্মের ভাইয়েরা উপস্থিত হয়েছেন। আমি হিন্দু ধর্মের ভাইদের বলেছি, নিজেদের অ্যাসোসিয়েশন করতে। খ্রিস্টান ধর্মের ভাইদেরকেও বলব নিজেদের মধ্যে একটি অ্যাসোসিয়েশন করতে। সবাই মিলে সুন্দর সংগঠিত একটি বাংলাদেশ কমিউনিটি গড়ব আমরা।’

পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশি বৌদ্ধদের প্রথম কোনো ধর্মীয় উৎসব আয়োজন এটি জানিয়ে আয়োজক আনন্দ বড়ুয়া ভূবন বলেন, এখানে বৌদ্ধদের মিলনমেলার আয়োজন করতে পেরে আমি আনন্দিত। তিনি বলেন, এতদিন পর্তুগালে বাংলাদেশি সব ধর্মের ধর্মীয় প্রধান উৎসবগুলোর আয়োজন করা হলেও বৌদ্ধদের ধর্মীয় কোনো উৎসব আয়োজন করা হয়নি। আমরা প্রথম উদ্যোগ নিয়েছি, আমাদের পরিকল্পনা আছে ধারাবাহিকভাবে বৌদ্ধধর্মের সবগুলো বড় উৎসব আয়োজন করার।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনের দূতালয় প্রধান হাসান আব্দুল্লাহ তৌহিদ, পর্তুগালের অভিবাসন কার্যালয়ে কর্মরত বাংলাদেশি মঈন উদ্দিন আহমেদ, শাহীন সাঈদ, হিন্দু অ্যাসোসিয়েশনের সমরজিৎ পাল, মিতু বডুয়া, বিপুল বড়ুয়া, শ্রাবণী সিংহ প্রমুখ।

পূজা উদযাপন শেষে সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশি শিল্পী কে এম মোস্তফা আনোয়ার এতে গান পরিবেশন করেন।

অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশি সুস্বাদু খাবার দিয়ে অতিথিদের নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়। আপ্যায়নে ছিলেন ঝুমা দাশ চৌধুরী।

এসআর/এমএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]