‘সৌদিতে যৌনদাসী ছিলাম’

মো. মুখলেছুর রহমান (মুকুল)
মো. মুখলেছুর রহমান (মুকুল) মো. মুখলেছুর রহমান (মুকুল) , সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৮:০৪ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

‘আমার এক বাঙালির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। স্বামীই আমাকে সঙ্গে করে সৌদি আরবে নিয়ে যায়। সেখানে যৌনকর্মীর কাজ করানো হতো। এমন একটা অবস্থায় ছিলাম ওই রাস্তা থেকে ফেরার সুযোগ ছিল না। মাঝে মাঝে মনে হতো আত্মহত্যা করি। কিন্তু পিতামাতার কথা চিন্তা করে এ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারিনি। কফিলের পরিবারের সবাই আমাকে….। একপ্রকার যৌনদাসীই বলা চলে।’

কথাগুলো বলছিলেন সৌদি ফেরা ভারতের এক নারী। বলেন, ভগবানের অশেষ কৃপায় সৌদি থেকে বেঁচে এসেছি। সৌদির কফিলরা অমানুষ। প্রথমে ভেবেছিলাম স্বামী সৌদি আরবে ব্যবসা-বাণিজ্য করে হয়তবা আমার পরবর্তী দিনগুলো ভালোভাবেই কাটবে। কিন্তু তার মনে এত পাপ ছিল সেটা যাওয়ার পরই বুঝলাম। পরে জানতে পারি স্বামী অনেক আগে থেকে এ ধরনের কাজে জড়িত।

সম্প্রতি ভারতের কেরালা হাইকোর্টে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী এ নারী। বর্তমানে কেরালা হাইকোর্ট নির্যাতিতাকে তার বাবার দায়িত্বে ছেড়ে দিয়েছেন। বাবাই দেখাশোনা করছে এ অসহায় এ নারীর।

এখানেই শেষ নয়। তাকে আইএসের কাছে বিক্রি করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। আদালতের কাছে তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন, তাকে যৌন নির্যাতন করা হতো। জোর করে যৌন সম্পর্কে যাওয়ার জন্য বাধ্য করা হতো। সেগুলোর ভিডিও নেয়া হতো আর পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেল করা হতো বলেও জানান তিনি।

আবেদনপত্রে তিনি লিখেছেন, সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর তার স্বামী আসল রং দেখান। সে নির্যাতিতার সঙ্গে যৌনদাসীর মতো ব্যবহার করত। শুধু তাই নয়। তার সিরিয়া যাওয়ারও পরিকল্পনা ছিল। কয়েকদিনের মধ্যেই সিরিয়ায় চলে যেতে হতো নির্যাতিতাকে। আইএসআইএস সন্ত্রাসবাদীদের কাছে তাকে বিক্রি করে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিল তার স্বামী।

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে তাকে সিরিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। ৩ অক্টোবর তিনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাকে উদ্ধারের আবেদন জানান। ৪ অক্টোবর বাবার সাহায্য নিয়ে তিনি পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

এরপর বাবার কেটে দেয়া টিকিটের সাহায্যে দেশে ফিরে আসেন তিনি। ৫ অক্টোবর তিনি আহমেদাবাদ পৌঁছান। ওই নারীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা গুজরাটে। সেখানেই এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয় তার। ওই ব্যক্তি জোর করে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ। আপাতত কেরালা হাইকোর্ট নির্যাতিতাকে তার বাবার দায়িত্বে ছেড়ে দিয়েছেন।

এমআরএম/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]