টেক্সাসে অক্টোবর-নভেম্বরে আটক ৮১ বাংলাদেশি
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির পরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে আমেরিকায় আসছেন অনেক বাংলাদেশি। অর্থ ও জীবনবাজি রেখে মানবপাচার চক্রের প্রলোভনে পড়ে এসব বাংলাদেশি অবৈধভাবে এ দেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন। এভাবে আমেরিকায় ঢুকতে গিয়ে অনেকেই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে আটক হচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস সীমান্তে অবৈধভাবে প্রবেশের দায়ে গত দুই মাসে (অক্টোবর-নভেম্বর) ৮১ জন বাংলাদেশিকে আটক করেছে বর্ডার পেট্রল গার্ড। ওয়েবভিত্তিক সংবাদপত্র ব্রেইটবার্টের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সোমবার পৃথক দুটি অভিযানে দেশটির পুলিশ তাদের আটক করে। এ উপায়ে বাংলাদেশিদের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এক বছরে এভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার সময় আটক করা হয় ৬৬৮ বাংলাদেশিকে।
২০১৭ সালের অক্টোবরের তুলনায় এ বছর নভেম্বরে এ সংখ্যা শতকরা ১০ ভাগ বেশি। এ সময়ে লারেডো সেক্টর এজেন্টরা ৬৬৮ বাংলাদেশি অভিবাসীকে আটক করেছে। আগের বছরের মোট বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসীর তুলনায় এ সংখ্যা শতকরা প্রায় ২৭০ ভাগ বেশি।
এ সময়ে লারেডো সেক্টর এজেন্টরা ৬৬৮ জন বাংলাদেশি অভিবাসীকে আটক করেছে। আগের বছরের মোট বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসীর তুলনায় এ সংখ্যা শতকরা প্রায় ২৭০ ভাগ বেশি।
ব্রেইটবার্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ ও মধ্য টেক্সাসের সীমান্তে রয়েছে বিশাল নদী। সেই সীমান্ত একেবারে খোলা। এমন সীমান্ত শত শত মাইলের। এই পথটিকে ব্যবহার করছে অবৈধ অভিবাসীরা। এ পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অভিবাসীরা দালালদের দিচ্ছে জনপ্রতি ২৭ হাজার ডলার করে।
বর্ডার পেট্রল কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা দালালকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন দেশ হয়ে বেআইনি পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার চেষ্টা করছেন। এদের সবাই মেক্সিকোর রয়ো গ্রান্ডে নদী সাঁতরে হিল সাবডিভিশন নদী পার হয়ে টেক্সাসে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। এলাকাটি শত শত মাইল উন্মুক্ত সীমান্ত এলাকা। সেখানে রয়েছে বর্ডার পেট্রল গার্ডের কড়া নজরদারী। তাই প্রায়ই প্রতিদিন সেখানে আটক হচ্ছেন অবৈধ প্রবেশকারী বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা।
টেক্সাস সীমান্ত সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে ভয়াবহ সব তথ্য। মধ্য ও দক্ষিণ সীমান্তের শত মাইলজুড়ে প্রবাহিত খরস্রোতা রিও গ্রান্ডে নদী। পাহাড় আর জঙ্গলে ঘেরা এই নদীর ওপারেই মেক্সিকো। দুই দেশের সীমান্তে কড়া টহল, জল-স্থল আর আকাশ পথে সশস্ত্র সীমান্তরক্ষীর বিচরণ।
সার্বক্ষণিক হেলিকপ্টার টহলের মধ্যেই মেক্সিকোর দালালেরা নদীতে ছেড়ে দেয় ভাগ্যান্বেষী অভিযাত্রীদের। সীমান্ত রক্ষীদের তাড়া খেয়ে কেউ ডুবে মরে, লাশ ভেসে যায় রিও গ্রান্ডে নদীতে। এভাবে কত বাংলাদেশির লাশ ভেসে গেছে বা কতজন মেক্সিকোর কারাগারে আছেন তার হিসেব কারও কাছে নেই।
এমআরএম/জেআইএম