স্বামী হারানোর পরই ওমানে হ্যাপির ‘জীবনযুদ্ধ’
হ্যাপি দাশ। স্বামী অজিত দাশকে নিয়ে ৩০ বছর ধরে মরুময় দেশ ওমানে বসবাস করেন। তাদের সংসার বেশ সুখেই কাটছিল। অজিত দাশকে সফল ব্যবসায়ী বলা চলে। স্ত্রী হ্যাপি গৃহিণী হিসেবেই থাকতেন। খুব একটা চালাক ছিল না। এটিএম থেকে কীভাবে টাকা তুলতে হয় তাও জানতো না। দক্ষতার বড়ই অভাব ছিল তার।
ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। এক ঝড়েই হ্যাপি-অজিতের সংসার নিমিষেই এলোমেলো হয়ে গেল। সময় পরিস্থিতি মানুষকে বদলে দেয়। হ্যাপি দাশই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। একজন নারী হয়েও তিনি এখন সফল উদ্যোক্তা।
সময়টা ২০০৯ সাল। ওমানে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ‘গনুর’ মুখোমুখি হয়, অজিত দাশ। সেই গনুতে অনেক মানুষ প্রাণ হারায়, স্বামী হারা হন হ্যাপি দাশ, স্বামীর অকাল মৃত্যুতে যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। এমতাবস্থায় কোথায় যাবেন, কি করবেন কিছুই বুঝছিলেন না। ওই সময় বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব থেকে শুরু করে কমিউনিটির সিনিয়ররা এসেছিলেন তাকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করতে, কিন্তু হ্যাপি দাশ কারো থেকেই কোনো সহযোগিতা নেননি, তিনি শুধু একটি কাজ চেয়েছিলেন সবার কাছে।
হ্যাপি দাশ ওমানে ২৩ বছর ধরে বসবাস করছেন, স্বামী হারানোর পর ভেঙে না পড়ে নিজেই নেমে পড়েন জীবনযুদ্ধে। শুরুতে ২০১০ এ বাংলাদেশ স্কুলে চাকরি করেন দু’বছর। চাকরির পাশাপাশি ওমানের একটি চ্যারিটেবল সংস্থা ‘দার আল আত্তার’ মাধ্যমে এক বছর ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্যবসায় শুরু করেন। বর্তমানে তার ডিজাইন করা পণ্য ওমানের বিভিন্ন শহরে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
এভাবে ধীরে ধীরে তিনি হয়ে উঠেন সফল নারী উদ্যোক্তা, তিনি দুই ছেলে নিয়ে বেশ সচ্ছলভাবেই সংসার পরিচালনা করছেন, বড় ছেলে বিবিএ শেষ করেছে। ছোট ছেলে মালয়েশিয়ায় পড়ালেখা করছে। হ্যাপি সংগ্রামী নারী উদ্যোক্তা হিসেবেই পরিচিত।
এমআরএম/পিআর