গাড়িতে বিশ্বভ্রমণে বাংলাদেশি সাত্তার

বাইজিদ আল-হাসান
বাইজিদ আল-হাসান বাইজিদ আল-হাসান , ওমান প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪:৩৬ পিএম, ০৮ নভেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশ থেকে কানাডা, মালয়েশিয়া থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)- এভাবে এক গাড়িতেই দেশ-দেশান্তর ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশি আবদুর ছাত্তার। লাল সবুজের পতাকা নিয়ে গিনেস বুকে নাম লেখাতেই তার এ উদ্যোগ।

নিজ গাড়ি নিয়ে বিশ্ব ভ্রমণের উদ্দেশে দেশ থেকে দেশান্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ঝিনাইদহের সাত্তার। ইতোমধ্যেই তিনি দুবাই থেকে ওমানে অবস্থান করছে।

কানাডা থেকে ইউরোপের দেশগুলো ভ্রমণ করে বাংলাদেশ। এরপর মালয়েশিয়া থেকে দুবাই গিয়ে ওমানে অবস্থান করছেন এই পতাকাবাহী। এভাবেই দিনের পর দিন ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। গাড়ির চাকা ঘুরছে আর একেকটি নতুন দেশে প্রবেশ করছে।

জন্মস্থান ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গোপালপুরে হলেও আব্দুস সাত্তার বেড়ে উঠেছেন যশোরে। পেশায় একজন অ্যাকাউন্টস ও ফিনান্সিয়াল কন্সালটেন্ট। দীর্ঘদিন লন্ডনে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেছেন তিনি। নিজ পরিবার নিয়ে বেশ ভালোই ছিলেন আব্দুস সাত্তার। দীর্ঘদিন চাকরির জমানো প্রায় অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে নেমে পড়েন বিশ্ব ভ্রমণে।

Sattar2

মিৎসুবিসি আউটল্যান্ডার-২০০৬ মডেলের গাড়িটি নিয়ে ২০০৯ সালে লন্ডন থেকে তিনি যাত্রা শুরু করেন। ৬৫ বছর বয়সী এ বাংলাদেশি ইতোমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে এখন তার যাত্রা আরব দেশ ভ্রমণ করার। শারীরিক অসুস্থতা ও অর্থের অভাবে খুবই হতাশার মাঝে দিনযাপন করছেন আব্দুস সাত্তার।

আলাপে আক্ষেপের সঙ্গে সাত্তার বলেন, ‘দেশকে ভালোবেসে গিনেস বুকে নাম লেখাতে ঝুঁকি নিয়ে বিশ্ব ভ্রমণে নেমে পড়েছি। সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা পেলাম না। এমনকি দেশের এক কোম্পানি স্পন্সর করার আশ্বাস দিয়েও করেনি।’ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কাজটি আমার জন্য সহজ হয়ে যাবে। দেশের পতাকা হাতে নিয়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে অবশ্যই ঘুরব আমি।’

তিনি বলেন, একদিন না খেয়ে থাকা যায়, কিন্তু পেট্রোল না কিনলে গাড়ির চাকা ঘুরবে না। তার এই যাত্রাপথে অনেক বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে চলেছেন। এ ছাড়া তুরস্কে ডাকাতের কবলেও পড়েছিলেন তিনি। কয়েকটি দেশে ডাকাত ও ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে সব হারিয়েও হাল ছাড়েনি এ ভ্রমণ পিপাসু।

Sattar3

আবদুর ছাত্তার জানান, দেশ ভ্রমণ করতে গিয়ে তিনি যেমন নানা বিপদের মুখোমুখি হয়েছেন, তেমনি অনেক স্থানে সম্মানও পেয়েছেন। সেসব কথা বই লিখে তুলে ধরার প্রত্যাশা রয়েছে এই ভ্রমণ পিপাসু মানুষটির। ইতোমধ্যেই তিনি দুটি বইও লিখেছেন। ভবিষ্যতেও বিশ্ব ভ্রমণের অভিজ্ঞতা কাগজে-কলমে লিখে রেখে যেতে চান তিনি।

তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ওমানের দ্বিতীয় বৃহত্তম মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি এশিয়া এক্সচেঞ্জ থেকে সম্মাননা দেয়া হয়েছে।

এমআরএম/পিআর

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]