ইমিগ্রেশন সহজ করল পর্তুগাল

মো. মুখলেছুর রহমান (মুকুল)
মো. মুখলেছুর রহমান (মুকুল) মো. মুখলেছুর রহমান (মুকুল) , সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৫:৪৭ পিএম, ১৩ অক্টোবর ২০১৮

পর্তুগাল অর্থনীতির মন্দা কাটিয়ে নতুন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ দিচ্ছে। দেশটির ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সহজ করে বিদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য চালু করেছে গোল্ডেন রেসিডেন্ট ভিসা।

বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা অনেকেই এখন এশিয়া আর ইউরোপের অনেক দেশেই তাদের সেকেন্ড হোম করছেন। বর্তমানে এই তালিকায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশ খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, তার মাঝে রয়েছে পর্তুগাল একটি। আইসল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের পরে বিশ্বের ৩ নম্বর নিরাপদ দেশ পর্তুগাল।

২০১২ সাল থেকে চালু হওয়া পর্তুগালের এই ভিসার জন্য ৫শ’ হাজার ইউরো বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ কোটি টাকার মতো যদি কোন ব্যক্তি এদেশের আবাসন খাতে বিনিয়োগ করে এবং বছরে অন্তত ৭ দিন পর্তুগালে থাকতে পারে তবে সে এই ভিসার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী ব্যক্তি নিজেসহ তার পরিবার অর্থাৎ পিতা-মাতা, স্ত্রী ও সন্তানসহ একত্রে সবার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর এই সমপরিমাপ টাকা বিনিয়োগ করে কমপক্ষে ১০ জন লোকের কর্মসংস্থান করতে পারলে পেয়ে যাবে গোল্ডেন ভিসা বা রেসিডেন্ট পারমিট।

শুরুতে এক বছরের এবং পরবর্তীতে নবায়নের সময় প্রতি বার ২ বছর করে রেসিডেন্ট পারমিট দেবে। এভাবে ৫ বছর থাকলে পর্তুগিজ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাবে। শুরুতে যে ভিসা বা রেসিডেন্ট পারমিট পাবে তা দিয়ে ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে ভ্রমণ, বসবাস, পড়ালেখা করার সুযোগ পাওয়া যাবে। আর ৫ বছর পর পর্তুগিজ নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে ইউরোপিয়ন নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবে এবং পর্তুগিজদের সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

জনপ্রিয় ও বিদেশি ব্যবসায়ীদের পর্তুগালমুখি করতে বর্তমানে দেশটির সরকার কিছু শর্ত সাপেক্ষে এটিকে কমিয়ে ৩শ’ হাজার ইউরো করা করেছে।এক্ষেত্রে অনগ্রসর শিল্প এবং এগ্রিকালচার সেক্টরসহ বেশ কিছু নিদির্ষ্ট খাতে বিনিয়োগ করা যাবে। আবাসনের ক্ষেত্রে ৩০ বছরের পুরনো রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে।

পর্তুগাল সরকারের তথ্য মতে, চালু হওয়া গোল্ডেন রেসিডেন্ট ভিসা/পারমিট ২০১২ থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার জন বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করে প্রায় ১০ হাজার পরিবারের জন্য রেসিডেন্ট পারমিট নিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে চীন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, রাশিয়া, লেবানন, বাংলাদেশসহ অনেক দেশ।

আফ্রিকা, এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকাতে পর্তুগিজ উপনিবেশ থাকায় এবং পর্তুগিজ ভাষা বিশ্বের বেশি প্রচলিত ভাষার একটি হওয়াই বর্তমান সময়ে এই পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এশিয়া, আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে।

ইউরোপের অন্য অনেক দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, পর্তুগালে ধর্ম-বর্ণ বিভেদ নাই বললেই চলে। অসম্প্রদায়িক এই দেশ যেখানে সবাই সবার মতো করে যার যার রীতি-নীতি পালন করছে। পর্তুগিজরা সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের প্রতি আন্তরিক। উষ্ণ, শুষ্ক এবং শীতল আবহাওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পরিবেশে বসবাসের জন্য ইউরোপের মাঝে এর চেয়ে ভাল জায়গা আর কি হতে পারে।

এমআরএম/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]