ওমানে বালিশ ব্যবসায় শহিদুলের সফলতা
প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন থাকে, থাকে আকাঙ্ক্ষা। আর সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার নামই সফলতা। শহিদুল ইসলাম। ফেনির দাগন ভূঁইয়ার এক সাহসী যুবক। ২০০২ সালে স্বপ্ন নিয়ে আসেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে। বালিশ ব্যবসা করে হয়েছেন কোটিপতি, সফল ব্যবসায়ী।
শহিদুলের প্রবাস জীবনের শুরুটা বাধার মধ্য দিয়ে, এত অল্প বয়সে বিদেশ আসার কারণে ওমানে পড়েছেন হাজারো সমস্যায়। এই ছোট্ট ছেলেটিই একদিন ওমানের সফল বাংলাদেশি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে তা কেউ চিন্তাও করতে পারেনি।
তার দুই ভাই ওমানে আগে থেকেই ব্যবসা করছেন, সেই হিসেবে অল্প বয়সেই ভিসা দিয়ে নিয়ে আসেন ছোট ভাই শহিদুল ইসলামকে।
ওমানে আসার তিনবছর পর ২০০৫ সালে শুরু করেন ব্যবসা, মাস্কাটের নিকটবর্তী শহর বারকাহতে দেয় বালিশের ফ্যাক্টরি, দুর্ভাগ্যবসত ব্যবসা শুরুর দুই বছর পর ২০০৭ সালে ভয়াবহ সাইক্লোনে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়, প্রায় দেড় কোটি টাকার লোকসান হওয়ার পরেও পুনরায় ব্যবসায় মনোযোগ দেন।
এরপর দীর্ঘ ৮ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে পূর্বের ক্ষতি কাটাতে না কাটাতেই ২০১৬ সালে আবার আগুন লেগে সমস্ত ফ্যাক্টরি ধ্বংস হয়ে যায়! এরপরেও থেমে থাকেনি শহিদুল। পরে দেশ থেকে স্ত্রীর গহনা বিক্রি ও শেষ সম্বল জমি জায়গা বিক্রি করে আবার ব্যবসা শুরু করে।
বর্তমানে ওমানের বিখ্যাত সব হাইপার মার্কেটগুলোতে তার কোম্পানির বালিশ দেখা যায়, এছাড়াও ছোট-বড় অনেক হোলসেল দোকানেও তার পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, পরিচিতি রয়েছে পুরো ওমানজুড়েই।
দেশটিতে দুই মেয়ের নামে ‘আল সাইমা ও আল সাইফা’ ব্রান্ড প্রতিষ্ঠিত করেছেন। উৎপাদিত পণ্যের ভেতর উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কুলিং ফাইবার বালিশ, বাংলাদেশি মূল্যে প্রায় ৩৫০০ টাকা। এই বালিশগুলো ওমান ও কাতারের বিভিন্ন ফাইভ স্টার হোটেলে সাপ্লাই দেয়া হয়।
এছাড়াও ওমানি মজলিস তাকিয়া, কমফোর্টার, সোফা সেট, বেডশিট ও করটন্স ইত্যাদি তৈরি করে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন দেশটিতে।
ইতোমধ্যে তিনি ওমানে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নিজের একটি ফ্যাক্টরিসহ ৪টি সুপারশপ, এছাড়াও শিগগিরই কাতারেও একটি ফ্যাক্টরি ওপেন করতে যাচ্ছেন। তার কোম্পানিতে বাংলাদেশি শ্রমিক ছাড়াও প্রায় ৪০ জন শ্রমিক কর্মরত রয়েছে।
এমআরএম/জেআইএম