বৈশাখ ঘিরে বাঙালির আনন্দের যেন শেষ নেই
আবহমান বাংলার ঐতিহ্য পহেলা বৈশাখ। আর এই বৈশাখ ঘিরে বাঙালির আনন্দের যেন শেষ নেই। প্রবাসে হাজারও কর্মব্যস্ততার মধ্যেও বাঙালিরা এই আনন্দ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে চায় না। দেশে বৈশাখের আনন্দ পেরিয়ে গেলেও প্রবাসে এখনও রয়ে গেছে বৈশাখ বরণের আমেজ।
বাঙালি তো বরাবরই অতিথি পরায়ণ জাতি, সামাজিক বন্ধনটিও শক্ত তাদের। কাউকে না বলে তারা খায় না। সবাই মিলে এক জায়গায় হবে, খাবে, আনন্দ করবে-সে আনন্দের ভাগ সবাই পাবে। আরকানসাস অঙ্গরাজ্যের পাইনব্লাফ শহরের বাঙালিরাও এর ব্যতিক্রম নন। আর তাই প্রতিবারের মতো এবারও আরকানসাসের পাইনব্লাফ শহরের বাঙালিরা আয়োজন করেছিল বৈশাখী উৎসব ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ১৪২৫।
রোববার হোয়াইট হল কমিউনিটি সেন্টারে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৈশাখী উৎসব ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ১৪২৫। অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে। সমবেত কণ্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ পরিবেশন করেন কিরণ, বিশাল, শিবলী, ইমা, নাজনীন ও জিনাত।
সূচনা বক্তব্য রাখেন আসলাম হাবিব চেধুরী। স্থানীয় শিল্পী রায়হান, বিশাল, শিবলী, কিরণ, ইতি, ইমা, জিনাত, নাজনীন,ও শাম্মী দলীয় কণ্ঠে নিয়ে আসে বর্ষ বরণ সঙ্গীত’ এসো হে বৈশাখ এসো এসো’। কবিতা আবৃত্তিতে ছিল নাজনীন কাদির ও শিশু শিল্পী আসফিয়া রহমান। নৃত্য পরিবেশনে ছিল শাহনাজ তাজনিন খান ও সামিরা কাজল খান। সংগীতে ছিল স্থানীয় শিল্পী মনিকা ও নাজমুল আলম কিরণ।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিল নাজনীন কাদির ও জিনাত রহমান। সাংস্কৃতিক পর্বের অন্যতম আকর্ষণ ছিল চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ বিউটি দাস।
বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, খাবার সবকিছু মিলেই তো বৈশাখ। এরপর চলে বৈশাখী মধ্যাহ্নভোজ। মধ্যাহ্নভোজে ছিল পান্তা, ইলিশ, নানা পদের ভর্তা, মিষ্টি, দই, সন্দেশ, পায়েস, পিঠা ছাড়াও ছিল বাহারি রকমের খাবার যা ছাড়া বৈশাখ কল্পনাই করা যায় না। সবাই লাইনে সারিবদ্ধ হয়ে প্লেট উঁচু করে নিয়েছেন পছন্দের সব দেশীয় খাবার।
উৎসবে শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণ এবং তাদের নাচ গান অনুষ্ঠানকে করে তুলেছিল আনন্দময়। বৈশাখী সাজে সজ্জিত প্রবাসী বাঙালি নারীদের অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে প্রাপ্ত-বয়স্ক সবাই মগ্ন ছিলেন উৎসবে। নাচ, গান, কৌতুক, দেশীয় খাবার সবকিছু মিলিয়ে পুরো অনুষ্ঠান হয়ে উঠেছিল প্রবাসের বুকে এক টুকরো বাংলাদেশ।
সায়মা সাত্তার/এমআরএম/জেআইএম