পর্তুগালে ‘বাংলাদেশ উৎসব’
বাংলাদেশে ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়। ঠিক একই সময়ে বিদেশে থাকা বাংলাদেশিরাও দেশের সাথে মিল রেখে সমানতালে নানা আয়োজনে উদযাপন করে থাকেন বাংলা নববর্ষ। অনেক সময় ক্যালেন্ডারে দিনক্ষণে পহেলা বৈশাখের প্রথম দিন পেরিয়ে গেলেও প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিরা কিছুটা পরে হলেও আনন্দ উৎসবে দিবসটি পালন করে থাকেন।
প্রবাসে কর্মব্যস্ততা এবং জীবনসংগ্রামে সবাই হাঁপিয়ে ওঠেন। বিদেশি সংস্কৃতির মধ্যে বাঙালি যখন হাবুডুবু খায় তখন নিজস্ব শেকড় সন্ধানের মধ্যে কিছুটা আত্মতৃপ্তি খুঁজে ফেরে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে নিজের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য বড় মাধ্যম এই পহেলা বৈশাখ। আর সেই লক্ষ্যেই আগামী ২৯ শে এপ্রিল (রোববার) পর্তুগালে নানা আয়োজনে উদযাপন করা হবে বাংলা নববর্ষ।
‘বাংলাদেশ উৎসব’ শিরোনামে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র বাঙালি নয়; বিদেশের নানা মিশ্র সংস্কৃতির মধ্যে বিশ্বের মাঝে বাঙালির সংস্কৃতি তুলে ধরাই একমাত্র প্রয়াস।
এ উপলক্ষ্যে আগামী রোববার বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনের আয়োজনে লিসবনের বিখ্যাত ওরিয়েন্তে মিউজিয়াম (Museo do Oriente) এ ‘বাংলাদেশ উৎসব’ আয়োজন করা হয়েছে। এ উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য পর্তুগালে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবন।
বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে একটি আমন্ত্রণ পত্রের মাধ্যমে সকলকে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার আহবান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের নানা আয়োজনের মধ্যে থাকছে সকাল ১০টায় মিউজিয়াম প্রবেশ পথে দেশিয় আমেজে দেশি-বিদেশি অতিথিদের অভ্যর্থনা। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথমবারের মতো লিসবনে অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ওরিয়েন্ত মিউজিয়ামের সামনে থেকে শুরু হয়ে এটি শেষ হবে লিসবনের টাগুস নদীর তীরে। এরপর সকাল ১১টায় এস ই রুমে শিশু-কিশোরদের জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত মুখোশ বানানো প্রশিক্ষণ কর্মশালা, ১১টা ১৫ মিনিটে বাংলাদেশের চিত্রকর্ম ও পোশাক প্রদর্শনী ‘বাংলাদেশের রঙ’ এর উদ্বোধন।
এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় বেইজিং হলে বাংলাদেশি সঙ্গীতের উপর কর্মশালা এবং বিকাল ছয়টায় মিলনায়তনে বাংলাদেশি লোক, বাউল ও সূফী সঙ্গীত পরিবেশনা, নৃত্য এবং বাঙ্গালি ঐতিহ্যবাহী পোশাক প্রদর্শনী।
দূতাবাস সুত্রে জানানো হয়েছে, বিশেষ কিছু আয়োজন গুলোতে আসন সংখ্যা সীমিত। অনুষ্ঠানের দিন সকাল ১০টা হতে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে যাদুঘরের অভ্যর্থনা কেন্দ্র থেকে আগ্রহীদের টিকেট সংগ্রহ করতে হবে।
আবহাওয়া সংকেত দিচ্ছে রোববার সকাল থেকে পর্তুগালের আকাশ থাকবে খানিকটা মেঘাচ্ছন্ন; রয়েছে বৃষ্টির সম্ভাবনাও, কিন্তু স্বদেশ থেকে ৯ হাজার কি.মি. দূরের আটলান্টিক পাড়ের দেশ পর্তুগালে বসবাসরত বাঙ্গালি মেয়েদের রং-বেরঙের শাড়ি, কপালে লাল টিপ, হাতে চুড়ি কিংবা ছেলেদের রঙিন পাঞ্জাবি হয়তো আলোকিত করে তুলবে লিসবনের চারপাশ। বাঙালির রঙিন উৎসবের কাছে হার মানবে প্রকৃতি। ঢাকার রমনার উৎসবের মতো না হলেও প্রবাসী বাঙালিরা সেজেগুজে, বিশেষ করে নারীদের পরনে শাড়ি আর ছেলেদের পরনে পাঞ্জাবি মনে করিয়ে দেবে আমরা বাঙালি ছিলাম, আছি... থাকব।
এসআর/পিআর