জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে কী হচ্ছে?
জুলাই বিপ্লবের ‘ঘোষণাপত্র’ নিয়ে তৈরি হয়েছে টানাপোড়েন। সরকারবিরোধী আন্দোলনে একাট্টা হলেও এক্ষেত্রে বেঁকে বসেছে বিএনপি। যার কারণে বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে গিয়েও পিছু হটেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।
যদিও তাদের দাবি, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিমত নেই। দৃষ্টিভঙ্গিগত কিছু পার্থক্য রয়েছে। সেগুলো আমরা সমাধান করতে পেরেছি।’ কিন্তু বাস্তবে এমন চিত্র দৃশ্যমান নয়।
স্বভাবতই জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে কী হচ্ছে? আদৌ সরকার এ ঘোষণা দেবে কি না? হলেও কীভাবে? বিএনপি এটাতে সায় দেবে কি না?
এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাধীনতার ঘোষণার একমাস পরে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল একটি ঘোষণাপত্র দেওয়া হয়। সেটির ওপর ভিত্তি করে সংবিধান প্রণয়নের আগ পর্যন্ত দেশ পরিচালনাও হয়েছে। সেই নজিরের ওপর ভিত্তি করে এবারও সেটি করা যায়। তবে, সেটি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে হওয়া সমীচীন হবে।
‘এটা নির্দিষ্ট কোনো দলের প্রক্লেমেশন নয়। আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারিত জাতি। আর যেন প্রতারিত না হই এজন্য এই ইশতেহার ঘোষণা করা হবে। আমরা চাই যেখান থেকে এক দফা ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা করা হবে।’- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ
গত ২৮ ডিসেম্বর রাত থেকেই জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এজন্য ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতাকে জড়ো হওয়ারও আহ্বান জানান।
২৯ ডিসেম্বর দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ জানান, বিপ্লবের ঘোষণাপত্র ৫ আগস্ট হওয়া উচিত ছিল। এটি না হওয়ার কারণে স্বৈরাচারের দোসররা সক্রিয় রয়েছে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মানুষ ৭২-এর মুজিববাদের সংবিধানের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। ৭২-এর সংবিধানের বিরুদ্ধে যেভাবে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, সেটাকে স্বীকৃতি দিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হবে।
আরও পড়ুন
- রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া তৈরি হবে
- জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিমত নেই: নাসীরুদ্দীন
- ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে দেশব্যাপী জনসংযোগ ৬ থেকে ১১ জানুয়ারি
হাসনাত বলেন, এটা নির্দিষ্ট কোনো দলের প্রক্লেমেশন নয়। আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারিত জাতি। আর যেন প্রতারিত না হই এজন্য এই ইশতেহার ঘোষণা করা হবে। আমরা চাই যেখান থেকে এক দফা ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা করা হবে।
এ নিয়ে সেদিন বিএনপির একাধিক নেতা নেতিবাচক বক্তব্য দিলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ধোঁয়াশা তৈরি হয় ঘোষণাপত্র ঘোষণা নিয়ে।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ভর করলেও এখন তাদের নিয়ে শুরু করেছে টানাহেঁচড়া। প্রথমে আন্দোলনের ক্রেডিট নিয়ে দূরত্ব তৈরি করেছে বিএনপি। এই সুযোগে পূর্ণাঙ্গ ক্রেডিট দিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করেছে জামায়াত। দল গঠনসহ নানান ইস্যুতে বিএনপি সমালোচনা করলেও জামায়াত নীরব থেকেছে। এমনকি বিপ্লবের ঘোষণাপত্র ইস্যুতেও জামায়াত ছিল নীরব, কিন্তু বিরোধিতা করেছে বিএনপি।
ঘোষণাপত্র দেবে সরকার
৩০ ডিসেম্বর রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে, সব পক্ষের সমন্বয়ে তারাই এই ঘোষণাপত্র দেবেন। পরে ছাত্ররা শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি পালন করলেও ঘোষণাপত্র দেননি। বরং তারা সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ায় সাধুবাদ জানিয়ে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র দেওয়ার আলটিমেটাম দেন।
সেদিন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আজ আমরা ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে উপস্থিত হয়েছি। আহত এবং নিহতদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি সেটি একটি ঘোষণাপত্রে লিপিবদ্ধ করতে চেয়েছিলাম। সরকার দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যাদের অঙ্গহানি হয়েছে, নিহত হয়েছেন তাদের কথাগুলো যদি ঘোষণায় উল্লেখ না থাকে তাহলে জনতা সেই ঘোষণা মেনে নেবে না।
সমাবেশে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, অসংখ্য শহীদের বাবা-মা এখানে উপস্থিত হয়েছেন। তাদের সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে। সরকারকে হুঁশিয়ারি দিতে চাই, বিচারের জন্য যদি আপনারা সক্রিয় হতে না পারেন তাহলে দেশের ছাত্র জনতা বিচার হাতে তুলে নেবে। আওয়ামী লীগকে বিচারের মাধ্যমে নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। বাংলাদেশের মাটিতে খুনি হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়বো না। লড়াই শুরু হয়েছে, লড়াই চলবে।
ঘোষণাপত্র নিয়ে জনসচেতনতা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা ৪ জানুয়ারি বাংলামোটরের কার্যালয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণাপত্র নিয়ে জনসচেতনতা তৈরির কর্মসূচি দেন। ৬ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে লিফলেট বিতরণ, সমাবেশ ও জনসংযোগ করবে তারা।
আরও পড়ুন
- জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সরকারের সম্পৃক্ততা নেই
- জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতেই হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র
- ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে: হাসনাত
সেদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকারের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। অভ্যুত্থানে সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। আমাদের আহ্বান থাকবে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকার শিগগিরই কাজ শুরু করবে। সরকারকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’
‘আমরা মানুষের কাছে ছুটে যেতে চাই। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, পেশাজীবী মানুষের মাঝে জনসংযোগ চালাব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি যৌথভাবে এই কাজটি করবে।’ যোগ করেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
এ নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আক্তার হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকে ৭২-এর সংবিধানের পক্ষে ঢাল বানানোর চালাকির চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। কিন্তু সত্য হলো বিদ্যমান সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে না। এই সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের রক্ষাকবচ হতে পারেনি। এই সংবিধান আওয়ামী চেতনার মোড়কে আবৃত। অতি ক্ষমতায়ন প্রধানমন্ত্রীকে সাংবিধানিকভাবেই স্বৈরাচারী হওয়ার সুযোগ দিয়ে রেখেছে। নাগরিক অধিকার সংকুচিত হয়ে আছে এতে। সিলগালা করে ফেলা হয়েছে এর প্রায় এক তৃতীয়াংশকেই। সুতরাং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং চব্বিশের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতেই নতুন সংবিধান প্রয়োজন। এ জাতি এবার সুযোগ পেয়েছে, কোনোভাবেই এই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না।’
‘বাংলাদেশের সব মানুষ ঘোষণাপত্র নিয়ে ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন। দৃষ্টিভঙ্গির জায়গা বা জনগণের ভাষা আরও কীভাবে তুলে আনা যায় সেই জায়গায় আমাদের কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে।’- জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিমত নেই। দৃষ্টিভঙ্গিগত কিছু পার্থক্য রয়েছে। সেগুলো আমরা সমাধান করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করেছিলাম সব পক্ষ যেন অংশগ্রহণের সুযোগ পান। সবাই যেন তাদের ভাষা প্রকাশ করতে পারেন। ৫ আগস্ট যেভাবে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল তাদের ভাষা যেন ঘোষণাপত্রে থাকে। তাদের ন্যায্য যে অধিকার রয়েছে, যারা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করেছেন তাদের ভাষা যেন ঘোষণাপত্রে থাকে সেটি নিশ্চিতে আমরা সবার সঙ্গে কথা বলেছি।’
‘চারমাস অতিবাহিত হলো, সরকার গঠন হয়েছে। আমরা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি যে, জনগণের কাছে তাদের একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে, সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এবং আমরা জনগণকে একটি সমুন্নত জায়গায় আনার জন্য একটি উদ্যোগ গ্রহণ করি।’
আরও পড়ুন
- ৩১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক দল ঘোষণা করা হবে
- নতজানু পররাষ্ট্রনীতি দেখতে চাই না: নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী
- ‘দড়ি লাগলে দড়ি নে, খুনি হাসিনার ফাঁসি দে’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং পক্ষভুক্ত মানুষ যারা রয়েছেন এবং বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে উদ্যোগটি আসার কথা ছিল, যখন জাতির সংকটকাল যাচ্ছিল, নিহত এবং আহতদের কোনো স্বীকৃতি বা ঘোষণাপত্র আসছিল না তখন এই সংকটকালীন মুহূর্তে আমরা সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছি।
‘বাংলাদেশের সব মানুষ ঘোষণাপত্র নিয়ে ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন। দৃষ্টিভঙ্গির জায়গা বা জনগণের ভাষা আরও কীভাবে তুলে আনা যায় সেই জায়গায় আমাদের কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। বাহাত্তরে যেটা হয়েছিল... একদলীয় জায়গায় না গিয়ে.. বাংলাদেশের অনেক অংশের মানুষকে খারিজ করে একটা সংবিধান বানানো হয়েছিল। যেটা আমরা ৫৩ বছরে দেখেছিলাম একটা অকার্যকর জায়গায় পরিণত হয়েছে।’
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একযোগে জনসংযোগ, লিফলেট বিতরণসহ প্রান্তিক জনগণের কাছে প্রচার-প্রচারণা চালাবে বলেও জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
‘ছাত্ররা যেটা চায় সেটা দেশের জন্য মঙ্গলের জন্য। সরকার যেটা চায়, সেটাও দেশের মঙ্গলের জন্য। দেশের মঙ্গলটা সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে যেন হয়, সেজন্য যা যা করা দরকার সরকার করবে।’- সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ
আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ঘোষণাপত্র
বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকারের কাজের অগ্রগতি বা প্রস্তুতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা গত ৩০ ডিসেম্বর বলেছি, গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনসহ সক্রিয় সব শক্তির সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একটা ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সরিনি। আমরা সেটা করবো। এটির জন্য যে প্রস্তুতির কথা বলছেন, সেটি হলো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা। এই আলোচনার জন্য আলাদা প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিতই যোগাযোগ থাকে।’
কবে নাগাদ হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে ফয়েজ আহম্মদ বলেন, ‘আমরা শিগগিরই করবো। এ বিষয়ে সরকার নিজেই আন্তরিক, সরকার সেটা করবে। ছাত্ররা যেটা চায় সেটা দেশের জন্য মঙ্গলের জন্য। সরকার যেটা চায়, সেটাও দেশের মঙ্গলের জন্য। দেশের মঙ্গলটা সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে যেন হয়, সেজন্য যা যা করা দরকার সরকার করবে।’
আলাপ-আলোচনা করে আগানোই সমীচীন
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক সাবের আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘ঘোষণাপত্রটা সরকার গঠনের প্রারম্ভে হলে সমীচীন হতো। যদিও সে সময় পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। করে নাই। তবে এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আগানোই সমীচীন। কারণ শেষ পর্যন্ত একটা সময় নির্বাচন হবে, রাজনৈতিক দলের হাতেই ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সে সময় এটার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন প্রয়োজন হবে। এখন আলাপ-আলোচনা না করে করলে সেটার (ঘোষণাপত্র) দীর্ঘমেয়াদি বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে। যার ফলে একটু সময় লাগলেও আলাপ-আলোচনা করে আগানোই সমীচীন।’
এ নিয়ে বিএনপি নেতাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গেল ২৯ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সংবিধানে খারাপ কিছু থাকলে তা বাতিলযোগ্য। এই সংবিধানকে সংশোধন বা পুনর্লিখন করা যাবে। তবে কবর দেওয়া হবে এভাবে বলা ঠিক নয়। এগুলো ফ্যাসিবাদের ভাষা।’
‘ঘোষণাপত্রের খসড়া তৈরি বা এর ডেভেলপমেন্ট কতদূর, এ নিয়ে আমরা বেশকিছু ফোন কল পেয়েছি। আমরা শুধু এটুকু বলতে পারি, এটি নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে এবং সামনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথাবার্তা হবে। আমরা আশা করছি সামনে এর ডেভেলপমেন্ট দেখা যাবে।’ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম
নেওয়া হবে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এবং তাদের মতামত নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের খসড়া তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রোববার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব এসব কথা বলেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, ঘোষণাপত্রের খসড়া তৈরি বা এর ডেভেলপমেন্ট কতদূর, এ নিয়ে আমরা বেশকিছু ফোন কল পেয়েছি। আমরা শুধু এটুকু বলতে পারি, এটি নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে এবং সামনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথাবার্তা হবে। আমরা আশা করছি সামনে এর ডেভেলপমেন্ট দেখা যাবে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কবে নাগাদ আলোচনা শুরু হবে- জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে এখনো দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়নি।
এসইউজে/এমএমএআর/এমএস