আন্দোলনের মালিকানা হাইজ্যাকের চেষ্টা করবেন না: আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ১২:০৩ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আন্দোলনে যাবেন, নতুন নতুন বয়ান শোনা যাচ্ছে। আন্দোলন হাইজ্যাক করে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন। বয়ান দেওয়ার আগে একটু চিন্তা করে দেখবেন। আমরা এ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাই না। এ আন্দোলন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আন্দোলন। এই আন্দোলনের মালিকানা হাইজ্যাকের চেষ্টা করবেন না।

বুধবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের র‍্যালিপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মহানগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেটস্থ বিপ্লব উদ্যানের পাশে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা দুই নম্বর গেট থেকে শুরু হয়ে জিইসি মোড় হয়ে ওয়াসা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

আমীর খসরু বলেন, বিএনপি একা এই আন্দোলন করেনি। সব মানুষ মিলে আমরা আন্দোলন করে ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছি। আন্দোলন এবং আন্দোলনের মালিকানা কেউ নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। মালিকানার হিসাব যদি করতে হয়, আমরা (বিএনপি) যেই হিসাব দেবো, আপনারা লজ্জা পাবেন।

মালিকানা নিয়ে টানাটানি করলে শেখ হাসিনার পথে যেতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্দোলনের মালিকানা মানে জনগণ তাদের ভোটে যাকে ইচ্ছে তাকে নির্বাচিত করবে। এটা নিয়ে কেউ খেলাধুলা করলে আবার শেখ হাসিনার পথে যেতে হবে। আপনারা ভোট না নিয়ে নতুন নতুন বয়ান সৃষ্টি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা, এখানে কাজ করবে না। ভোটে যেতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে।

jagonews24

এই বিএনপি নেতা বলেন, ছাত্রদল দীর্ঘ ১৬ বছর নির্যাতনের পরও রাজপথে ছিল। ছাত্রদল রাস্তায় থেকে জীবন দিয়ে পঙ্গু হয়ে, মামলা খেয়ে, পালিয়ে, ব্যবসা-চাকরি হারিয়ে শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে। এই ছাত্রদল, যারা এরশাদকে বিতাড়িত করেছে, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে গুম, খুনের শিকার হয়েও কেউ বাড়ি ফিরে যায়নি।

তিনি বলেন, আমরা চাই না আন্দোলনকে নিয়ে দেশে একটি বিভক্তি সৃষ্টি হোক। আমরা চাই আন্দোলনকে নিয়ে দেশে ঐক্য সৃষ্টি হোক। আর আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে চিরজীবনের জন্য দেশ থেকে যে স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছে সেই ফ্যাসিস্ট ও তার প্রেতাত্মা যেন আর ফিরে আসতে না পারে।

আমীর খসরু বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা নির্বাচিত সংসদ সরকারের হাতে তুলে দেওয়া। এর বাইরে আর কোনো দায়িত্ব নেই। আর যে সংস্কারের গল্প করা হচ্ছে সেগুলো হবে আগামী সংসদে। অর্থাৎ নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা যত সংস্কার প্রয়োজন তা করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল বলেন, আন্দোলনের ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। আন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে, তখন ছাত্রদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। আর তখনই ছাত্রদলসহ সব দলই সরকার পতনে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি, ছাত্রদল, ছাত্র (শিক্ষার্থী) এবং ১৮ কোটি মানুষের নেতৃত্বে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে। মাদরাসা, স্কুল, কলেজের সব দেশপ্রেমিক শিক্ষার্থী আন্দোলন শেষ করে বাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরত গেছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও তাই করেছে। কিন্তু যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কথা বলে কোটায় গিয়ে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে দল গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, এসময় এটা হবে না। দেশের মানুষের পত্যক্ষ ভোটে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান।

এমডিআইএইচ/ইএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।