বাংলাদেশের সব সংকটের কারণ হলো নির্বাচন: আসাদুজ্জামান রিপন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০৬ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্বলতম সরকার হচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। একটা দুর্বল সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে পারে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। এগুলো ঠিক করার জন্য একটি নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের সব সংকটের কারণ হলো নির্বাচন।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জিয়া শিশু-কিশোর মেলার আয়োজনে এসব কথা বলেন তিনি। কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত বিএনপির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাবেক আহ্বায়ক মরহুম জাহিদ হোসেনের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সরকার সংস্কারের কথা বলে। কিন্তু, সরকার এরইমধ্যে সংস্কারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ মিস করেছে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করার ক্ষেত্রে সংস্কারের যে উদ্যোগ সেটা তারা ভুল করেছে। নির্বাচনের কোনো তারিখ দেননি, কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠন করে বসলেন। অথচ নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত কোনো সংস্কারের রিপোর্টই আসেনি। ৩১ তারিখ দুর্নীতি দমন কমিশন নিয়ে আলোচনা হওয়ার প্রথম রিপোর্ট পেশ করার কথা ছিল। কিন্তু, রিপোর্ট পেশ করার আগে সরকার দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করে বসলেন। বিচার বিভাগে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগ করে বসলেন। শেখ হাসিনা যে পদ্ধতিতে বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন, ঠিক সেভাবেই এই সরকার বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা চেয়েছিলাম সরকার সংস্কারের মধ্যে দিয়ে বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়া তৈরি হবে। কিন্তু সরকার সেটি করেনি। সরকার মুখে সংস্কারের কথা বলছেন, কিন্তু দৃশ্যমানভাবে সরকারের তরফ থেকে সংস্কারের কোনো উদ্যোগ আমরা দেখতে পাইনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি, সংস্কারের কথা বলে সংস্কারের প্রক্রিয়া পাস কাটিয়ে তারা হাসিনার পথ অনুসরণ করে বিচারক নিয়োগ করছেন, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেছেন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে লোক নিয়োগ করেছেন। এগুলো সবই হচ্ছে হাসিনার পরিত্যক্ত মডেল। এ সরকার কতটুকু সংস্কার করতে চায় সেটা আমরা জানি না। কিন্তু সংস্কারের নামে বছরের পর বছর তারা যদি ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে চায়, এটা বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।

আরও পড়ুন

বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সংকট এখনো শেষ হয়নি। ভীষণ একটা সংকটের মধ্যে আমরা আছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান বারবার বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন কঠিন হবে এবং বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মানুষের কাছে যেতে হবে এবং জন আস্থা অর্জন করতে হবে। এছাড়াও আমাদের আরেকটা কথা বলেছেন, সেটি হলো- ৫ আগস্টের আগের রাজনীতি এবং ৫ আগস্টের পরের রাজনীতি এক নয়। সুতরাং আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, রাজনীতি যদি করতে হয় তাহলে জনগণ কীভাবে সেটা মাথায় রাখতে হবে। এটা মাথায় না রাখলে রাজনীতি ভুল হয়ে যাবে। আমাদেরকে একটি জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। আর সেটি হলো, আন্দোলনকে কোনোভাবেই বিভক্ত করা যাবে না। আন্দোলনের স্পিরিটকে কোনোভাবে বিভক্ত করা যাবে না। আন্দোলনকে বিভক্ত করলে পতিত স্বৈরাচার লাভবান হবে। সুতরাং স্বৈরাচারকে লাভবান হতে দেওয়া যাবে না।

জাহিদ হোসেন চুন্নুর স্মৃতিচারণ করে ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, জাহিদ হোসেন চুন্নু ৮০র দশকে ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত না থেকেও ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের জাসাসের সঙ্গে যুক্ত থেকে পুরো আন্দোলনেই আমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি খুবই সক্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য ছিলেন। তার মধ্যে অমৃত সম্ভাবনা ছিল। তার অস্বাভাবিক মৃত্যু আমাদের পার্টিকে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

কেএইচ/এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।