হাসিনা-রেহানা পরিবারের দুর্নীতি
আর্থিক লেনদেনের নথি তলব করেছে দুদক
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়, ছোট বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের দেশে-বিদেশে লেনদেনের যাবতীয় নথি তলব করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো চিঠিতে সংস্থাটির অনুসন্ধান টিম সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নামে পরিচালিত অফশোর ব্যাংকের হিসাব বিবরণীসহ সব অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে।
পাশাপাশি অনুসন্ধান টিম প্রথম দফায় অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত নথিপত্র তলব করে নির্বাচন কমিশন এবং ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের নথি তলব করেছে।
আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) তাদের নামে পরিচালিত অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নথি ও দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের বিস্তারিত বিবরণ সরবরাহের জন্য বিএফআইইউর কাছে চিঠি দিয়েছে অনুসন্ধান টিম। জানা গেছে, শিগগির আরও কিছু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নথি তলব করে চিঠি পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন:
- হাসিনার অপকর্মের দায় ভারত নিজেই নিয়েছে: রিজভী
৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার: হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু দুদকের
রূপপুর কেলেঙ্কারি: অভিযোগ শেখ হাসিনা, জয় ও টিউলিপের বিরুদ্ধে
এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যর একটি দল গঠন করেছে দুদক।
শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে
অনুসন্ধান দলের নেতৃত্ব দেবেন দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। দলের অন্য সদস্যরা হলেন, উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, এস. এম. রাশেদুল হাসান ও এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর।
দুদকের এই দলটি আওয়ামী লীগ সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকারের ৮ প্রকল্পে ২১ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করবে। পাশাপাশি অনুসন্ধান করবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ৫৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির।
এর আগে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের কথা মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) জানিয়েছিলেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।
গত ১৫ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর এ অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। রিটে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রিটের বিবাদী করা হয়।
এসএম/এসএনআর/জেআইএম