রাজনীতিবিদদের নিজেদের সংস্কার করা প্রয়োজন: মঈন খান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪৬ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ফাইল ছবি

রাষ্ট্রের অন্যসব ক্ষেত্রের পাশাপাশি ছাত্র-জনতার আস্থা অর্জনে রাজনীতিবিদদের নিজেদের সংস্কার করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।

তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের কথা কেন এদেশের ছাত্র ও তরুণ সমাজ বিশ্বাস করে না, এটি হৃদয় থেকে খুঁজে বের করতে হবে, আত্মোপলব্ধি করতে হবে। আমরা গলা ফাটিয়ে যখন কথা বলি, তখন কেন ছাত্র-জনতা সেটি বিশ্বাস করে না। কেন তারা মনে করে ‘এটি কথার কথা’। আস্থা ফেরাতে রাজনৈতিক নেতাদের পরিবর্তন হতে হবে।

‘আজ এক কথা বলবেন, পরে আরেক কথা বলবেন’- রাজনীতিবিদদের এমন আচরণের সমালোচনা করে ড. মঈন খান বলেন, ‘রাজনীতিতে শেষ বলে কথা নেই’- এটি বলে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ও তরুণদের কাছে আর পার পাওয়া যাবে না।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে দি মিলেনিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘জনগণের প্রত্যাশা: অন্তর্বর্তী সরকারের রোডম্যাপ’ শীর্ষক দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

মঈন খান আরও বলেন, গণতন্ত্রের মূল হলো ভিন্নমত, এটি না থাকলে গণতন্ত্র থাকে না। এটি কিন্তু বাহাত্তর সালেও হরণ করা হয়েছিল। ৫ আগস্টের দিন সরকারের (শেখ হাসিনা) পালিয়ে যাওয়া কিন্তু দেশের জন্য সুখকর নয়। ভিন্নমত হরণের ফলে কিন্তু তার অবস্থা এমন হয়েছে। ভিন্নমত দমন না করলে রাষ্ট্র পরিচালনায় কোনো সমস্যা হয় না, এটা আমি মনে করি।

তিনি বলেন, বর্তমানে যে অবস্থায় আছি এই সময়ে আইন নিয়ে কথা বললে এটি অবান্তর। ডকট্রিন অব নেসেসিটিতে একটি আইনগত নীতি, যা সংকট পরিস্থিতিতে আইন বা নিয়মের প্রয়োগ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার অনুমতি দেয়। এর মানে হলো, যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া বা কাজ করা জরুরি হয় এবং সাধারণ আইন অনুসরণ করা সম্ভব নয়, তখন সেই পরিস্থিতিতে বিশেষ অনুমতি দিয়ে আইন প্রয়োগ করা হতে পারে। এটি সাধারণত সরকারি বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেখানে জরুরি অবস্থায় আইনগত বাধা অতিক্রম করতে হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার ও সংস্কার প্রসঙ্গে মঈন খান বলেন, এ সরকার ব্যর্থ হলে দেশের জন্য সামনে বিপদ অপেক্ষা করছে। আর সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, এটি কোনো সরকারের একার পক্ষে করা সম্ভব নয়।

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আমরা এখানে একটি পর্যায়ে এসেছি, সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) যৌক্তিক সময় দিতে হবে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারেরও মনে রাখতে হবে যে এই সময় কিন্তু সীমাহীন নয়। এটা সরকারকে বুঝতে হবে। কোন সময়টা যৌক্তিক আর কোনটি যৌক্তিক নয়, কোন কোন সংস্কার প্রয়োজনীয় এগুলোও সরকারকে বুঝতে হবে।

দি মিলেনিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রোখসানা খন্দকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ভূরাজনীতি ও বাণিজ্য বিশ্লেষক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হোসেন, সাংবাদিক আবু সাইদ খান, মাসুদ কামাল, মেজর (অব.) জামাল আহমেদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক ও জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ প্রমুখ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে এই বক্তারা বলেন, সার্বভৌমত্ব ও সুশাসন সর্বপ্রথম নিশ্চিত করা দরকার। অন্তর্বর্তী সরকারকে রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে। কারণ, অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার কাজ করতে পারবে না, সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রয়োজন।

কেএইচ/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।