সৈয়দ আবদুল্লাহ
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেবে না
জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমীর সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের বোরকা পরতে বাধ্য করবে, ঘরের বাইরে যেতে দেবে না বলে একটি ষড়যন্ত্রকারী চক্র অপপ্রচার চালাচ্ছে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে জোর করে কোনো কিছু জনগণের ওপর চাপিয়ে দেবে না।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সাথী-সদস্যদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ বলেন, ইসলামে কারও ওপর কোনো কিছু জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়ার বিধান নেই। ইসলামের চেয়ে বেশি ও প্রকৃত স্বাধীনতা অন্য কোথাও দেওয়া হয়নি। যারা সত্যের জন্য লড়াই করে, স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে, সম্পদের মোহ ছেড়ে আল্লাহর দ্বীনের জন্য লড়াই করে তারা কখনো কারও ওপর জোরপূর্বক কিছু চাপিয়ে দিতে পারে না, দেয় না।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লব আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয়। এই বিজয়ের মাধ্যমে মানবতার বিজয়ের সূচনা হয়েছে। এই বিজয় পূর্ণাঙ্গ হবে যখন বাংলার জমিনে আল্লাহর বিধান কায়েম হবে। যখন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে তখন মানুষ ন্যায়বিচার ও মৌলিক অধিকার পাবে। অধিকার পেতে মানুষকে তখন আর রক্ত দিতে হবে না, জীবন দিতে হবে না।
‘এখন আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য যে সংগঠন আন্দোলন করে আসছে, সেই সংগঠনের দিকে মানুষ দলে দলে ধাবিত হচ্ছে। এতে কারও কারও জ্বালা বেড়ে গেছে, কেউ কেউ নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। এদেশের জনগণই তাদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেবে।’
প্রীতি সমাবেশে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াতকে যারা বিগত ১৬ বছর ধরে সভা-সমাবেশ করতে দেয়নি, প্রকাশ্যে আসতে দেয়নি তারা আজ কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, আবার কেউ দেশের ভেতরই আত্মগোপন করে আছে। জনগণের সঙ্গে তাদের আজ কোনো সম্পর্ক নেই। তারা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েই জনগণের সঙ্গে এমনকি নিজ দলের নেতাকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেছে।
তিনি আরও বলেন, জামায়াত-শিবিরকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে এরা কত ধরনের নীলনকশা এঁকেছে। কত অপবাদ অপপ্রচার করেছে। কিন্তু দেশের জনগণ বুঝে গেছে জামায়াত-শিবির প্রতিষ্ঠাই হয়েছে জনগণের দাবি আদায়ের জন্য, জনগণের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য।
দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, পৃথিবীর বহু দেশে বহু বিপ্লব ঘটেছে। তবে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লব অন্যগুলোর চেয়ে ব্যতিক্রম। এ বিপ্লবে কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছিল না। এ বিপ্লবে পরাজিত শক্তি আওয়ামী লীগের কোনো নেতা পৃথিবী ত্যাগ না করলেও বহু নেতা গোপনে দেশত্যাগ করে পালিয়েছে। আওয়ামী লীগ ‘রাজাকার’ শব্দ ব্যবহার করে জামায়াতসহ বিরোধী মতকে হেয় করেছে। ছাত্রসহ পুরো জাতিকে শেখ হাসিনা রাজাকার বানিয়ে দিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, এতদিন জামায়াত দেশ সংস্কারের দাবি করেছে। এখন দেশের প্রতিটি মানুষ সংস্কারের পক্ষে। মানুষ মনে করে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলেই প্রকৃত অর্থে দেশ সংস্কার হবে। দেশ সংস্কারের জন্য প্রয়োজন নিজের সংস্কার, মানুষের সংস্কার।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- সাবেক এমপি এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ ও মাওলানা আব্দুল হালিম। উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. দেলাওয়ার হোসেন, মু. কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যাপক মোককাররম হোসাইন খান, শামসুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল-আমিন, অ্যাডভোকেট এস.এম কামাল উদ্দীন, ড. মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য সৈয়দ সিরাজুল হক ও সৈয়দ জয়নুল আবেদীনসহ মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এএএম/এমকেআর/এমএস