আমরা মালিক-শ্রমিকের সুসম্পর্ক চাই: জামায়াত আমির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪৫ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২৪

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, রাসুল (সা.) শ্রমিকের অধিকারকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি শ্রমিকদের হকের ব্যাপারে বারবার সতর্ক করেছেন। শ্রমিকের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার জন্য উৎসাহিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমরা মালিক-শ্রমিকের সুসম্পর্ক চাই। মালিক-শ্রমিক কেউ কাউকে ঠকাবেন না। এখান থেকে সবাই উপকৃত হবো। এ স্লোগান বাস্তবায়ন করতে চাই। এ বাগান থেকে চারা গাছ উঠিয়ে সমাজের সব জায়গায় রোপণ করতে চাই। আল্লাহ চাইলে এ ন্যায়ের বাগান তখন পরিপূর্ণ হবে, বৈষম্য দূর হবে।

শনিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর পল্টনের ফেনী সমিতি অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের অধিবেশন ও জেলা-মহানগরী সভাপতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষকে শ্রমিকের অধিকার লঙ্ঘন না করতে এবং তাদের সঙ্গে ইনসাফপূর্ণ আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসুল (সা.) শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় সর্বোচ্চ সচেষ্ট ছিলেন। শ্রমিকদের কেন্দ্র করে অনেক শ্রমিক সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে উঠেছে। এই সংগঠনের নেতারা শ্রমিকদের কষ্ট-ব্যথা-বেদনার খবর জানেন। কিন্তু গতানুগতিক ধারার শ্রমিকনেতারা শ্রমিকদের দুর্দশা কীভাবে দূর করতে হবে সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। বরং শ্রমিকদের পুঁজি করে কীভাবে নিজেদের ভাগ্য বদলাতে হবে তা ভালো করে জানে। ফলে শ্রমজীবী মানুষরা প্রতি যুগে এ সব ট্রেড ইউনিয়ন ও নেতৃত্বের কাছে বারবার প্রতারিত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। আল্লাহ মানবজাতিকে ন্যায় ও ইনসাফের বিধান দিয়েছেন তা যদি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রতি পালন করা হয় তাহলে শ্রমিকের দুঃখ, ব্যথা-বেদনা দূর হবে। ইনসাফের মানদণ্ডের ওপর যার যার প্রাপ্যতা নিশ্চিত হবে।

তিনি বলেন, একজন শ্রমিক যখন দেখবে তার শ্রমের ন্যায্য মূল্যায়ন করা হয়েছে, তখন শুধু দেহের শক্তি নয় মনের শক্তি যুক্ত হবে। এতে উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে যাবে। এতে কার্যত মালিকরা শ্রমিকদের থেকে বেশি লাভবান হবে। অন্যান্য ট্রেড ইউনিয়ন মালিক-শ্রমিকের সংঘাত লাগাতে চায়, আমরা এটা চাই না। মালিকরা উদ্যোক্তা না হলে শ্রমিকরা শ্রম খাটাবে কোথায়। আবার শ্রমিক না থাকলে কাকে দিয়ে উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে।

আমরা শ্রমিক ময়দানে একটি বিপ্লব ঘটাতে চাই। এ বিপ্লবের জন্য প্রত্যেকটি কর্মীকে নিজের চিন্তা ও কর্মের জগতে আমূল পরিবর্তন তথা বিপ্লব ঘটাতে হবে। আমরা যদি নিজের মধ্যে বিপ্লব ঘটাতে পারি তাহলে শ্রমিক অঙ্গনে প্রত্যাশিত বিপ্লব ঘটাতে পারবো। আমরা হবো, মর্যাদার অংশীদার। কিন্তু ওই বিপ্লব যদি না ঘটে তাহলে এ সমাজে আমাদের কারো মর্যাদা থাকবে না। আমরা যে যেখানে যে অবস্থায় থাকি না কেন সবাই অপমাণিত হবো, বার বার প্রতারিত ও বঞ্চিত হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, আদর্শ রাষ্ট্র গঠনে শ্রম অঙ্গনের গুরুত্ব অপরিসীম। এদেশের ৭০ শতাংশ মানুষ শ্রমিক। শ্রমিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো আদর্শ বাস্তবায়ন সম্ভব না। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে আগামী বাংলাদেশ গঠিত হবে। যেখানে থাকবে না কোনো ধরনের বৈষম্য। মানুষের ওপর যুগ যুগ ধরে চলা অবিচার-নির্যাতনের অবসান ঘটবে। এ দেশের শ্রমিক-জনতা সেই বাংলাদেশ গড়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।

ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আ ন ম শামসুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, গোলাম রব্বানী, লস্কর মো. তসলিম, কবির আহমদ, মাস্টার শফিকুল আলম ও মনসুর রহমান প্রমুখ।

এএএম/এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।