সেলিম উদ্দিন
স্বৈরাচারী সরকারের নির্দেশদাতাদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করুন
স্বৈরাচারী সরকারের খুনি ও নির্দেশদাতাদের চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রুত তাদের গ্রেফতার করতে হবে। নয়তো তারা পালিয়ে দেশের বাইরে চলে যাবে। বিভিন্ন জায়গায় ঢুকে পড়বে, রাষ্ট্রের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। কয়েকদিন আগে তারা এই কাজটিই করেছে, এখনো যে করবে না তার গ্যারান্টি নাই।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে চার শহীদ পরিবারকে অর্থসহায়তা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন>
সেলিম উদ্দিন বলেন, আমরা শহীদ পরিবারের বাসায় গিয়েও দেখা করেছি, কথা বলেছি। এখন শহীদ পরিবারগুলোও তাদের মনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করুক। মিডিয়ার মাধ্যমে জাতি জানুক কী রোমহর্ষক অত্যাচার চালানো হয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও জনতার ওপর।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা সন্তান হারিয়েছেন, তারা যেভাবে বলতে পারবেন, আমাদের পক্ষে সেটা সেভাবে বলা সম্ভব নয়। সাংবাদিক বন্ধুরা শহীদ পরিবারের অভিব্যক্তিগুলো মিডিয়ার মাধ্যমে জাতির সামনে তুলে ধরবেন।
খুনিদের বিচার দাবি করে মহানগরী আমির বলেন, ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের প্রধান নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্যরা এবং তার মন্ত্রিসভার এমপিরা। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা ও তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে, যেন একটা খুনের মদতদাতা বা খুনি রেহাই না পায়। এ বিচারের উদ্যোগ সরকারকে নিতে হবে।
সেলিম উদ্দিন বলেন, সরকারের তিন মেয়াদের সব এমপির মধ্যে যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত দ্রুত তাদের খুঁজে বের করে গ্রেফতার করতে হবে। যদি কেউ নিরপরাধী হয় তার ব্যপারটা আলাদা।
শহীদ ও আহতদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের উপদেষ্টারা যোগ্য ও অভিজ্ঞ। কিন্তু এখন পর্যন্ত কতজন শহীদ হয়েছেন, কতজন আহত হয়েছেন তা প্রকাশ করা হয়নি। বিভিন্ন হাসপাতাল, শহীদ পরিবারের মাধ্যমে এটি করা কোনো কঠিন কাজ নয়। রাষ্ট্রের জনগণ তাদের সাহায্য করবে। আমরা আশা করবো অনতিবিলম্বে শহীদ ও আহতদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
যারা আহত হয়ে হাসপাতালে আছেন, তাদের মধ্যে যাদের বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের দ্রুত সেই ব্যবস্থা করার দাবিও জানান সেলিম উদ্দিন।
কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য হেমায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে এবং মহানগরীর প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকারের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা ও সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
মতবিনিময় সভায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। এছাড়া বক্তব্য দেন তেজগাঁও উত্তর থানা আমির হাফেজ আহসান উল্লাহ, উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি মুহিবুল্লাহ, তেজগাঁও দক্ষিণ আমির ইঞ্জিনিয়ার নোমান আহমেদী, শিল্পাঞ্চল থানা আমির আলাউদ্দিন, নায়েবে আমির মুহাম্মদ উল্লাহ ভুইয়া হারুন, হাতিরঝিল পূর্ব সেক্রেটারি খন্দকার রুহুল আমিন প্রমুখ। মতবিনিময় সভা শেষে প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে ১ লাখ করে টাকা দেন মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
এএএম/এসআইটি/এএসএম