ডিবি হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়ককে মুক্তি দিন: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৫৮ এএম, ৩০ জুলাই ২০২৪
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। ছবি: জিএম কাদেরের ফেসবুক থেকে নেওয়া

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের। সোমবার (২৯ জুলাই) এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান তিনি।

জিএম কাদের বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে আটক ছয় ছাত্র নেতা মো. নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুমকে মুক্তি দিতে হবে।

বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র, এখানে দেশের মালিক জনগণ। দেশের সকল ক্ষমতার মালিকও জনগণ। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। অহিংস প্রতিবাদকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করার বা সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ব্যবহার করে সংহিসভাবে মোকাবিলা করার অধিকার সরকার বা সরকারি দলের নেই। সে কারণে শুধু ছাত্র নয়... কোনো আন্দোলন দমাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য গুলি করতে পারে না।

জিএম কাদের বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে বেশ কয়েকদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের পরিবার ও স্বজনদের সাথে দেখা পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, এজন্য স্বজনদের মাঝে মারাত্মক উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। আবার, ডিবি হেফাজতে থেকেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে তারা। এদিকে, সাধারণ ছাত্ররা মনে করছে, গোয়েন্দা সংস্থা বলপূর্বক এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের বাধ্য করছে। এ কারণে সাধারণ ছাত্ররা আটক সমন্বয়কদের সেই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে। দিনের পর দিন সাধারণ ছাত্রদের নিরাপত্তার নামে তাদের ও তাদের পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখাকে আমরা আইনসম্মত মনে করি না।

বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, বৈষম্ বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়েছে। হেলিকপ্টার এবং বহুতল বিশিষ্ট বাড়ির ছাদের ওপর থেকে এবং ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। যে কারণে, বাবা-মায়ের কোলের মধ্যে ও ঘরের মাঝে খেলারত অবস্থায় শিশু নিহত হয়েছে। আবার, ঘরের ভেতরে কাজ করতে করতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গৃহিণী নিহত হয়েছেন বলেও গণমাধ্যমে এসেছে। একইভাবে অসংখ্য নিরীহ পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। প্রশ্ন হলো, এই ধরনের গুলি বর্ষণের উদ্দেশ্য কী ছিলো? সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে এই ধরনের প্রক্রিয়ায় কি সন্ত্রাসী চিহ্নিত করা সম্ভব ছিলো? বাবার কোলে শিশু, রান্নাঘরে গৃহিণী ও নিরীহ পথচারী... তারা কি সন্ত্রাসী? এই মৃত্যুর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।

জিএম কাদের বলেন, আন্দোলন দমাতে দেদারছে গ্রেফতার করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, গ্রেফতার বাণিজ্য চালাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। সাধারণ মানুষের মাঝে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। দেশের মানুষ যেনো আতঙ্কের রাজ্যের বাসিন্দা। প্রতিটি আহত, নিহত এবং সহিংসতার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে আমরা বিচার চাচ্ছি।

এমএমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।