কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সরকার দ্বিমুখী অবস্থানে: ফখরুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৯ পিএম, ২৮ জুলাই ২০২৪
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর/ফাইল ছবি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে নিয়ে সরকার দ্বিমুখী নীতি অবলম্বন করছে, একদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে নিরীহ ছাত্র-ছাত্রী এবং কোটা সংস্কারের নেতাদের নির্যাতন করা হবে না, অন্যদিকে প্রতিনিয়ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার অব্যাহত রাখা হয়েছে।

রোববার (২৮ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্রতিনিয়ত গ্রেফতার ও নির্যাতন চালাচ্ছে অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যারা প্রকাশ্যে সাধারণ ছাত্রদের বুকে গুলি চালিয়ে হত্যা করলো তাদের একজনকেও গ্রেফতার করা হয়নি, বরঞ্চ তাদের নিয়ে সরকারপ্রধান মায়া কান্না করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সারা দেশে ৯ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে সাবেক এমপি, মন্ত্রীসহ বিএনপির সিনিয়র নেতা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাদের নিষিদ্ধ সন্ত্রাসীদের মতো পাঁচ/সাতদিন করে রিমান্ডে নির্যাতন করা হচ্ছে। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাইফুল আলম নীরব, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনুসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার এবং রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গ্রেফতারদের নির্মমভাবে চোখ ও হাত-পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায়ের নিরন্তর চেষ্টা চলছে। তারা আদালতকে অবহিত করেছে, তার পরেও আদালত সরকার প্রধানের ইশারায় তাদের রিমান্ড অব্যাহত রেখেছে। তাদের শারীরিক সুস্থতা নিয়ে দেশবাসী শঙ্কিত, তাদের ওপর চলমান নির্যাতনে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু হয়ে গেলে এর দায় সরকার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেই নিতে হবে। জেলখানার ভেতরেও নেতা কর্মীদের নির্মম নির্যাতনের মধ্যে রাখা হয়েছে যা অত্যন্ত অমানবিক এবং আইনের পরিপন্থি। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন মানবতাবিরোধী অপরাধ।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশটা আজকে ত্রাসের রাজ্যে পরিণত করেছে। দিন দিন নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদের হত্যার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সরকার যতই ছলচাতুরি করুক না কেন গণদাবির কাছে পদত্যাগ করতেই হবে। মানুষ যখন প্রতিবাদ শুরু করেছে এই প্রতিবাদের ধারা অব্যাহত থাকবে। সরকার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছে, গুলি করে মানুষকে হত্যা করা হয় নাই অথচ অথচ শিশু আহাদ, সামীর থেকে শুরু করে বয়োজ্যেষ্ঠ পথচারী সবাই গুলিতে নিহত হয়েছেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি হত্যার সংখ্যা অনেক লম্বা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি স্থাপনাগুলোর বর্ণনা দেওয়া হলেও কোটাবিরোধী আন্দোলনে মৃত্যুর তালিকা এখন পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। মৃত্যুকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে না। তাছাড়া সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এবং সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার বাণিজ্য অব্যাহত রাখা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে এ পর্যন্ত গ্রেফতার বিএনপি ও বিরোধীদলের সব নেতা এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, রিমান্ডে নির্যাতন বন্ধ এবং অবিলম্বে সবার নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানান।

জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক লেঃ (অব:) ড. হারুনুর রশিদ ভুইয়াকে জনসমক্ষে হাজির করারও আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ১০নং ধানবান্ধি ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সঞ্জিব ভুইয়ার আত্মার শান্তি কামনা করেন।

কেএইচ/এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।