ফখরুলের ঐক্যের আহ্বান স্বাধীনতার মূল্যবোধবিরোধী: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জাতীয় ঐক্যের আহ্বান হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার মূল্যবোধবিরোধী এবং দেশবিরোধী অপশক্তির ঐক্য।
শনিবার (২৭ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যের ডাক দিয়ে বিএনপি আবার প্রমাণ করলো জামায়াত-বিএনপির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য এবং স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিই বিএনপির দোসর। এই ঐক্যের ডাক এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য মিথ্যা, বানোয়াট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তার এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান তিনি।
তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সন্ত্রাস, সহিংসতা ও হত্যার দায় এড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রবঞ্চনামূলক অপকৌশল গ্রহণ করেছেন। বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা সশস্ত্র রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ ও পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড নজিরবিহীন এবং তা জনসাধারণের মনে ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। বিএনপি-জামায়াত ও তার দোসররা কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না। তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী হত্যাযজ্ঞ চালানোর গভীর চক্রান্ত নিয়ে মাঠে নেমেছিল।
আরও পড়ুন:
- কোটা আন্দোলনে এক নেতা নুরকে চার লাখ টাকা দেন: ডিবিপ্রধান
- তিন সমন্বয়ককে হেফাজতে নেওয়ার কারণ জানালেন ডিবিপ্রধান
- দেশকে আগের মতো ভিক্ষুকের জাতি বানাতেই এ সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী
সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ধৈর্য ও সংযম নিয়ে এই হত্যাযজ্ঞ এবং ধ্বংসযজ্ঞ মোকাবিলা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, সরকার কোনোভাবেই চায়নি কারও প্রাণহানি ঘটুক। বিপরীত দিকে বিএনপি-জায়ামাতের ছাত্রদল-শিবিরের টার্গেটই ছিল লাশের রাজনীতি। সশস্ত্র ক্যাডারদের মোকাবিলার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নিরস্ত্র নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থায় ছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াতের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকাণ্ড মিশনে সারাদেশ থেকে ঢাকায় এসে জড়ো হয়েছিল। এই সন্ত্রাসীরা বিটিভি ভবন, সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, বিআরটিএ ভবন, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ভবন, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, থানা ও পুলিশ বক্সসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে এবং লুটপাট করেছে। হত্যা-গুপ্তহত্যা ও নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে তারা আবার ছড়িয়ে পড়েছে। এই সব সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় আনার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশি তদন্ত চলমান। সংঘটিত কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড তদন্তের বাইরে থাকবে না।
কাদের আরও বলেন, এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণকে মির্জা ফখরুল ইসলাম গণগ্রেফতার হিসেবে অভিহিত করে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার চেষ্টা করছে। এখানে কোনো গণগ্রেফতার করা হচ্ছে না। নিরপরাধ কেউ কোনো প্রকার হয়রানির শিকার হবে না। সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা আইনের সর্বোচ্চ সুষ্ঠু প্রয়োগ করবো। কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এসইউজে/এসএনআর/এএসএম