কোটা আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্ত চায় বিএনপি
কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে হতাহতের ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত চায় বিএনপি। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, শত শত নিরীহ ছাত্রছাত্রীকে সরকারি দলের সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হতাহত করলো অথচ সরকারের ইশারায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি শুধু ছয়জনের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করবে। এটি সুকৌশলে পুরো হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়ারই নামান্তর।
মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ পুরো ঘটনা ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করে। নইলে ব্যর্থতার সব দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত বলে জনগণ মনে করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস আড়াল করতে এবং উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপকৌশল হিসেবে বিএনপির নির্দোষ নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার কিংবা বাসায় না পেয়ে তাদের সন্তান বা বাসার সদস্যদের গ্রেফতার ও অশালীন আচরণসহ বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার মিথ্যা অভিযোগে ঢালাওভাবে বিএনপি ও বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপর সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্য দোষারোপ করছে। যদি তা-ই হয়, তাহলে তাদের ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়নি কেন? এটিই জনগণের প্রশ্ন। এতে প্রমাণিত হয় যে, বিএনপি কিংবা বিরোধীদলের কেউই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। আমরা এহেন ঘটনার নিন্দা জানাই।
বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার তার নিজস্ব বাহিনী দিয়ে রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোর ক্ষতিসাধন করে দুর্নীতির পথ প্রশস্ত করেছে এবং জনগণ ও বিশ্ববাসীর কাছে বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলোকে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিএনপি ও বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে তাদের নির্যাতনের পথ তৈরি হয়েছে, যা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে বোঝা যায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, নিহত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক দুই লাখ টাকা নগদ ও আট লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র করে দেওয়া হয়েছে। অথচ শত শত নিরীহ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হলো, যা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। যারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি নিহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করছি।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, যুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং, সাবেক যুবদল নেতা এসএম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সাদ মোর্শেদ হোসেন পাপ্পা শিকদার এবং ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর ছেলে সানিয়াত ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবের ভাই বিপুল হোসেনসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
কেএইচ/এমকেআর/জেআইএম