কোটা বাতিল বা বহাল নয় সংস্কারই জরুরি: জাসদ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১০ পিএম, ০৯ জুলাই ২০২৪

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা বাতিল বা বহাল নয় সংস্কারই জরুরি বলে অভিমত দিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য বৈষম্যমূলক পেনশন ব্যবস্থার পরিবর্তে সর্বজননী পেনশন চালুর দাবি জানিয়েছে দলটি।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে একদল ছাত্র-ছাত্রীর কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সরকার কর্তৃক কোটা ব্যবস্থা সংস্কার না করে পুরোপুরি বাতিল করে দেওয়া আবেগপ্রসূত ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।

আবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের রায়ের পর একদল ছাত্র-ছাত্রীর মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবিতে তথাকথিত ‘বাংলা ব্লকেড’ আন্দোলন যে নিছক কোটা বাতিলের নিষ্পাপ আন্দোলন না তাও ইতোমধ্যেই তাদের কথাবার্তার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে- উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

এতে আরও বলা হয়েছে, আন্দোলনকারীদের কথাবার্তায় মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অশ্রদ্ধা নগ্নভাবেই প্রকাশিত হয়েছে। আন্দোলনকারীদের পিছনে চিন্থিত স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিসহ কারা রাজনৈতিক ইন্ধন যোগাচ্ছে সেটাও প্রকাশিত হয়েছে।

জাসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা শুধু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানই নন, তারা ও তাদের পরিবারগুলো মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী এবং পরবর্তীকালে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সরকারগুলো দ্বারা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্বাধীনতার পর সব সরকার যৌক্তিক কারণে কোটা পদ্ধতি বহাল রেখেছে। সমাজে বৈষম্য কমানোর দায়িত্ব থেকেই সরকার এটা করেছে।

তারা আরও বলেন, কোটা পদ্ধতি এক সময় অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে, তুলে দিতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা পরিবারে কত প্রজন্ম পর্যন্ত, কীভাবে এ সুবিধা লাভ করবে তারও পদ্ধতি ও সময় কাঠামো নির্ধারণ জরুরি।

জাসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় ভাগে অনুচ্ছেদ ২৯(৩)(ক) তে বলা হয়েছে ‘নাগরিকদের যে কোনো অনগ্রসর অংশ যাহাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করিতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে তাঁহাদের অনুকূলে বিশেষ বিধান—প্রণয়ন করা হইতে, রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।’

সংবিধানের আলোকে কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে নারী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীগুলো এবং জাতির জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা, পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য যৌক্তিক পরিমাণ কোটা সংরক্ষণ করে কোটা ব্যবস্থার ব্যবস্থা যৌক্তিকিকরণ করতে হবে- বলে মত দেন তারা।

জাসদ নেতৃবৃন্দ, কোটা সংস্কারের লক্ষে একটি ‘কোট সংস্কার কমিশন’ গঠন করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। ‘কোট সংস্কার কমিশন’ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে দ্রুততার সঙ্গে একটি রির্পোট সরকারে কাছে জমা দেবে এবং তার ভিত্তিতে কোটা সংস্কারের কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। সে পর্যন্ত আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীসহ সব পক্ষকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়েছে জাসদ।

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার আর এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য বৈষম্যমূলক পেনশন ব্যবস্থার পরিবর্তে সর্বজননী পেনশন চালুর দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, পেনশন ব্যবস্থা জনপ্রশাসনের জন্য এক রকম আর বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সেক্টর করপোরেশনগুলোর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আরেক রকম পেনশন স্কিমের বিধান সম্বলিত বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিম বাতিল করে একটি সার্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা উচিত।

এমএএস/এসইউজে/জেএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।