সরকার সবদিক থেকে বিপদে: মান্না
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সরকার সমস্ত দিকে আটকে যাচ্ছে। এখন যত তাড়াতাড়ি এদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে ওঠে ততই ভালো। সরকার তাড়াতাড়ি বিদায় হবে। এই সরকার সবদিক থেকে বিপদে আছে। সংকটের মধ্যে পড়েছে। এখান থেকে তাদের উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে যদি তারা পদত্যাগ করে, একটা অন্তবর্তী সরকার দিয়ে নির্বাচন দেয়। আর যদি তারা না দেয়, জেদাজেদি করে তাহলে জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, মানুষের জীবন যেভাবে দুর্বিষহ হচ্ছে তাহলে আন্দোলন লড়াই ঠেকানো কষ্টকর হবে।
রোববার (২৬ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত আব্দুস সালামের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘জনগণের মুক্তির সংগ্রাম এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লড়াই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
মান্না বলেন, আমাদের সরকার প্রধান অবিরাম অনর্গলভাবে বলে চলেছেন ‘আমরাতো নির্বাচিত সরকার, আমাদের কী অপরাধ? কেন বদলাতে চাচ্ছে?’ উনি কী এতই অসহায় মানুষ যে উনি বুঝতে পারছেন আমরা কেন তাদের পরিবর্তন চাই। এটা না বোঝার কী আছে? উনি বুঝতে পারেন কোন এক সাদা চামড়ার লোক প্রস্তাব দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম মিয়ানমারের অংশ নিয়ে খ্রিস্টান রাষ্ট্র করতে চায়। এই সাদা চামড়ার লোকের বাড়ি কোথায়? এর নাম কি? উনি কী কোন ব্যবসায়ী, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসব কথা বলেছেন? আর এখন তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আমাদের এসব কথা বলছেন। বগি-চগি মানে রাজনীতি না। কথা স্পষ্ট করে বলতে হবে। যদি এরকম কোন রাষ্ট্র থাকে, সেটা কোন রাষ্ট্র? তারা কী রাষ্ট্রীয় বা সরকারিভাবে আমাদের সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে? আমরা এর জবাব চাই। কে আপনাকে এটা বলল, কোন সাদা চামড়া? ও কী আমেরিকান, কানাডিয়ান, নাকি ইউরোপীয় কোন দেশ নাকি জাপানিজ ? সবগুলোই তো সাদা চামড়া।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ২০১৮ সালের রাতের ভোটের কারচুপির সভাপতিত্ব করেছেন জেনারেল আজিজ। না হলে তিনি কীভাবে বলেন এই ভোট (২০১৮ নির্বাচন) সবচেয়ে ভালো নির্বাচন হয়েছে। এরচেয়ে ভালো নির্বাচন তিনি বাংলাদেশে দেখেননি। জেনারেল আজিজ, বেনজীর আহমেদের মতো আরও আমলাদের নাম হয়তো সামনে আসবে। যারা বিভিন্ন জায়গায় বসে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়েছে এরকম একটা শাসন ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে। প্রত্যেকটা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা বিচার বিভাগ যারা এরকম একটা শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করেছে, সব মিলিয়েই যেটা বানানো হয়েছে তাতে এই রাষ্ট্র ব্যবস্থার মধ্যে আর সরকার পরিবর্তন সম্ভব না। সরকার পরিবর্তন করতে হলে আমাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে।
সাকি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন পরিষ্কার বুঝতে পারছে যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে এখন প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বর্তমান সরকার যেভাবে এই রাষ্ট্রটাকে একটা দলীয় বিষয়ে পরিণত করেছে, জনগণকে যেভাবে বিভাজিত করেছে এবং স্রেফ গদি রক্ষার জন্য আজকে পররাষ্ট্রনীতি তৈরি করেছে। তাতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণমুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
এনএস/জেএইচ/জিকেএস