স্ত্রী-সন্তানদের কাছে যাওয়া হলো না রাইডার রিপনের
মো. রিপন হাওলাদার (৩৮) রাইড শেয়ার করতেন। ঈদের সময় কিছু বাড়তি উপার্জনের আশায় বাড়ি যাননি। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত মোটরসাইকেল চালিয়ে ঈদের দিন রওনা করেছিলেন বাড়ির পথে। সঙ্গে ছিল প্রিয় সন্তানদের জন্য কেনা ঈদের নতুন পোশাক। কিন্তু কে জানত, পথেই ফুরোবে তার জীবনের বেলা। আর ফেরা হবে না বাড়ি। সদরঘাটেই নিভে যাবে তার জীবন প্রদীপ।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ঈদুল ফিতরের দিন দুপুরের দিকে সদরঘাটে তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে নিহত পাঁচজনের মধ্যে রিপন হাওলাদারও রয়েছেন।
রিপনের ভায়রা মাহবুব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা কিছুই বিশ্বাস করতে পারছি না। সকালে আমাদের সবার বাসায় এসেছিলেন রিপন। আমরা সবাই নতুন বাজার থাকি। দুপুরের পর তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলেন।
মাহবুব আরও বলেন, তিনি যে মোটরসাইকেলটি দিয়ে রাইড শেয়ার করেন, সেটিও সঙ্গে নিয়েছিলেন। সঙ্গে এক ভাতিজিও ছিলেন। ভাতিজি ভালো আছে।
- আরও পড়ুন
ঈদের দিন বাড়ি ফেরা হলো না একটি পরিবারের
ঈদের বিকেলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকারে আগুন - ঈদের উৎসব রূপ নিলো বিষাদে, সদরঘাটে ঝরলো ৫ প্রাণ
রিপনের আত্মীয়-স্বজনরা আরও জানান, রিপনের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর শিয়ালদিতে। শ্বশুরবাড়ি বরগুনার বেতাগীতে। বর্তমানে স্ত্রী-সন্তানরা শ্বশুর বাড়িতে রয়েছেন। কথা ছিল শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নিজের বাড়িতে যাবেন।
রিপন হাওলাদারের দুই মেয়ে। এক মেয়ের বয়স ১২, আরেক মেয়ের ১০ বছর। বাড়িতে রিপন মিয়ার বাবা আছেন, তবে মা মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর সদরঘাটে লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে পাঁচ যাত্রী নিহত হন। ঈদের দিন বাড়ি ফিরতে তারা লঞ্চ টার্মিনালে এসেছিলেন বলে জানা গেছে। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের তিনজন রয়েছেন। তারা হলেন- মো. বেলাল (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬) ও তাদের শিশুসন্তান মাইসা (৩)। তাদের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায়। নিহত অন্য দুজনের মধ্যে পটুয়াখালীর রিপন হাওলাদার ছাড়াও রয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রবিউল।
আরএমএম/এমকেআর/এএসএম