‘সংসদ ব্যবসায়ীদের দখলে, সিন্ডিকেট ভাঙবে কে’
‘সরকার মূলত দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। নইলে এভাবে একটি রাষ্ট্র দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না। বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হচ্ছে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। সংসদই ব্যবসায়ীদের দখলে, কে সিন্ডিকেট ভাঙবে!’
রমজান ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ে জাগো নিউজের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মহাজোট সরকারের অন্যতম শরিক নেতা রাশেদ খান মেনন।
তিনি বলেন, ‘সরকারের সফলতা চোখে পড়ার মতো। উন্নয়ন হচ্ছে বলেই সরকারের প্রতি মানুষ আস্থা রাখছে। খাদ্যনিরাপত্তায় সরকার যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো অবস্থানে। এ নিয়ে দ্বিমত থাকার কথা নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, সাধারণ মানুষ সেই সফলতার সুবিধা পাচ্ছে কি না?
উন্নয়নের বণ্টন নিয়েই মূলত প্রশ্ন। আমরা সরকারের অনেকের কথা শুনি। অভিযান হয়। কিন্তু সমাধান হয় না। এসব অভিযানে আসলে সমাধান হবে না। লোক দেখানো অভিযান সত্যিকার সমাধান দিতে পারে না।’
‘মুসলমান সমাজে রোজা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। সংযমেরও সময়। অথচ এই রোজা উপলক্ষেই বাজার বেসামাল হয়ে পড়ছে। অন্য রাষ্ট্রে এমন পরিস্থিতি দেখবেন না। উৎসব বা দিবস উপলক্ষে অনেক দেশে দ্রব্যের দাম কমানো হয়। আর এখানে দাম আকাশচুম্বি হয়।’
আরও পড়ুন
সংসদ ব্যবসায়ীদের দখলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগেও এমন হাল ছিল না সংসদে। দিন যাচ্ছে, সংসদে ব্যবসায়ীর হার বাড়ছে। আমি সংসদেও শঙ্কা প্রকাশ করছি। এমন সংসদ আসলে সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার কথা নয়। দ্রব্যমূল্য কারা কমাবে? ব্যবসায়ীরা। তারাই যদি সব দখলে নেয় কে চাপ তৈরি করবে?
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগেও এমন হাল ছিল না সংসদে। দিন যাচ্ছে, সংসদে ব্যবসায়ীর হার বাড়ছে। আমি সংসদেও শঙ্কা প্রকাশ করছি। এমন সংসদ আসলে সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার কথা নয়। দ্রব্যমূল্য কারা কমাবে? ব্যবসায়ীরা। তারাই যদি সব দখলে নেয় কে চাপ তৈরি করবে?
আসলে সরকার কোনো ব্যবস্থা নিতে চাইলে তার ঘনিষ্ঠদের ব্যাপারে আগে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারা কীভাবে সিন্ডিকেট তৈরি করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করছে তা সরকারের জানা। ব্যবস্থা নিতে পারছে না, কারণ এ সিন্ডিকেট সরকারের চেয়ে শক্তিশালী। তবে আমি মনে করি নিয়ন্ত্রণ করা বা সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলা সরকারের পক্ষে সম্ভব। আন্তরিকতার ব্যাপার। কতিপয় ব্যবসায়ীর কাছে মানুষ এভাবে জিম্মি হতে পারে না।’
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে সরকার ব্যর্থ কি না? জবাবে বলেন, ‘অবশ্যই সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে ব্যর্থ। এ ব্যাপারে সংসদে দাঁড়িয়ে আমি বারবার বলেছি। আমরা দলের পক্ষ থেকে অবস্থান নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি। যুবমৈত্রী গতকালও বিক্ষোভ করেছে। জোটে আছি বলেই সরকারের সব ব্যর্থতার দায় আমরা নিতে পারি না। সরকার সব জানার পরেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং ক্ষেত্রবিশেষে সুবিধা করে দিচ্ছে। মধ্যস্বত্বভোগীরা লুটেপুটে খাচ্ছে। কৃষক, শ্রমিক, ভোক্তা তাদের কাছে জিম্মি। তদন্তসাপেক্ষে দু-একটি ব্যবস্থা নিলে তো বাজার লাগামহীন হওয়ার কথা ছিল না।’
সামনে কী অপেক্ষা করছে জানতে চাইলে বলেন, ‘সামনের দিন খুব ভালো যাবে তা বলা যাবে না। সবাই ব্যবসায়ীর মন নিয়ে রাজনীতি করছি। সেবার ব্রত নিয়ে আসলে কেউ আর রাজনীতি করছি না। সমস্যা সবই জানা। বিভিন্ন সংস্থা, বডি রয়েছে। তারা মনিটরিং করার কথা। কিন্তু রক্ষক হয়ে ভক্ষক হচ্ছে। জনদায় নিয়ে সরকারের উচিত এখনই ব্যবস্থা নেওয়া। সব ভেঙে পড়লে আর হয়তো উপায় থাকবে না।’
এএসএস/এএসএ/এমএস