‘সংরক্ষিত’ কোটাতেই আটকা তৃণমূলের নারীদের রাজনীতি
কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তানিয়া সুলতানা হ্যাপী। একটি রাজনৈতিক পরিবারের তৃণমূলে রাজনীতি করে উঠে আসা এ নেত্রী ভোটের মাঠে হার মেনেছেন পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কাছে। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ভোট করেও নানান বাধার মুখে হারতে হয়েছে তাকে।
তানিয়া সুলতানা হ্যাপী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি উপজেলা নির্বাচন করেছিলাম। সেখানে আমাকে ষড়যন্ত্র করে হারানো হয়েছে। সেটা মোটামুটি সবাই জানে। আদালতে যখন চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছিলাম সেখানে আমার পক্ষে আদালত রায় দেওয়ার পরও আমাকে প্রশাসনের মাধ্যমে হারানো হয়েছে। এতে বোঝা যায়, একজন নারী হিসেবে আমাকে কী রকম প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে।’
‘যেহেতু আমি পলিটিক্যাল ফ্যামিলির মেয়ে, আমার বাবা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। সে কারণে আমি উৎসাহী হয়ে রাজনীতি করি। আমার মতো মানুষের যখন এ ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। পুরুষতান্ত্রিক হীনমন্যতা একটি বিষয়, আরেকটি হলো অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ। আমি দুটি ক্ষেত্রেই চরম চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। প্রশাসন একটা যন্ত্র, সেটাকে দলের মানুষই কাজে লাগিয়েছে। দলের একটা অংশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে আমাকে হারিয়েছে।’
তার মতে, তৃণমূলে যারা রাজনীতি করেন তাদের জন্য চ্যালেঞ্জটা আরও বেশি। কারণ, তাকে পারিবারিক বাধা অতিক্রম করতে হয়নি। এটি তার জন্য সহায়ক হয়েছে। কিন্তু এ সুযোগটি সবাই পায় না। ফলে অনেক ধরনের বাধার মুখে পড়তে হয় তৃণমূলে রাজনীতি করা নারীদের।
আরও পড়ুন>> কাদের-চুন্নুকে পদ থেকে সরানো হয়েছে, বাদ দেওয়া হয়নি: রওশন
সংসদ সচিবালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সরাসরি নির্বাচিত ৩০০ এমপির মধ্যে নারী ২০ জন। একাদশ জাতীয় সংসদে এ সংখ্যা ছিল ২৬ জন। ফলে গতবারের তুলনায় এবার সংখ্যায় কমেছে নারী এমপির সংখ্যা। তবে সংরক্ষিত আসনের ৫০ জন যুক্ত করলে এবার সংসদে নারী নেতৃত্ব দাঁড়াবে ৭০ জনে। এর আগে সপ্তম সংসদে আটজন, অষ্টম সংসদে সাতজন, নবম সংসদে ২১ জন এবং দশম সংসদে ৩০০ আসনের মধ্যে নারী এমপি ছিলেন ২৩ জন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সরাসরি নির্বাচিত ৩০০ এমপির মধ্যে নারী ২০ জন। একাদশ জাতীয় সংসদে এ সংখ্যা ছিল ২৬ জন। ফলে গতবারের তুলনায় এবার সংখ্যায় কমেছে নারী এমপির সংখ্যা
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র জাগো নিউজকে জানিয়েছে, দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মধ্যে মেয়র পদে নারী রয়েছেন দুজন। এসব সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড সদস্যের ৪৭৬টি পদের বিপরীতে নারী রয়েছে মাত্র দুজন। তবে সংরক্ষিত সাধারণ ওয়ার্ডে ১৬০ জন নারী রয়েছে। জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে ৬১ জনের মধ্যে নারী মাত্র একজন।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, তৃণমূলের রাজনীতির মাধ্যমে উঠে আসা নেতৃত্বের প্রতিফলন ঘটে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে। দলীয় পদ পদবির রাজনীতির বাইরে এ দুই নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান যাচাই করে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যুক্ত হন অনেক তৃণমূল নেত্রী।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে ৪৯২ জনের মধ্যে নারী রয়েছেন ১৫ জন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৪৯২ জন, যেটি নারীদের জন্যই সংরক্ষিত। ফলে চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিলে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৫০৭ জন। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর চেয়ারম্যান পদে ৪ হাজার ৫৭১ জনের মধ্যে নারী ৪৫ জন। সংরক্ষিত সদস্য ১৩ হাজার ৭৩৭ জন। সার্বিকভাবে নারীদের জন্য সংরক্ষিত পদগুলো ছাড়া অন্য পদগুলোতে নারীদের নেতৃত্বের হার অনেকটাই কম।
আরও পড়ুন>> ৩৫ বছর বয়সী নারীদের ভ্রূণ হত্যার প্রবণতা বেশি
তৃণমূল পর্যায়ে নারী নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহেনা আক্তার রানু জাগো নিউজকে বলেন, আসলে রাজনীতিতে কেউ কাউকে জায়গা দিতে চায় না। যার যার জায়গাটা নিজেকেই তৈরি করে নিতে হয়। নির্বাচন কমিশনের গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী দলের সব পর্যায়ে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্বের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে সেটি বিবেচনায় রেখেই দল এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি নারীবান্ধব দল এবং নারী কর্মীকে বিএনপি অনেক সম্মান দেয়, মূল্যায়নের চেষ্টা করে। ধীরে ধীরে এটার চর্চা হচ্ছে। আমি আশা করবো আগামীতে আরও বেশি নারী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হবে।
উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে ৪৯২ জনের মধ্যে নারী ১৫ জন। আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন ৪৯২ জন, যেটি নারীদের জন্যই সংরক্ষিত। ফলে চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিলে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৫০৭ জন। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর চেয়ারম্যান পদে ৪ হাজার ৫৭১ জনের মধ্যে নারী ৪৫ জন
নিশ্চিত হয়নি ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব
২০০৮ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) নিবন্ধনের নিয়ম চালুর পাশাপাশি দলীয় গঠনতন্ত্র সংশোধনের শর্ত দিয়ে ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেয়। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ সংশোধন করে ২০০৮-এ বিধান করা হয়, ২০২০ সালের মধ্যে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের প্রতিটি স্তরের কমিটিতে এক-তৃতীয়াংশ নারী সদস্য রাখতে হবে। তবে শর্ত অনুযায়ী সে সময়ের মধ্যে সব স্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। পরে নতুন করে ২০৩০ সালের মধ্যে রাজনৈতিক দলের সব কমিটিতে এক-তৃতীয়াংশ নারীর অন্তর্ভুক্তকরণেও বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে। সেটির বাস্তবায়নও তেমন দেখা যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমরা প্রতি বছরই তাদের অগ্রগতি জানতে চাই। দলগুলো মৌখিকভাবে অগ্রগতি হয়েছে জানালেও তার সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেন না। তবে যেহেতু দলগুলো এ শর্ত মেনে নিবন্ধন নিয়েছে, সুতরাং তাদের এটি বাস্তবায়ন করতে হবে।
২০২১ সালের জুলাইয়ে ইসিকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপিতে ১৫ শতাংশ, গণফ্রন্টের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ, জাতীয় পার্টি-জেপিতে ১৬ শতাংশ, সিপিবিতে ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ ও জাসদে ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ, এনপিপির ২০ শতাংশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ৬ শতাংশ, গণতন্ত্রী পার্টিতে ১৫ শতাংশ ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টে ১ শতাংশ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলিডিপি) কমিটিতে ২২ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নারী নেতৃত্ব রয়েছে ২৪ শতাংশেরও কম।
আরও পড়ুন>> মনোনয়নের প্রার্থী সংখ্যাই প্রমাণ করে নারী জাগরণ ঘটেছে
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেগম শামসুন নাহার জাগো নিউজকে বলেন, আমি গ্রামের মেয়ে। আমাকে ধরে রাখেনি আমার পরিবার। আমি এখানে চলে এসেছি, আমার নিজের উদ্যোগে। তৃণমূলের রাজনীতিতে নারীদের কিছু সমস্যা আছে। এগুলো ধীরে ধীরে উৎরে উঠবে। ভোটে নারীরা যে বাধার মুখে পড়েন সেক্ষেত্রে নিজের বাইরে একজন নারীকে তো নির্বাচিত হতে দিতে চাইবেন না, এটাই স্বাভাবিক। যতই আমি এগিয়ে যাই, পুরুষদের সহায়তা ছাড়া আমরা পরিপূর্ণ সফল হবো না। ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্বের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে সেটি পুরোপুরি করা যায়নি এখনো। আরপিওতে অনেক কিছুই আছে। সেটা করা সম্ভব হয়নি। একবারেই সম্ভব হবে না। নারীদের জন্য সর্বত্রই চ্যালেঞ্জ।
নির্বাচন কমিশনের গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী দলের প্রতিটা পর্যায়ে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্বের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে বিএনপিতে তার অগ্রগতি কতটুকু হয়েছে? জানতে চাইলে দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এত দিন শুধু আন্দোলন, আন্দোলন আর আন্দোলনের মধ্যেই আমরা আছি। এটা আমাদের সব সময় মাথায় আছে। ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্বের বিষয় ধীরে ধীরে পূরণ হচ্ছে এবং হবেও। উপজেলা এবং জেলা পর্যায়েও এটি নিয়ে কাজ হচ্ছে। অনেক জায়গায় কার্যকর হয়েছে। কাজেই ওটা আমাদের হচ্ছে।
ইসলামী দলে নারী নেতৃত্বের চর্চা সীমিত
২০২০ সালের মধ্যে সব দলকে সব স্তরে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করার শর্তারোপ করে বিষয়টি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে যুক্ত করা হলে শুরু থেকেই এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল একাধিক ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল। তারা এ শর্ত বাতিলের দাবি করে আসছে। সর্বশেষ কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন আয়োজিত সংলাপেও একাধিক ধর্মভিত্তিক দল নিবন্ধনের এ ধারা বাতিলের সুপারিশ করেছে।
এতদিন শুধু আন্দোলন, আন্দোলন আর আন্দোলনের মধ্যেই আমরা আছি। এটা আমাদের সব সময় মাথায় আছে। ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্বের বিষয় ধীরে ধীরে পূরণ হচ্ছে এবং হবেও। উপজেলা এবং জেলা পর্যায়েও এটি নিয়ে কাজ হচ্ছে- সেলিমা রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য
ইসলামী দলগুলোতে নারী নেতৃত্ব অনেকটাই সীমিত। ধর্মীয় বিবেচনায় এক্ষেত্রে কিছুটা বাধ্যবাধকতা মেনে চলে দলগুলো। তবে ইসির শর্তের কথা মাথায় রেখে নারীদের নেতৃত্বের জন্য ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে কিছু দল।
এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের নারীদের ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম করে দিয়েছি, তারা একসঙ্গে বসেন। আমাদের নারী যে সংগঠনটা আছে তারা নিজেরাই ভিন্নভাবে কাজ করেন। আমাদের সঙ্গে সরাসরি তারা কাজ করেন না। যেহেতু নির্বাচন কমিশন এটা বাধ্যতামূলকভাবে করেছে, সেজন্য আমাদের এটি করতে হচ্ছে। আমরা যারা পুরুষরা এখানে দায়িত্ব পালন করি, আমাদের স্ত্রীরা নারীদের প্ল্যাটফর্মে কমান্ড দেন। আমাদের ম্যাসেজটা তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের কাছে তারা পৌঁছে দেন। নারীদের ক্ষেত্রে আমরা কেন্দ্রীয় কাউন্সিল, থানা কাউন্সিলের সিস্টেম করিনি। ইসলাম যতটুকু গ্রহণ করে, আমরা তার আওতায় সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছি।
সেক্ষেত্রে দলের নারীদের জনপ্রতিনিধি করার জন্য নির্বাচনে সমর্থন দেওয়া হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তাদের কোনো নির্বাচনের জন্য অনুমতি দিচ্ছি না। নারীদের নেতৃত্ব বলতে যেটি বোঝায়, আমাদের দেশের সংসদে নেতৃত্ব দেওয়া, বিভিন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়া, সেটির আমরা সুযোগ রাখিনি। কিন্তু যেহেতু ইসির বাধ্যবাধকতা আছে, সেটি থেকে যেন বাঁচা যায় এবং ইসলাম যেন আমাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটি আমরা লক্ষ্য রাখি। ইসলাম যতটুকু গ্রহণ করে ততটুকুই আমরা করছি। মূল কথা নারীদের নেতৃত্ব নারীরা দিতে পারেন।
দেশের নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) কার্যকরী সভাপতি পদে আমেনা আহমেদ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের বেগম জুবেদা কাদের চৌধুরী সভাপতির দায়িত্বে আছেন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন শিরীন আখতার। এছাড়া কিছু দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাড়ছে নারীদের সংখ্যা।
জাতীয় পার্টির যুগ্ম বিভাগীয় সম্পাদক মাহমুদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকার দোহারে সালমান এফ রহমানের মতো শক্ত প্রার্থীর সঙ্গে আমাদের দলের সালমা ইসলাম ব্যাপক লড়াই করেছেন। তিনি কিন্তু সেখানে নারীদের অবস্থান অনেকটা প্রমাণ করেছেন। এরকম উদাহরণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে আছে, কিন্তু ব্যাপকভাবে নেই। আমাদের অনেক তৃণমূলে রাজনীতি করা নারী অভিযোগ করেন যে তাদের বাধা দেওয়া হয়। নির্বাচনে অনেক নারী প্রার্থী ছিলেন। তারাও নানান অভিযোগ আমাদের কাছে করেছেন। আমরা সেটি নিয়ে তেমন কিছু করতে পারি না। তবে দলের বিভিন্ন স্তরে পদ দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা তেমন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ি না। আমাদের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক ফোরামে বেশ কয়েকজন নারী আছেন। আমাদের কমিটিতে অনেক নারী আছেন, সেক্ষেত্রে তাদের পদ দিতে কেউ বাধা সেভাবে দেয় না। ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব আশা করি ২০৩০ সালের মধ্যে নিশ্চিত করতে পারবো, কিন্তু একটু কঠিন হয়ে যাবে।
উইমেন্স পলিটিক্যাল লিডারসের (ডব্লিউপিএল) বাংলাদেশ অ্যাম্বাসেডর এবং জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আইনের মাধ্যমে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন। জাতীয় সংসদে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে নারীরা সংসদ সদস্য হিসেবে আসছেন। পাশাপাশি সংরক্ষিত মহিলা আসনে ৫০ জন সংসদ সদস্যও জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন।
আইএইচআর/এমএইচআর/জেআইএম