ঋণ বেড়েছে তথ্যমন্ত্রীর, আয় কমে ব্যবসার শেয়ার বেড়েছে স্ত্রীর
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১৫১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সরকারের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিগত পাঁচ বছরে মন্ত্রীর ঋণ বেড়েছে। আর বার্ষিক আয় কমলেও তার স্ত্রী নুরান ফাতেমার ব্যবসার শেয়ার বেড়েছে ১৫ লাখের বেশি।
চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর খরণদ্বীপ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত) আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বর্তমান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সময় নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় ড. হাছান মাহমুদ উল্লেখ করেন, ওই সময়ে বছরে সব মিলিয়ে আয় ছিল ২৬ লাখ ৬২ হাজার ৬০৩ টাকা। এর মধ্যে বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে আয় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা, ব্যাংক হিসাব থেকে আয় ৩৫৮ টাকা এবং সংসদ সদস্য হিসেবে ভাতা হিসেবে আয় ২৪ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫ টাকা।
আরও পুড়ন>> শাহজাহান ওমরের মনোনয়ন বৈধ, এমপি হারুনসহ ৬ জনের বাতিল
ওই সময় তার স্ত্রী নুরান ফাতেমার আয় ছিল ২৪ লাখ ৭৮ হাজার ২২৫ টাকা। এর মধ্যে বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে আয় ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ২০ লাখ ৫০ হাজার এবং শেয়ার সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত থেকে আয় ২ লাখ ৬০ হাজার ২২৫ টাকা।
একই সময়ে ড. হাছান মাহমুদের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ৫ লাখ টাকা হাতে নগদ ছিল। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বিভিন্ন কোম্পানির ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার ছিল ৬৪ হাজার। ৫৪ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪২ টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি ছিল। বিয়ের সময় উপহার পাওয়া সোনা ও মূল্যবান ধাতুর অলংকার ছিল ৫ ভরি। ছিল ৬০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং ৪৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র।
ওই সময়ে মন্ত্রিপত্নীর নগদ টাকা ছিল ৩০ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমানো টাকা ছিল ৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। মেসার্স বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস কোম্পানিজ নামে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ৯৬ হাজার এবং একই মূল্যের ৮২ লাখ শেয়ার ছিল। ওই সময়ে আনুমানিক ২০ লাখ টাকা মূল্যের একটি কার এবং বিয়ের সময়ে উপহার পাওয়া ৫০ তোলা সোনা ও মূল্যবান ধাতু ছিল।
গত ৩০ নভেম্বর জমা দেওয়া হলফনামায় ড. হাছান মাহমুদ বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ১৭ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।নতুন করে কৃষিখাতে আয় দেখিয়েছেন বছরে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে আগের চেয়ে আয় কমেছে মন্ত্রীর। এ খাতে বর্তমানে আয় এক লাখ ৪৭ হাজার টাকা। ব্যাংক ও অন্য খাত থেকে সম্মানি হিসেবে আয় দেখিয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ২৬৩ টাকা।
আরও পড়ুন>> কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনীর মনোনয়ন বাতিল
অন্যদিকে মন্ত্রিপত্নীর আয় ৫ বছরের ব্যবধানে অর্ধেকের নিচে নেমেছে। বর্তমানে বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ১০ লাখ ৫৭ হাজার ৩৩৩ টাকা। এর মধ্যে বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে আয় ২ লাখ ১০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ২ লাখ ৭৪ হাজার টাকা, শেয়ার সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত থেকে আয় ১ লাখ ৫২ হাজার এবং ব্যাংক ও অন্য খাতে সম্মানি হিসেবে আয় দেখিয়েছেন ৪ লাখ ২১ হাজার ৩৩৩ টাকা।
একই সময়ে ড. হাছান মাহমুদের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে হাতে নগদ টাকা রয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা, বিভিন্ন কোম্পানির ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ৭১ হাজার ২২৫ শেয়ার রয়েছে। মন্ত্রীর বর্তমানে একটি জিপ গাড়ি রয়েছে, যেটি তিনি সংসদ সদস্য কোটায় কিনেছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
তবে বর্তমানে মন্ত্রিপত্নীর নগদ রয়েছে ৪০ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমানো টাকা ৫ লাখ ১৫ হাজার। মেসার্স বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস কোম্পানিজ নামে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ৯৭ হাজার ৯৫০টি এবং একই মূল্যের ৯৭ লাখ ৬৯ হাজার ৫শটি শেয়ার রয়েছে। ঋণও বেড়েছে মন্ত্রীর। ২০১৮ সালে ১ কোটি ২১ লাখ ১০ হাজার ৯৪৮ টাকা ঋণ ছিল। বর্তমানে ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
এমডিআইএইচ/এএসএ/জেআইএম