বিএনপির মনে রাখা উচিত আওয়ামী লীগ উন্নয়নশীল মর্যাদা এনে দিয়েছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪৯ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০২৩
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি সরকারের পতনে নানা রকম আন্দোলনের হুমকি দেয়, তাদের মনে রাখা উচিত জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ দেশকে উন্নয়নশীল মর্যাদা এনে দিয়েছে। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের পর আনোয়ারায় কোরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) মাঠে এক জনসভা এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ বিএনপি সরকার পতনের নানা রকম আন্দোলনের হুমকি দেয়। তাদের মনে রাখা উচিত, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ দেশকে উন্নয়নশীল মর্যাদা এনে দিয়েছে। অথচ তারা ভোট চোর। খুনিদের সংসদে বসিয়েছে। বার বার আমার ওপর আক্রমণ করে। কিন্তু আমরা উন্নয়নের পক্ষে। আওয়ামী লীগ শান্তিতে বিশ্বাস করে, উন্নয়নে বিশ্বাস করে।

তিনি বলেন, আমার একটাই কাজ দেশের মানুষের কল্যাণ করা। আপনাদের দোয়া চাই। আর আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছেন। নৌকায় ভোট দিয়ে এ টানেল এবং আজকের উন্নয়ন। তাই আমাদের কাছে ওয়াদা করেন, আগামীতে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ দিবেন কি না, হাত তুলে ওয়াদা করেন। আমি বাবা মা হারিয়ে এসেছি আপনাদের কাছে। আপনারাই আমার স্বজন।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, বিশ্বে যুদ্ধের ফলে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। যেই কারণে নিম্ন আয়ের মানুষকে এক কোটি কার্ড করে দিয়েছি। কম মূল্যে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারবেন। একেবারে হতদরিদ্র মানুষকে চাল দিচ্ছি। চট্টগ্রামসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে আমরা যত কাজ করেছি, আর কখনো কেউ করেনি। বিএনপি ও খালেদা জিয়া লুটপাটে ব্যস্ত ছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার বাংলায় একটা মানুষও গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না। প্রত্যেককে ঘর করে দিচ্ছি। বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিচ্চি। যারা বিদেশে যায়, জমি বিক্রি করে যাবেন না। আমাদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যেতে পারবেন।

তিনি বলেন, বাণিজ্যের রাজধানী হিসেবে চট্টগ্রামের উন্নয়ন করেছি। আমরা উন্নয়ন করি, বিএনপি জামায়াত আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে। তারা খুন করা ছাড়া কিছুই জানে না। আমাদের ২১ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছে। তারা ক্ষমতায় থাকলে দুর্নীতি করে। সন্ত্রাস ও দুর্নীতিরোধ করে আমরা দেশকে একটা উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্চি। বয়স্ক ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা, বৃত্তি উপবৃত্তি দিচ্ছি। মেগা প্রকল্প দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ দেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখেছে। যার ফলে দরিদ্রের হার কমেছে। ভূমিহীন ও গৃহহীন কমেছে। তাদের আশ্রয় দিয়েছি ভূমি ও গৃহ করে দিয়ে। জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

নৌকা দেশ ও মানুষের উন্নয়ন করেছে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা দেশকে গড়ে তুলছি। আমি আপনাদের কাছে একটা উপহার নিয়ে এসেছি। ‘দইজ্জার তল দিয়ে গাড়ি চলে। ঘুটঘুট করে বাড়ি চলে যাবেন।’ এ প্রকল্পে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যারা জড়িত ছিলেন, দিনরাত পরিশ্রম করেছেন, সবাইকে আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আরও ১১টি প্রকল্প আপনাদের জন্য উপহার হিসেবে উদ্বোধন করে দিলাম। আজকের এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে গত নির্বাচনে আপনারা ভোট দিয়েছিলেন বলে। নৌকা যখনই সরকারে এসেছে, দেশ ও মানুষের উন্নয়ন করেছে।

তিনি বলেন, আমিতো সবই হারিয়েছি ৭৫ এর ১৫ আগস্ট। ছয় বছর দেশে আসতে দেয়নি জিয়াউর রহমান। একরকম জোর করেই দেশে ফেরা। আসার পর থেকে বাংলাদেশে মানুষের জন্য কাজ করছি। চাই কীভাবে দেশের মানুষকে ভালো রাখা যায়। এ চট্টগ্রামের কত নেতা ছিলেন, যারা জীবন দিয়ে সংগ্রাম করেছেন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

এর আগে বেলা ১১টার পর হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমিতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে সড়ক পথে পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরে পৌঁছান। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু টানেলের একটি ফলক উন্মোচন করেন। সেখান থেকে টোল দিয়ে টানেল পার হন প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা।

এরপর দুপুর ১টা ১০ মিনিটে আনোয়ারায় নদীর দক্ষিণ তীরে আরেকটি ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় আরও ১১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্ধোধন করে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর আনোয়ারায় কোরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) মাঠে জনসভায় পৌঁছান শেখ হাসিনা। প্রথমে সেতু সচিবের সঞ্চালনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম এবং একটি বিশেষ সিলমোহর অবমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসইউজে/এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।