নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় নেই: কাদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩২ পিএম, ২৭ অক্টোবর ২০২৩

নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় নেই, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন যে, সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রত্যাশিত অনুকূল পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি।

সিইসির এ বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। তখন তিনি বলেন, কোনো বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত বক্তব্য নিয়ে গোটা নির্বাচন নিয়ে চিন্তার সুযোগ নেই। একটা বিষয়ে একেকজন একেক ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করতে পারেন। নির্বাচন হবে না, বা নির্বাচন নিয়ে তাদের ভিন্ন চিন্তা আছে, এমন তো বলেননি। অতএব, এই বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত বক্তব্য নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করা ঠিক হবে না।

আরও পড়ুন: সহিংসতার জবাব সহিংসতা, নীরবতা নয়: কাদের

তিনি আরও বলেন, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে, কোনো সংশয় নেই। আপনারা সাংবাদিকরা তো বাইরের কেউ না, দেশেরই মানুষ, আপনারা দেখবেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা কোনো চাপে নেই, তবে পুরনো দিনের কথা ভুলতে পারি না। ২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসংযোগের কথা ভুলতে পারি না। তারা (বিএনপি) তো আগুন ছাড়া কথা বলে না। তারা শান্তি মন থেকে চায় কি না, এটা দেখতে হবে।

২৮ অক্টোবরের সমাবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে দেখিয়ে দেবো যে, আমরা শান্তির পক্ষে। সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। এদের দুরভিসন্ধি আছে, সাম্প্রদায়িক আরও দু-একটা শক্তি নিয়ে তারা অপকর্ম করতে চাইবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেবের সব খেলা ধরে ফেলি। কী করবে, টেমস নদীর পাড় থেকে ধমক খায়। মাঝে মাঝে তাকে নার্ভাস দেখা যায়।

তিনি বলেন, আমরা মরতে হলেও মরবো তবুও মাঠ ছাড়বো না। এটা বাংলাদেশের আরেক মুক্তিযুদ্ধ। এটাতে জিততে পারবো যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি।

আরও পড়ুন: বিশ্বনেতারা শেখ হাসিনার পাশে আছেন: তথ্যমন্ত্রী

বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির কর্মী হত্যা মামলায় খোকন গ্রেফতার। অথচ অভিযোগ করছে, রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার। তাহলে কি আপনাদের কর্মী হত্যার বিচার হবে না? এ ক্ষেত্রে সরকার তো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও ছাড় দেয়নি। আপনি তো টেনেটুনে ২২ জনের নাম বলেছেন। আর আপনারা আমাদের ২২ হাজার নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছেন। আমরা এসব ভুলিনি।

ওবায়দুল কাদের দাবি করেন, পুলিশ আমাদের মঞ্চ করতে দেয় নাই। মির্জা ফখরুল মিথ্যাচার করেছেন। বলেছেন- সরকার না কি আমাদের অনুমতি দিছে, মঞ্চ করছি। আমরা কিছুটা করেছিলাম, পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছে। পুলিশ যখন অনুমতি দেবে, আমরা তখনই মঞ্চ করবো।

ক্ষমতাসীন দলের এ নেতা বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় তাদের সারাদেশের লোক আর আমাদের থানার লোকদের নিয়ে সমাবেশকে তুলনা করা হয়। যোগ-বিয়োগ আর তুলনা করতে মাথায় থাকতে হবে এটি, আমাদের এলাকার সমাবেশ। তাদের পুরো দেশের।

আরও পড়ুন: পুলিশের সামনেই ঘুরে ঘুরে বিএনপির পক্ষে স্লোগান শতাধিক রিকশাচালকের

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বেঁচে থাকতে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে দেবো না। এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা। বাংলাদেশ নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবো না।

নির্বাচন নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা অশান্তি করতে চাই না, কারণ আমরা ক্ষমতায়। আমাদের দ্বারা অশান্তি হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। অশান্তি তারা চায়, যারা পরিবেশ নষ্ট করতে চায়। এদের মতলব সম্পর্কে সতর্কতা অত্যন্ত প্রয়োজন। আইআরআই একটা সমীক্ষা করেছে, সেই সমীক্ষায় ৭০ ভাগ মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থা রাখে।

তিনি আরও বলেন, এই অপশক্তিকে বার বার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া উচিত নয়। এই অপশক্তির চিরতরে অবসান ঘটাতে হবে। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকতে হব।

৭১, ৭৫ এর ইতিহাস তুলে বর্তমান বিরোধী শক্তিকে এর জন্য দায়ী করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, এই অপশক্তির সঙ্গে আপস করতে পারি না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে আদালত। এ ব্যবস্থা নিয়ে আমরা ফাইট করেছিলাম। কিন্তু এ ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করেছে তারা। বিচারপতি খায়রুল হক সংবিধানকে কচুকাটা করেননি, বরং সঠিক জায়গা পুনঃস্থাপন করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রয়োজন নেই, তিনি রায় দিয়েছেন, এটা কি অন্যায় করেছেন?

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে বাংলাদেশের ব্যবস্থা আরও আধুনিক ও পরিশীলিত। এটা আমরা বিদেশি কূটনীতিকদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, বিএনপি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে। যার কারণে নিজেদের ক্ষুধার আগুন নেভাতে মরণ কামড় দেবে।

বাংলাদেশের শান্তি-উন্নয়ন অগ্রগতির অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে একটি চিহ্নিত মহল সন্ত্রাস করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করার অপচেষ্টা করছে। বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি মহল আবারও দেশে নৈরাজ্য করতে চায়।

কাদের বলেন, আপনাদের মনে আছে, এরাই ২০১৩, ২০১৪ ও ১৫ সালে অগ্নিসংযোগ ও মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রধান অন্তরায়।

এসইউজে/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।