রাষ্ট্রধর্ম ইস্যুতে আবার রাজপথে হেফাজত


প্রকাশিত: ০১:১১ পিএম, ২৫ মার্চ ২০১৬

নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তি, ধর্ম অবমাননায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন পাসসহ ১৩ দফা দাবিতে ২০১৩ সালের মে মাসের শুরুর দিকে ‘ঢাকা অবরোধ’ কর্মসূচি দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল চট্টগ্রামভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশের টালামাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে কমে আসে হেফাজতের হাঁকডাকও। তবে রাষ্ট্রধর্ম ইস্যুতে শুক্রবার রাজধানীর বায়তুল মুকাররমের দক্ষিণ গেটে বিক্ষোভ করেছে সংগঠনটি।

হেফাজতে ইসলামের বক্তব্য, বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে যদি সরকার গঠিত হতে পারে, তবে কেন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হবে না?

১৯৮৮ সালে সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর সংবিধানে এই পরিবর্তনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট দায়ের করা হয়। এ রিট দায়েরের  ২৩ বছর পর ২০১১ সালের ৮ জুন একটি সম্পূরক আবেদেনে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারির পাশাপাশি অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ১৪ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী নিয়োগ দেন। ওই রুলের বিষয়ে শুনানির জন্য ২৭ মার্চ দিন ধার্য রয়েছে।

আর এ বিষয়টিকেই ‘ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে হেফাজত। তারা বলছে, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে রাখার দাবিতে প্রয়োজন হলে আবারো রাজধানীর শাপলা চত্বরে সমাবেশ করা হবে।

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখার দাবিতে শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে বিক্ষোভ করেছে হেফাজতে ইসলাম। হেফজাত ছাড়াও ইসলামী শাসনতন্ত্র ও চরমোনাই নেতাকর্মীরাও একই দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

সমাবেশ শেষে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন খেলাফতে মজলিসের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, বিভিন্ন দিক থেকে আলোচনা হচ্ছে। আমরা আদালতের উপর আস্থা রাখতে চাই। দেখতে চাই আদালত কী রায় দেয়। এর উপরই নির্ভর করছে সব সিদ্ধান্ত। তবে এটা বলতে পারি, দাবি আদায়ে রক্ত দিতে রাজি হেফাজতের নেতাকর্মীরা। প্রয়োজনে শাপলা চত্বরে আবারো সমাবেশের কর্মসূচি দেয়া হবে।

সমাবেশে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর হেফাজত ইসলামের আহ্বায়ক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী আওয়ামী লীগকে জালিম সরকার উল্লেখ করে বলেন, অনেক নির্যাতন সহ্য করেছি। রক্ত দেব, কিন্তু ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না।

আদালত বুঝি না, নির্বাহী আদেশ কী বুঝি না, ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম ছিল, থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জমিয়ত ওলামা ইসলামের সহ-সভাপতি আব্দুর রব ইউসুফি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কিছু বলা হচ্ছে না। এটা দুঃখ জনক। আমরা জানি দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, সরকার দলীয় নেতা, বিরোধী দলীয় নেতা সবাই তো মুসলমান। তবুও কেন রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে এতো ষড়যন্ত্র?

তিনি বলেন, আমাদের হেফাজতের মূল নেতা আল্লামা শফি সাহেব অপর মাওলানা ও ইসলাম বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও দাবি করেন তিনি।

একই দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ চত্বরেও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজত।  

জেইউ/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।