ছাত্রলীগের দুই নেতাকে তুলে নিয়ে পেটানোর প্রতিবাদ ছাত্রদলের
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ধরে নিয়ে বেদম পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদল।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসানের সই করা এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের দুই নেতাকে তুলে নিয়ে পেটানোর অভিযোগ
বিবৃতিতে ছাত্রদলের নেতারা বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রলীগ সারা দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ছাত্রদলসহ সব বিরোধী ছাত্রসংগঠন এবং সাধারণ ছাত্রদের নির্মম নির্যাতন করেছে। নির্যাতিত, মুমূর্ষু ছাত্রদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। পুলিশ তাদের গায়েবি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে এনে আবার নির্যাতন করেছে। বিরোধী ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক পুলিশি নির্যাতনের ঘটনাগুলোতে বুনো উল্লাস করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশ বাহিনী যখন ভোট ডাকাতির দায়িত্ব নিয়েছে, তখন রাজনীতি ছেড়ে ছাত্রলীগের নেতারা টেন্ডারবাণিজ্য, প্রশ্নফাঁস এবং চাঁদাবাজিতে ব্যস্ত হয়েছেন। আজ তাদের দুইজন কেন্দ্রীয় নেতা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরও ছাত্রলীগের কেউ কোনো প্রতিবাদ জানাতে সক্ষম হয়নি। এতেই বোঝা যায় ছাত্রলীগ এখন নীতি-আদর্শহীন একটি দেউলিয়া সংগঠনে পরিণত হয়েছে।’
একজন পুলিশ কর্মকর্তার ভয়ে পুরো বাংলাদেশের ছাত্রলীগ তটস্থ মন্তব্য করে ছাত্রদল নেতারা বলেন, ‘ওই পুলিশ কর্মকর্তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডযোগ্য অপরাধ করার পরও আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার ন্যূনতম সাহস ছাত্রলীগের নেতারা দেখাতে পারেননি। তারাও জানেন যে, পুলিশের সঙ্গে মিলেমিশে পুলিশি রাষ্ট্রে তারা যে মাৎস্যন্যায় প্রতিষ্ঠা করেছে তাতে তাদেরও বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ অবশিষ্ট নেই।’
আরও পড়ুন: এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে যত ‘পেটানোর অভিযোগ’
তারা আরও বলেন, ‘অতীতে পুলিশ কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নির্যাতনের প্রতিবাদের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে। ছাত্রলীগের হামলার ভয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখন ছাত্রলীগের কোনো নেতাকে নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাতে ভয় পাচ্ছে। পুলিশের অনুগ্রহ ভিক্ষা করে ছাত্রলীগের শীর্ষনেতাদের রাজনীতিতে টিকে থাকার অভিলাষের কারণে এখন পথেঘাটে ছাত্রনেতাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নির্যাতিত হচ্ছেন।’
বিবৃতিতে ছাত্রদল নেতারা বলেন, ‘নিজেদের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্যাতনকারী এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ না করে ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে ছাত্রলীগ কলঙ্ক লেপন করেছে। ছাত্রলীগের মতো একটি পুরোনো ছাত্রসংগঠনের এ ধরনের অমর্যাদাকর অবস্থানের কারণে নিন্দা ও হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।’
ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতনসহ অতীতের সব পুলিশি নির্যাতনের দায়ে এডিসি হারুনকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায় ছাত্রদল।
কেএইচ/কেএসআর