তারেককে দেশে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান নানকের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৮ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০২৩

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় দণ্ডিত বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে বাংলাদেশে পাঠাতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানান তিনি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের ও একুশে গ্রেনেড হামলায় বর্ণিত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে যুব মহিলা লীগ।

ভয়াবহ ২১ আগস্টের ঘটনা তুলে ধরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে এই রাজপথে রক্তের প্লাবন বইয়ে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউকে সেদিন হত্যার লীলাভূমিতে পরিণত করেছিলেন তারেক রহমান। সেদিন খালেদা জিয়ার সরকারের শাসনামলে হাওয়া ভবন সরকার গঠন করা হলো খুনি তারেকের নেতৃত্বে। তার পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে শান্তি সমাবেশে একটি, দুটি, পাঁচটি নয়, ১৪টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হলো।

সর্বজনীন পেনশন চালু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান নানক। তিনি বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। অনেক উন্নয়নশীল দেশও এই দুঃসাহস করে না। আমরা সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এজন্য ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।

বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল বলেছেন, জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত নয়। আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী কে হয়েছে? সেই সুবিধাভোগী জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জেনারেল জিয়া অবৈধভাবে আইন লঙ্ঘন করে সেদিন হ্যাঁ-না ভোট দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আত্মস্বীকৃত খুনিদের এমপি বানিয়ে এনেছিলেন।

‘যখন খুনিদের বিরুদ্ধে জাগরণ গণধিক্কার সৃষ্টি হয়, তখন খুনিদের বিশেষ বিমানে বিদেশে কে পাঠিয়েছিলেন? জিয়াউর রহমান। বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি কে দিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বিধায় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী জিয়াউর রহমান এই খুনিদের দেশ থেকে বাইরে পাঠিয়ে বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন।

এসময় মির্জা ফখরুলকে ইতিহাস জেনে কথা বলার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যাদের খুঁজে পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে নুর চৌধুরী আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, কানাডায় আছেন মেজর কিসমত। আমাদের প্রশ্ন, এই খুনিরা যে দেশ দুটিতে রয়েছে সেই দেশ দুটি মানবাধিকারের ও গণতন্ত্র সভ্যতার কথা বলে, আর খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়। ধিক্কার জানানোর ভাষা জানা নেই।

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল জানেন না, পাকিস্তানিরা দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু যখন দেশ পুনর্গঠন করেছিলেন তার মৃত্যুর আগে জিডিপি ছিল ৯ ভাগ। খালেদা জিয়া- এরশাদ সরকার তো দূরের কথা, আওয়ামী লীগ সরকারও এখন পর্যন্ত ৯ ভাগ জিডিপিতে পৌঁছাতে পারেনি। কাজেই যা বলবেন মির্জা ফখরুল সাহেব সাবধানে কথা বলবেন। ইতিহাস-পরিসংখ্যান জেনে কথা বলবেন।

মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বাঙালি জাতির জীবনে শান্তি সৃষ্টি করতে হলে, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করতে হলে, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে বাঁচাতে হলে ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রক্ষা করতে হলে, খালেদা-তারেকের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে, পঁচাত্তরের খুনিদের এবং ২১ আগস্টের খুনদের অবশ্যই বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশ নিরাপদ নয়, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়।

এ সময় বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর বোমা মেরেছে, অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তার মানে এখনো তারা ধ্বংসের পথে হাঁটছে। এখনো জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটুক তা তারেক রহমান চায়। রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে থাকা সেই দুর্নীতিবাজ সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে।

যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলির সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব মহিলা লীগের সভাপতি ফারজানা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক নিলুফা রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি তাহেরা খাতুন লুৎফা, সাধারণ সম্পাদক শামীমা রহমান।

এসইউজে/জেডএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।