আন্দোলনে পরাজিত বিএনপি বিদেশি শক্তিতে ভর করছে: আমু
মাঠের আন্দোলনে পরাজিত হয়ে বিএনপি এখন বিদেশি শক্তির ওপর ভর করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেন, আমরা কোনোভাবেই মাঠের আন্দোলনকে ভয় পাই না। তবে বিএনপি মাঠের আন্দোলনে পরাজিত বলেই বিদেশি শক্তির ওপর ভর করছে। বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে। কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে তাদের সব দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের জবাব দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এ নেতা বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অনেকেই মনে করেছিলেন, এ হত্যাকাণ্ড পরিবারকেন্দ্রিক। পরে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়, এটা পরিবারকেন্দ্রিক নয়, এটা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে নৃশংসতম ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
আমির হোসেন আমু বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে চলেছে। বিশ্বে আমাদের আগে সম্মান কী ছিল, আর এখন কী হয়েছে, সেটা সবাই জানেন। এই সম্মান এসেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আমাদের দেশ ছোট হলেও শেখ হাসিনা অনেক বড় নেতা।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনার অর্জন। আদালতের রায়ে, সংবিধানে এটি বাতিল করা হয়েছিল। কেউ নির্বাচনে না এলে, অন্য কেউ জিতলে, এটা বিজিত দলের অন্যায় হতে পারে না। দেশকে এগিয়ে নিতে, আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়তে, শেখ হাসিনার অনেক অবদান রয়েছে। তার নেতৃত্বের এ সফলতা অনেকের গাত্রদাহের কারণ।
সভাপতির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে বিশ্বকে জানাতে আমাদের সবগুলো মিশনে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করেছি। বিদেশে সেসব দেশে বাঙালি আছেন তাদের নিয়ে সেসব দেশের থিংক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সভা, সেমিনারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে সবাইকে জানাতে হবে।
ড. মোমেন বলেন, বিশ্ববাসীকে জানাতে হবে- বঙ্গবন্ধু মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকারের জন্য জীবনের ১৪টি বছর কারাবরণ করেছেন। বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে অনন্য দেশ যেখানে গণতন্ত্রের জন্য, ন্যায়বিচারের জন্য, মানবাধিকারের জন্য ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে যে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে সেটিও বিশ্ববাসীকে জানানো দরকার বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বাগত বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছর পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি থাকা বাঙালি জাতির মহান স্বাধীনতার রূপকার। তার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা ছিনিয়ে এনেছিলাম আমাদের মহান স্বাধীনতা।
তিনি বলেন, যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ গড়তে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্থাপন ও উন্নয়নে জাতির পিতা যুগোপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশকে নতুন পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বাংলাদেশের নতুন দিগন্তের সূচনা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর প্রণীত ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’- এ নীতিতেই বাংলাদেশ তার পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করছে। সম্প্রতি জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত বাংলাদেশ প্রস্তাবিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’- প্রস্তাবনা জাতির পিতার দর্শনেরই প্রতিফলন।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস। এসময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সব পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আইএইচআর/এমকেআর