ভারত সরকার বাংলাদেশের ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকবে বলেই বিশ্বাস

সায়েম সাবু
সায়েম সাবু সায়েম সাবু , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৮ পিএম, ১০ আগস্ট ২০২৩

‘মেনন সাহেবের কথার একটি অংশ আমি সমর্থন করি যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে না। কিন্তু পরের অংশ নির্ধারণ করবে জনগণ। কে ক্ষমতায় আসবে তার সিদ্ধান্ত মেনন সাহেব দিতে পারেন না। জনগণ দেবে।’

সম্প্রতি ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের ‘হাসিনা সরকারের পতন ঘটলেও বিএনপি ক্ষমতায় আসবে না।’ এ মন্তব্য প্রসঙ্গে একথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

আরও পড়ুন>> ‘হাসিনা সরকারের পতন ঘটলেও বিএনপি ক্ষমতায় আসবে না’

এছাড়াও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিএনপির অবস্থান, সফলতা, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের ভারত সফর প্রভৃতি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সায়েম সাবু।

জাগো নিউজ: বলা হচ্ছে, বিএনপি আন্দোলনের কৌশল বদলিয়েছে। গত দু’মাসের আন্দোলনে অন্তত তাই প্রতীয়মান হয়। আন্দোলনের আপাতত ফলাফল নিয়ে কী বলবেন?

মির্জা আব্বাস: গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য আমরা গত এক যুগ ধরে আন্দোলন করে আসছি। একটি রাষ্ট্রের সমস্ত কাঠামো ভেঙে ফেলেছে এই সরকার। একেবারেই খাদের কিনারায় দেশ-জাতি। আমরা আমাদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সমগ্র জাতিকে এই মেসেজ দিতে সক্ষম হয়েছি এবং আমাদের আন্দোলনে আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছি। আমাদের আন্দোলনে মানুষ এক হয়েছে, এটিই আপাতত সফলতা। গণতন্ত্র, দেশ যে বিপন্ন, আজ তা মানুষ বুঝতে পারছে। এভাবে মানুষকে আগে সম্পৃক্ত হতে দেখা যায়নি। সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিও এখন একাট্টা হয়েছে। এটিই আমাদের বড় সফলতা বলে মনে করছি।

আরও পড়ুন>> ‘সরকারের পতনের কোনো সম্ভাবনা নেই’

জাগো নিউজ: সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন করছেন। সামনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে কী বলবেন?

মির্জা আব্বাস: সরকার তার অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করবে জেনেই আমরা আন্দোলন করছি। সরকার একতরফা নির্বাচন করার সমস্ত নীল নকশা তৈরি করে রেখেছে। আমরা জানি, এই নকশা নস্যাৎ করার চ্যালেঞ্জ সহজ না। কিন্তু আমরা এখন সহজ মনে করছি। কারণ জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। জনগণ আর প্রহসনের নির্বাচন হতে দেবে না।

বাংলাদেশের মানুষই ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। আমরা চাই পাশের দেশ ভারত বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবে। ভারত সরকার বাংলাদেশের ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

জাগো নিউজ: সরকার জোটের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘হাসিনা সরকারের পতন ঘটলেও বিএনপি ক্ষমতায় আসবে না’। তার এ মন্তব্য কীভাবে খণ্ডাবেন?

মির্জা আব্বাস: রাশেদ খান মেনন অর্ধ ঠিক বলেছেন। তার মন্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি। এই আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে না। আন্দোলনে হাসিনা সরকারের পতন ঘটবেই। আর বিএনপি ক্ষমতায় আসবে কি না, তার রায় দেবে জনগণ। রাশেদ খান মেনন কীভাবে জানেন বিএনপি ক্ষমতায় আসবে কি না? আমরা জনগণের ওপর আস্থা রেখে আন্দোলন করছি। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বোঝা যাবে কে ক্ষমতায় আসবে।

জাগো নিউজ: রাশেদ খান মেননের কথা যদি সত্যি হয়, তাহলে কী ঘটবে? তৃতীয় কোনো শক্তি আসতে পারে কি না?

আরও পড়ুন>> রাজনীতিতে জিয়া পরিবারের ভবিষ্যৎ কোন পথে?

মির্জা আব্বাস: মেনন সাহেবের কথার একটি অংশ আমি সমর্থন করি যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে না। কিন্তু পরের অংশ নির্ধারণ করবে জনগণ। কে ক্ষমতায় আসবে তার সিদ্ধান্ত মেনন সাহেব দিতে পারেন না। জনগণ দেবে।

গণতন্ত্র, দেশ যে বিপন্ন, আজ তা মানুষ বুঝতে পারছে। এভাবে মানুষকে আগে সম্পৃক্ত হতে দেখা যায়নি। সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিও এখন একাট্টা হয়েছে। এটিই আমাদের বড় সফলতা বলে মনে করছি।

জাগো নিউজ: আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল ভারত সফর করে এলো। ভারত সরকার ও বিজিবির সঙ্গে বৈঠক হলো। আওয়ামী লীগ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে এ সফর নিয়ে। কী বলবেন?

মির্জা আব্বাস: বাংলাদেশের মানুষই ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। আমরা চাই পাশের দেশ ভারত বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবে। ভারত সরকার বাংলাদেশের ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

জাগো নিউজ: বিএনপির চলমান আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসক্রিপশনে চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগের বিপরীতে কী বলবেন?

মির্জা আব্বাস: এ অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। আমরা একটি ফ্যাসিবাদ সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছি। এ সংগ্রামে বিশ্বের সব শান্তিকামী মানুষ সমর্থন করতেই পারে। সরকারের দমন-পীড়ন নিয়ে বিশ্ববাসী বিবৃতি দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এখানে বিএনপিকে সমর্থন দেওয়ার কিছু নেই।

এএসএস/এএসএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।