আলোচনা সভায় বক্তারা
ইতিহাসে সাহসী নারী হয়ে বেঁচে থাকবেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা
‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সাংসারিক সব দায়-দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক পথচলা মসৃণ হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের। ইতিহাসের সাহসী নারী হয়ে তিনি বেঁচে থাকবেন।’
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে যুবলীগের উদ্যোগে ‘প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয়-লক্ষ্মী নারী’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় এতে অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, উপদেষ্টা পরিষদের আরেক সদস্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি, কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুক্তা আক্তার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, মানুষের পিছুটানে যদি বাধা না থাকে, সংশয় না থাকে তাহলে তার জন্য যেকোনো কাজ করা সহজ হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতাকে সেরকম মানুষই পেয়েছিলেন। বঙ্গমাতা কখনো বঙ্গবন্ধুর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াননি এবং তিনি সাংসারিক সব দায়-দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক পথচলা মসৃণ হয়েছিল। এমনকি বঙ্গবন্ধু যে অসমাপ্ত আত্মজীবনী লিখেছিলেন। এ আত্মজীবনী লেখার পেছনে প্রেরণা ছিল বঙ্গমাতার। বঙ্গবন্ধু তখন জেলে। বঙ্গমাতা খাতা-কলম নিয়ে জেলে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে বলেছিলেন বসে বসে লিখো।
অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান বঙ্গমাতার। সাধারণত ক্ষমতার কাছে থাকা নারীদের মধ্যে হিংসা কাজ করে, কিন্তু বঙ্গমাতার রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী হওয়া সত্ত্বেও তার মধ্যে কোনো লোভ-লালসা ছিল না। তিনি সর্বদা মানুষের জন্য কাজ করেছেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মণি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ পথপরিক্রমায় থেকে জাতির জনক হওয়ার পেছনে যে মানুষটির সবচেয়ে বেশি অবদান তিনি হলেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা। ৬ দফার সময় যখন বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়, সেই সময় তিনি কীভাবে দল চালিয়েছেন, নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন তা সত্যিই অভিভূত হতে হয়।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট তারানা হালিম বলেন, বঙ্গবন্ধু তার জীবদ্দশায় এমন একজন জীবনসঙ্গীকে পেয়েছিলেন যিনি সর্বদা বঙ্গবন্ধুর পাশে ছায়ার মতো ছিলেন। ১৯৪৭-১৯৭১ বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি সংগ্রামের পাশে ছিলেন বঙ্গমাতা। তিনি আড়ালে থেকে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। নেতা-কর্মীদের খোজ-খবর নিয়েছেন, সাহস যুগিয়েছেন। বঙ্গমাতা শুধু জীবদ্দশায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গী ছিলেন না, মরণেও তিনি বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ফাস্ট লেডি হওয়া সত্ত্বেও অতি সাধারণ জীবন-যাপন ছিল বঙ্গমাতার। আজন্ম কষ্ট, বঞ্চনা এবং বিয়োগব্যথা তাকে এক অসাধারণ মানবিক ব্যক্তিতে রূপান্তরিত করেছিল। তার চাল-চলনে ছিল মধ্যবিত্ত নারীর মতো। ছিল না কোনো লোভ-লালসা বা সখ-আহ্লাদ।
এসময় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর আলম শাহীন, ডা. খালেদ শওকত আলী, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান পবন, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, মো. নবী নেওয়াজ, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মুহাম্মদ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, মো. জহির উদ্দিন খসরু, মো. সোহেল পারভেজ, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাডভোকেট ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় বনানী কবরস্থানে বঙ্গমাতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এসইউজে/এমএএইচ/