দেশবিরোধীদের বিরুদ্ধে পুনরায় যুদ্ধ করতে হবে: বাহাউদ্দিন নাছিম
দেশবিরোধীদের বিরুদ্ধে পুনরায় যুদ্ধ করতে হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, ৭১ ও ৭৫ এর খুনিরা এখনো দেশে আছে। তারা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নিঃশেষ করতে চায়। সরকারকে উৎখাত করে গণতন্ত্রকে পদদলিত করতে চায়। এরা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে স্বৈরাচারী কায়দায় ক্ষমতায় যেতে চায়। এ অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের পুনরায় যুদ্ধ করতে হবে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে ধানমন্ডি ৩২ ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতাসহ তার পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে।এ খুনির দলের বিরুদ্ধে ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে আন্দোলন শুরু করেন। তিনি স্বৈরাচারবিরোধী ও গণতন্ত্রহরণকারীদের বিরুদ্ধে সারাদেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করেন। দেশরত্ন শেখ হাসিনা আলোর মশাল হয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। দীর্ঘ ২১ বছর তিনি লড়াই সংগ্রাম করে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত সবসময় বাংলাদেশের সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়। এরা দেশকে দ্বিখণ্ডিত করে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। এরা দেশের সাম্প্রদায়িক শক্তির জাগরণ ঘটিয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে নষ্ট করতে চায়। এদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদের সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবো আমরা।
বঙ্গমাতার কথা স্মরণ করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের ১৩ টি বছর কারাগারে ছিলেন। বিশেষ করে ছয় দফা ঘোষণা করার পর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর চোখে রক্ত শুলে পরিণত হন বঙ্গবন্ধু। যে কারণে বারবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে সময় জাতির জনকের একজন দক্ষ অনুসারী হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছেন বঙ্গমাতা।
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, পাকিস্তানের সামরিক জান্তাবিরোধী আন্দোলনের মূলশক্তি ছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তিনি ছাত্রলীগের নেতাদের দিকে সবসময় পরামর্শ দিতেন এবং জাতির পিতার নির্দেশ ও পরামর্শ তাদের সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিতেন। সে অনুযায়ী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালনা করতেন। জাতির জনকের অবর্তমানে তিনি শুধু তার পরিবারের দায়িত্ব পালন করেননি, একজন সফল মাতা হিসেবে তিনি যেমন পরিবারের সন্তানদের দায়িত্ব পালন করেছেন তেমনি কোটি মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করেছেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফাঁসিতে ঝুলানোর ষড়যন্ত্র করেছিল পাকিস্তানি শাসকরা। সে দিন দেশের মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিল। একটি কুচক্রী মহল সেদিন পাকিস্তানিদের সঙ্গে আপস করতে চেয়েছিল। তারা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে বের করে আনবে। জাতির জনক জেলে থাকায় অনেক খবরই তিনি নিতে পারছিলেন না। তখন সেই সংবাদগুলো বঙ্গমাতা তার কাছে পৌঁছে দিতেন। বঙ্গমাতা সেদিন বুঝতে পেরেছিলেন যে বাঙালি জাতি জেগে উঠেছে। তিনি আপস করেননি।
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
আলোচনা সভায় সংগঠনের সহ-সভাপতি ম. আব্দুর রাজ্জাক, তানভীর শাকিল জয় এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ জালাল মুকুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ইসহাক মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান নাঈম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন ও সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদ বক্তব্য দেন। সভায় কেন্দ্রীয় ও মহানগর উত্তর দক্ষিণের বিভিন্ন ইউনিটের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এসইউজে/এমএএইচ/