তথ্যমন্ত্রী

বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি বিদেশিরাও প্রত্যাখ্যান করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৯:৪৬ পিএম, ১৮ জুলাই ২০২৩

বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি বিদেশিরাও প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষিত শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা পূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত সোমবার চট্টগ্রামে শ্রমিক সমাবেশ করেছেন। তিনি সেখানে কথা ঘুরিয়ে বলেছেন তারা বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করেন না। অথচ বিএনপি দিনে তারুণ্যের সমাবেশ, হাঁটা কর্মসূচি, বসা কর্মসূচি, মাঝে-মধ্যে দৌড় কর্মসূচি দেয়, আবার রাত-বিরাতে রুমিন ফারহানা, শ্যামা ওবায়েদ, নিপুণ রায়সহ তাদের মহিলা নেত্রীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন অ্যাম্বাসিতে ধরনা দেন, ওনাদের পায়ে ধরেন। এখন তারা বুঝতে পেরেছেন ধরনা দিয়ে কোনো লাভ হয়নি। মার্কিন প্রতিনিধি দল এসেও তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কিছু বলেনি। তারা বুঝতে পেরেছেন, তাদের এ তত্ত্বাবধায়ক কিংবা নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি বিদেশিরাও প্রত্যাখ্যান করেছে।

আরও পড়ুন>> ইইউ-আমেরিকা থেকে ঘোড়ার ডিম পেয়েছে বিএনপি: কাদের

তিনি বলেন, মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার পর বিএনপি অনেক উদ্বেলিত হয়েছিল। এখন দেখি বিএনপি ভালো হয়ে গেছে, তাদের মধ্যে একটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তারা পুলিশের ওপর আগের মতো হামলা পরিচালনা করার সাহস পাচ্ছে না। বিএনপির আশা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কিছু বলবে। কিন্তু এ নিয়ে তারা টু শব্দটি করেনি। এজন্য তারা প্রচণ্ড হতাশ হয়ে গেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি অস্থিতিশীল ধ্বংসাত্মক রাজনীতির পথে এগোচ্ছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি তাদের লবিস্টের মাধ্যমে বিদেশি মুরব্বিদের ডেকে এনে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের দাবি তুলেছে, অথচ সেই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তারা কখনো এ ব্যাপারে আমাদের কোনো মন্তব্য করেনি। তারা চেয়েছেন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হোক এবং তা সংবিধান সম্মতভাবে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে একটি অবাধ সুষ্ঠু সংবিধানসম্মত নিরপেক্ষ ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সন্তুষ্ট হয়েছে এবং তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি কখনো আমাদের সঙ্গে আলোচনায় উপস্থাপন করেনি। এ কারণেই বিএনপি চরম হতাশায় ভুগছে।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও দাতা সংস্থার পরামর্শ অবশ্যই শুনবো। কিন্তু তাদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী এ দেশে নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান সম্মতভাবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিটি অসাংবিধানিক এবং এ ব্যবস্থাপনা বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশের কোথাও নেই। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ উন্নত উন্নয়নশীল দেশে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে নির্বাচনী সরকার গঠনের কোনো প্রয়োজন নেই। যদি এ সরকার গঠন হয় তাহলে দেশে আরেকটি ১/১১’র মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

আরও পড়ুন>> তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো কথা বলেনি মার্কিন প্রতিনিধি দল

মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা যাদের মুরব্বি মেনেছেন, তারা বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রশংসা করেন। আপনারা কোটি কোটি টাকা খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করলেও আপনাদের সরকার পতনের দফাভিত্তিক রাজনীতির রহস্য কোথায়? আপনারা বারবার বলেছেন শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবে। তিনি দেশ থেকে পালাবেন, কিন্তু ঘটনাটা উল্টো হয়েছে। আপনাদের তারেক জিয়া একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়ে বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। খালেদা জিয়াও দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে বিচারাধীন অবস্থায় আছেন। তবে তিনি নিজের গৃহে আছেন। তাকে আমরা কারাগারে পাঠাইনি। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি এবং বাংলাদেশের এলিট আইনশৃঙ্খলা ফোর্সের কিছু বর্তমান ও সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি নিয়ে তারা হতাশ। কেননা নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে এবং কোন ব্যবস্থায় হবে এটা বড় কথা নয়, তাদের মুরব্বিরা চায় একটি নির্বাচন হোক এবং তা সাংবিধানিকভাবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিন মেয়াদের ধারাবাহিক ক্ষমতায় যে অভাবনীয় উয়ন্নয়নগুলো হয়েছে তা আপনাদের চোখে পড়ে না। আপনাদের আমলে হাওয়া ভবন খাওয়া ভবনে পরিণত হয়েছিল। দেশকে খেয়ে শূন্য করে দিয়েছিল। সেই শূন্যতা থেকে বাংলাদেশ এখন একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। তাই এ উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে যারা প্রতিহত করে তাদের প্রতিহত করবো। আমরা চাই দেশ চলবে আমাদের আইনে ও নিয়মে, এটাই শেষ কথা।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ-সভাপতি আলহাজ নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, নোমান আল মাহমুদ এমপি ও চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু বক্তব্য রাখেন।

এসময় মহানগর আওয়ামী লীগসহ ১৫টি থানা ও ৪৪ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।

ইকবাল হোসেন/ইএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।