জাতীয় সরকার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: চরমোনাই পির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৯ পিএম, ২৪ জুন ২০২৩
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মতবিনিময় সভা/ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, বিদ্যামান সংকট নিরসনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। আর জাতীয় সরকার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচনও সম্ভব নয়।

শনিবার (২৪ জুন) সকাল ১০টায় রাজধানীর গুলিস্তানে ইম্পেরিয়াল কনভেনশন সেন্টারে ‘রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখ, সাংবাদিক এবং বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা’র আয়োজন করে দলটি। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ রেজাউল করীম। এ সময় তিনি এ কথা বলেন।

সভায় জাতীয় সরকার গঠনে ৯ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন চরমোনাই পির। সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হচ্ছে, যা দেশের জনগণের জন্য অমঙ্গল বয়ে আনতে পারে। দেশে আরও একবার সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে।

তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অংশ নেবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে আয়োজনের পাঁয়তারা চলছে। মানুষকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’

চরমোনাই পির বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ হয়নি। দলীয় সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করার। ভবিষ্যতেও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার আশা করা যায় না।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরোধিতা করে চরমোনাই পীর বলেন, ‘রাজনৈতিক একটি বিশেষ প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে প্রথম নির্বাচন হয় ১৯৯১ সালে। ওই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তৎকালীন বিরোধীদল বলেছিল- নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে। এ অজুহাতে বিরোধী দল অনেকদিন পার্লামেন্ট বর্জন করেছিল। আবার দ্বিতীয় দফায় ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে ওই সময়ের বিরোধীদল বলেছিল ভোটে স্থূল কারচুপি হয়েছে। তারাও লাগাতার সংসদ বর্জন করেছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি।’

জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব করে রেজাউল করীম বলেন, ‘সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেখতে পাই, দলীয় সরকার, সামরিক সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সেনা সমর্থিত সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়নি। বর্তমানে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ও বিগত পদ্ধতিগুলোর ত্রুটির কারণে নিবন্ধিত সব দলের পরামর্শক্রমে ও অংশগ্রহণে জাতীয় সরকার গঠন করে তার অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হলে তা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে ইসলামী আন্দোলন মনে করে।’

মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু ইসলামী আন্দোলনের ৯ দফা প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানান। তিনি বলেন, ‘বিএনপির রূপরেখার সঙ্গে এ রূপরেখার অনেকাংশেই মিল আছে।’

বরিশালে সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বুলুর বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন ইচ্ছা করলে পুরো দেশ অচল করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু সেটা আমরা করিনি। এটা অত্যন্ত দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে।’

এ সময় তিনি ইসলামী দলগুলোর অনৈক্যের সমালোচনা করেন। বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘জালিম সরকার হটানোর আন্দোলনে যাদের অবদান থাকবে, বিএনপি তাদের সঙ্গে নিয়েই আগামীতে সরকার গঠন করবে।’

এসএম/এএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।