খালেদা জিয়াকে বাসায় রেখেই পূর্ণ চিকিৎসা দেওয়া হবে: ডা. জাহিদ
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপেক্ষিকভাবে সুস্থ বোধ করছেন। এজন্য তাকে বাসায় নেওয়া হয়েছে। তবে বাসায় রেখেই তাকে পূর্ণ চিকিৎসা দেওয়া হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও দলের ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘গত ১৩ জুন থেকে আজকে পর্যন্ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনি (খালেদা জিয়া) আপেক্ষিকভাবে সুস্থ বোধ করছেন। এ কারণে মেডিকেল বোর্ড তাকে বাসায় রেখে আগের মতোই পূর্ণ চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মেডিকেল বোর্ড আবারও লিখিত সুপারিশ করেছেন, যত দ্রুত সম্ভব লিভার রিপ্লেসমেন্টের জন্য আধুনিক অ্যাডভান্স সেন্টারে রেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যেন বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।’
শনিবার (১৭ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে এভার কেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের নিজ বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছান খালেদা জিয়া। এরপর বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসার সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ডা. জাহিদ হোসেন। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন>> ৫ দিন পর ‘ফিরোজা’য় ফিরলেন খালেদা জিয়া
ডা. জাহিদ বলেন, ‘গত ১২ জুন মধ্যরাতে বেগম খালেদা জিয়াকে এভার কেয়ার হাসপাতালে ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে তার প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। আজও কিছু পরীক্ষা হয়েছে। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড ও দেশের বাইরে থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়েদা রহমান ছাড়াও বিদেশ থেকে বিশেষ কিছু লোক সার্বিক বিষয়ে তদারকি করছেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ঘনঘন হাসপাতাল যাতায়াত তার অসুস্থতা আরও বাড়ার ইঙ্গিত বহন করে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য যত দ্রুত সম্ভব তাকে আধুনিক অ্যাডভান্স সেন্টারে ভর্তির জন্য বিদেশ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া উচিত।’ এ সময় দেশবাসীর কাছে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চান তিনি।
গত ১২ জুন মধ্যরাতে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন খালেদা জিয়া। দ্রুত তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। পাঁচদিন চিকিৎসা শেষে তাকে বাসায় নেওয়া হয়।
বিএনপি নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়ার যেসব সমস্যায় ভুগছেন, তার চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। দেশে যে চিকিৎসা হচ্ছে, তা শুধু উপসর্গ উপশম করার জন্য। তার হৃদপিণ্ডে এখনো দুটি ব্লক আছে। অ্যান্ডোসকপি করার পর মেডিকেল বোর্ড লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যায়- এমন কোনো দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর সুপারিশ করেছেন।
খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হওয়ার পর নির্বাহী আদেশে কারাগারের বাইরে আছেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে খালেদা জিয়ার কারাজীবন শুরু হয়। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজা হয়।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পাওয়ার পর থেকে তিনি গুলশানের বাসাতেই থাকছেন। সর্বশেষ গত ২৬ মার্চ খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয়মাস বাড়িয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
কেএইচ/এএএইচ/জেআইএম